নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ও সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করলেন ড. রেজা কিবরিয়া। বুধবার (৪ জানুয়ারি) রাতে রেজা কিবরিয়া নিজেই এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে পদত্যাগপত্রে কোনো কারণ উল্লেখ করেননি তিনি।
গণঅধিকার পরিষদের একাংশের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব ফারুক হাসান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তিনি পদত্যাগ করেছেন, এটা সত্য। ভালো খবর আসছে, শিগগিরই জানতে পারবেন।
এদিকে পদত্যাগপত্রে রেজা কিবরিয়া বলেন, আমাকে দলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমি গণঅধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দের প্রতি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। গত দুই বছর দুই মাস আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি।
তিনি আরও বলেন, রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারি নীতি নিয়ে কাজ করি। এক পর্যায়ে আমার মনে হয়েছে, নিজ দেশের জনগণের জন্য কাজ করার সময় এসেছে। এ ধরনের সুযোগ হয়তো ভবিষ্যতে নাও আসতে পারে। আমার বাবা শাহ এএমএস কিবরিয়ার মতো আমি জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাই।
বাংলাদেশে যারা গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে তাদের সঙ্গে কাজ করে যাবেন জানিয়ে রেজা কিবরিয়া বলেন, আমি আমাদের তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে অনেক আশাবাদী। আমি মনে করি, তরুণরা বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা সম্পর্কে ধীরে ধীরে সচেষ্ট হয়ে উঠছে। আমি দেশের মানুষ ও গণমাধ্যম, যারা আমাকে বিগত মাসগুলোতে সাহস জুগিয়েছেন ও সহযোগিতা করেছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আশা করি, আগামী দিনগুলোতে আমরা দেশে মুক্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করে যাব।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ছেড়ে হঠাৎ গণফোরামে যোগ দেন রেজা কিবরিয়া। ওই নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জোট বেঁধে অংশ নিয়েছিল গণফোরাম; সেই জাতীয় নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের হয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে হবিগঞ্জ-১ আসনে প্রার্থীও হন তিনি। কিন্তু ভোটে জয় পাননি।
গণফোরামে যোগ দেওয়ার পরপরই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করা হয়েছিল ড. রেজা কিবরিয়াকে। নির্বাচনের পর তাকে সাধারণ সম্পাদক করেন ড. কামাল হোসেন। এ নিয়ে গণফোরামে দেখা দেয় বিরোধ, চলে বহিষ্কার-পাল্টা বহিষ্কার; মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ একাংশ ক্ষুব্ধ হয়ে দল ভাঙার উদ্যোগও নেন। এই পরিস্থিতিতে ড. কামাল হোসেন দুই পক্ষকে নিয়ে ঐক্য করার চেষ্টা করে বিফল হন। এসব অস্থিরতাকে কেন্দ্র করে ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রেজা কিবরিয়া গণফোরাম থেকে পদত্যাগ করেন।
এরপর ২০২১ সালের অক্টোবরে গণঅধিকার পরিষদে যোগ দেন তিনি। গণঅধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। কিন্তু দলটির সদস্য সচিব ও অনত্যম প্রতিষ্ঠাতা নুরুল হক নুরের সঙ্গে সম্পর্ক বেশি মধুর হয়নি। নানা ইস্যুকে কেন্দ্র করে গত বছরের ১ জুলাই রেজা কিবরিয়াকে বহিষ্কার করেন নুর। রেজা কিবরিয়াও বহিষ্কার করেন নুরকে। বহিষ্কার-পাল্টাবহিষ্কারের পর তারা আলাদা আলাদা কমিটিও ঘোষণা করেন।