নিজস্ব প্রতিবেদক :
খুলনা নগরের নতুন রাস্তা মোড় থেকে বিআইডিসি রোডে ঢোকার মুখে কাদায় একাকার। কাদাপানি মাড়িয়ে সামনে এগোলে পদ্মা মোড়। মোড় থেকে পদ্মা রোড নামের রাস্তাটি ভৈরব নদের দিকে পদ্মা অয়েল ডিপোতে গেছে। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সড়কটি এখন একেবারে চলাচলের অনুপযোগী। খানাখন্দে ভরা সড়কের নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান ফটকের কিছুটা সামনে ‘রাস্তা বন্ধ, আদেশক্রমে কেসিসি’— এ রকম একটা সাইনবোর্ড দেওয়া।
উত্তর কাশিপুর এলাকার পদ্মা রোডটি নগরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই ওয়ার্ডের পদ্মা রোড, মেঘনা রোড, যমুনা রোডসহ বেশির ভাগ সড়কের এখন বেহাল। অবশ্য সড়কগুলোতে উন্নয়নকাজ চলমান। তবে তা ভীষণ ধীরগতিতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওয়ার্ডের ড্রেনেজ–ব্যবস্থাও বেশ নাজুক। মশার দাপটও অনেক বেশি। বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহের কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে ওয়ার্ডের বেশ কিছু উন্নয়নকাজ হচ্ছে। আর করপোরেশন এলাকার মধ্যে জরুরি প্রয়োজনে সামান্য টাকার বিনিময়ে ওয়ার্ড অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করায় মানুষ খুশি।
৭ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর সীমানায় ভৈরব নদ, দক্ষিণে বিআইডিসি রোড, পূর্বে গোয়ালপাড়া পাওয়ার হাউসের পশ্চিম সীমানা এবং পশ্চিম দিকে পুরোনো যশোর রোড, যমুনা অয়েল ডিপো ও দৌলতপুর এবং খালিশপুর থানার সীমানা। ওয়ার্ডের জনসংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার, ভোটার সাড়ে আট হাজারের মতো।
ওই সড়কের বাসিন্দা জাকিয়া বেগম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কের ড্রেনের কাজ হয়েছে। এখন কালভার্টের কাজ হবে, এরপর রাস্তা হবে। প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪২ টন ওজনের ৭০-৮০টি তেলবাহী ট্যাংকার এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে। চালকেরা খুবই ঝুঁকির নিয়ে চলাচল করেন। আর পথচারীদের ভোগান্তির তো শেষ নেই।
ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সুলতান মাহামুদ টানা তিনবার নির্বাচিত হয়েছেন। গতবার বিএনপির সমর্থনে জয়ী হওয়ার পর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। এবারও তিনি নির্বাচন করছেন। সুলতান মাহামুদ বলেন, মানুষের পাশে থাকি বলেই তিন-তিনবার মানুষ আমাকে নির্বাচিত করেছেন। বিভিন্ন রাস্তাঘাটের উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জায়গার অভাবে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন করতে পারিনি। ঘরে ঘরে বর্জ্য নেওয়ার প্রকল্পটা কার্যকর করা যায়নি, তবে শুরু হবে।
এর বাইরে খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক শেখ খালিদ আহমেদ এবার এই ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। তিনি বলেন, ওয়ার্ডে বর্জ্য সংগ্রহের কোনো ব্যবস্থা নেই। রাস্তাঘাটগুলো দীর্ঘদিন যাবৎ ভাঙা। পানি জমে থাকে। ড্রেনেজ–ব্যবস্থাও ভালো না। ড্রেন পরিষ্কার করা হয় না, আবার ড্রেনের ময়লা তুলে রাস্তার ওপর দীর্ঘদিন ফেলা রাখা হয়। কাউন্সিলরের সঙ্গে যাঁদের সখ্য, তাঁদের বাড়ির ভেতরও পাকা হয়ে গেছে। ওয়ার্ডে কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই। খুলনা বিভাগের বড় তিনটি সরকারি তেলের ডিপো এই ওয়ার্ডে। এখানে ফায়ার সার্ভিসের কোনো স্টেশন নেই। তবে এসব ছাপিয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা, এলাকার এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বড় ব্যবসায়ী হওয়ায় তিনি বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করাটা কঠিন।