Dhaka রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খুলনায় কলেজছাত্র হাসিবুর হত্যা মামলায় ২১ জনের যাবজ্জীবন

খুলনা জেলা প্রতিনিধি : 

খুলনায় হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের বহুল আলোচিত কলেজছাত্র হাসিবুর রহমান নিয়াজ হত্যা মামলায় ২১ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেকের ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৫ জন বেকসুর খালাস পেয়েছেন।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আব্দুস ছালাম এ রায় দেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের সরকারি কোঁসুলি রোমানা তানহা।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সৈকত, মো. মেহেদী হাসান রাব্বি, অন্তু, মো. সাজ্জাত হোসেন, ইমদাদুল ইসলাম হৃদয়, মো. আরিফ ওরফে চোরা আরিফ, মো. মুন্না, রফিকুল হাসান শাওন ওরফে আতাং বাবু, মো. সাইফুল, মো. মোস্তাক আহমেদ, মিঠাই হৃদয়, মো. ফাহিম ওরফে কালা ফাহিম, রুবেল, মো. মিজানুর রহমান, সবুজ, মো. ফয়েজুর রহমান আরাফাত, আশিকুর রহমান মোল্লা, রাব্বি ওরফে নাটা রাব্বি, ইয়াসির রাব্বি ওরফে জুয়েল ওরফে নাটা জুয়েল, মো. সাকিব শেখ ও নাঈমুর রহমান ফাহিম।

এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে ৫ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- মো. তুষার, রায়হান, রুনু হওলাদার, নাইম বাবু ওরফে পয়েন্ট বাবু ও সালমান।

আদালতের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট রাত ৯টার দিকে এলাকায় মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে খালিশপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশু পার্ক সংলগ্ন ক্রিয়েটিভ কার্টস অ্যান্ড কফি হাউজের মধ্যে একদল সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করে তৈয়্যেবা কলোনীর বাসিন্দা ও মিল শ্রমিক মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে কলেজছাত্র হাসিবুর রহমান নিয়াজকে। এ সময় হাসিবুরের দুই বন্ধু যোবায়ের ও রানাকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা হাবিবুর রহমান ঘটনার পরের দিন বাদী হয়ে খালিশপুর থানায় মামলা করেন। চলতি বছরের ৭ মার্চ থেকে নগরীর খালিশপুরে আলোচিত কলেজছাত্র হাসিবুর রহমান নিয়াজ হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। পরে নির্ধারিত সময়ে বিচার শেষ না হওয়ায় আদালত মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলি করেন। জীবনের নিরাপত্তার অভাবে মামলার বাদী ও নিহতের বাবা হাবিবুর রহমান শিকদার একাধিকবার বিভিন্ন থানায় জিডি করেন। ২০২০ সালের ২০ আগস্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। গত ২৪ ডিসেম্বর ওই একই আদালতে চার্জশিটের ওপর শুনানি শেষে আদালত তা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

নিহত হাসিবুর রহমান হাসিবের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট না। ভেবেছিলাম কয়েকজন আসামির ফাঁসি হবে। আমরা হাইকোর্টে আবেদন করবো।

আদালতের সরকারি কোঁসুলি রোমানা তানহা বলেন, খালিশপুরের চাঞ্চল্যকর হাসিবুর রহমান হত্যা মামলায় দীর্ঘ বিচার কাজ শেষে বিজ্ঞ আদালত আজ রায় দিয়েছেন। রায়ে ৫ জন আসামি খালাস পেয়েছেন। বাকি আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বিজ্ঞ আদালত অবশ্যই সম্পূর্ণ বিচার করেই রায় দিয়েছেন। কিন্তু আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নয়। আমরা কাগজপত্র তুলব। মামলার বাদীর সঙ্গে কথা বলে হাইকোর্টে আবেদন করব।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

খুলনায় কলেজছাত্র হাসিবুর হত্যা মামলায় ২১ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশের সময় : ০৯:৪৪:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

খুলনা জেলা প্রতিনিধি : 

খুলনায় হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের বহুল আলোচিত কলেজছাত্র হাসিবুর রহমান নিয়াজ হত্যা মামলায় ২১ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেকের ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৫ জন বেকসুর খালাস পেয়েছেন।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আব্দুস ছালাম এ রায় দেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের সরকারি কোঁসুলি রোমানা তানহা।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সৈকত, মো. মেহেদী হাসান রাব্বি, অন্তু, মো. সাজ্জাত হোসেন, ইমদাদুল ইসলাম হৃদয়, মো. আরিফ ওরফে চোরা আরিফ, মো. মুন্না, রফিকুল হাসান শাওন ওরফে আতাং বাবু, মো. সাইফুল, মো. মোস্তাক আহমেদ, মিঠাই হৃদয়, মো. ফাহিম ওরফে কালা ফাহিম, রুবেল, মো. মিজানুর রহমান, সবুজ, মো. ফয়েজুর রহমান আরাফাত, আশিকুর রহমান মোল্লা, রাব্বি ওরফে নাটা রাব্বি, ইয়াসির রাব্বি ওরফে জুয়েল ওরফে নাটা জুয়েল, মো. সাকিব শেখ ও নাঈমুর রহমান ফাহিম।

এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে ৫ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- মো. তুষার, রায়হান, রুনু হওলাদার, নাইম বাবু ওরফে পয়েন্ট বাবু ও সালমান।

আদালতের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট রাত ৯টার দিকে এলাকায় মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে খালিশপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশু পার্ক সংলগ্ন ক্রিয়েটিভ কার্টস অ্যান্ড কফি হাউজের মধ্যে একদল সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করে তৈয়্যেবা কলোনীর বাসিন্দা ও মিল শ্রমিক মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে কলেজছাত্র হাসিবুর রহমান নিয়াজকে। এ সময় হাসিবুরের দুই বন্ধু যোবায়ের ও রানাকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা হাবিবুর রহমান ঘটনার পরের দিন বাদী হয়ে খালিশপুর থানায় মামলা করেন। চলতি বছরের ৭ মার্চ থেকে নগরীর খালিশপুরে আলোচিত কলেজছাত্র হাসিবুর রহমান নিয়াজ হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। পরে নির্ধারিত সময়ে বিচার শেষ না হওয়ায় আদালত মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলি করেন। জীবনের নিরাপত্তার অভাবে মামলার বাদী ও নিহতের বাবা হাবিবুর রহমান শিকদার একাধিকবার বিভিন্ন থানায় জিডি করেন। ২০২০ সালের ২০ আগস্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। গত ২৪ ডিসেম্বর ওই একই আদালতে চার্জশিটের ওপর শুনানি শেষে আদালত তা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

নিহত হাসিবুর রহমান হাসিবের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট না। ভেবেছিলাম কয়েকজন আসামির ফাঁসি হবে। আমরা হাইকোর্টে আবেদন করবো।

আদালতের সরকারি কোঁসুলি রোমানা তানহা বলেন, খালিশপুরের চাঞ্চল্যকর হাসিবুর রহমান হত্যা মামলায় দীর্ঘ বিচার কাজ শেষে বিজ্ঞ আদালত আজ রায় দিয়েছেন। রায়ে ৫ জন আসামি খালাস পেয়েছেন। বাকি আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বিজ্ঞ আদালত অবশ্যই সম্পূর্ণ বিচার করেই রায় দিয়েছেন। কিন্তু আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নয়। আমরা কাগজপত্র তুলব। মামলার বাদীর সঙ্গে কথা বলে হাইকোর্টে আবেদন করব।