নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি :
খুনি হাসিনা যা করেছে তার নির্মম পরিণতি হয়েছে, এর থেকে লজ্জাজনক বিদায় বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন প্রধানমন্ত্রীর হয়নি ও আগামীর বাংলাদেশেও হবেনা বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর)বিকালে নীলফামারীর সৈয়দপুরের ফাইভ স্টার মাঠে জুলাই আগস্ট গনঅভ্যুত্থান উপলক্ষ্যে মতবিনিময় সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, একটা মানুষের যদি ন্যূনতম লজ্জা থাকতো এই ক্ষমতা পিপাসু নারী তার নিজের কথা আর তার পরিবারের কথা একপাশে রেখেছে। এজন্য সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে তার এমন এক করুন পরিণতি হয়েছে। তার যদি বিন্দু মাত্র লজ্জা থাকে তাহলে সে মরণের পূর্বে বাংলাদেশে পা রাখবে না।কিন্তু আমরা আমাদের জায়গা থেকে এই খুনি হাসিনাকে বাংলাদেশে ফাঁসির মঞ্চে দেখতে চাই। যেই হাসিনা তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার ও তার কথা সামনে রেখে অনেক অপরাধী কিংবা নিরপরাধী মানুষকে ফাঁসির মঞ্চে ঝুলিয়েছে। তিনি আরও অসংখ্য মানুষ আলেমকে জেল খানায় বন্দি করে রেখেছিলো। সেই খুনি হাসিনা যখন দুই হাজার মানুষকে হত্যা করেছে তার ফাঁসি এ বাংলাদেশে হওয়া উচিত।
সারজিস আলম বলেন, আমরা খুনি হাসিনা সরকারের দোসরদের বলে দিতে চাই আপনারা যে তলায় লুকায় না কেন বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের খুঁজে এনে ফাঁসির মঞ্চে দাড় করাবে। আমরা ভারতকে একটি জিনিস বলে দিতে চাই বাংলাদেশের মানুষ ভারত বিরোধী নয়। বাংলাদেশের মানুষ ভারতের জনগণ বিরোধী নয়, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ উগ্র সাম্প্রদায়িক মুদি বিরোধী। যে মুদি মুসলমানদের রক্তের ওপরে এসে এই ভারতের ক্ষমতায় এসেছে।আমরা আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট করে একটি কথা বলি, সম্পর্ক হবে দেশের সাথে দেশের, ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির নয়। দলের সাথে দলের নয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সার্বভৌমের বিষয়ে যদি পৃথিবীর কেন দেশ কোন দল কোন মানুষ বিন্দু মাত্র প্রশ্ন করার সাহস করে আমরা তাদের জীবনের বিনিময়ে হলেও প্রতিহত করব।
এ সময় তিনি দেশ গঠন প্রসঙ্গে বলেন, আমরা যখন দেশের উন্নতির কথা চিন্তা করব, তখন আমাদের ব্যক্তিগত জায়গা থেকে নিজেদের ভালো হতে হবে। আমরা যখন একটা সরকারি মেডিকেল কলেজে যাব, আমার সামনে ১০ জন আছে গেটে ২০০ টাকা দিয়ে ২ নাম্বারে চলে গেলাম, এভাবে কখনো আমরা ভালো বাংলাদেশ প্রত্যাশা করতে পারি না।
এই সমন্বয়ক বলেন, এই সৈয়দপুরের কথা, যদি বলি কোনো একজন মানুষ ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ করে বিমানে ঢাকা থেকে সৈয়দপুর এলো, কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু ওই ব্যক্তিটি যখন সৈয়দপুর-পঞ্চগড় যেতে চায় তখনই সমস্যা। এইখানে এমন একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, ওই মানুষগুলোকে কিছু কার ভাড়া করার জন্য জিম্মি করে। এই সৈয়দপুর সিন্ডিকেটের কারণে বেসরকারি বিমানগুলোর যে বাসগুলো চলে, যেগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারে না।
সারজিস আলম বলেন, আমরা যেমন অপরের দোষটি শুনে সমস্বরে গলা মিলাবো, নিজের দোষটি প্রকাশ হলে মেনে নেওয়ার মনমানসিকতা থাকতে হবে। নিজের জায়গায় যদি নিজে ঠিক হতে না পারি, তাহলে আরেকজনে জ্ঞান দেওয়ার নৈতিক অধিকার আমাদের নেই। সেই জায়গা থেকে বাজার হোক, সিন্ডিকেট হোক, চাঁদাবাজি হোক না কেন, এগুলো সেদিন ঠিক হবে যেদিন আমরা ঠিক হব।
১৪ ও ১৫ ডিসেম্বরের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত বিজয়ীদের হাতে সাটিফিকেট ও পুরস্কার তুলে দেন জুলাই আন্দোলনের অন্যতম এই নেতা।
পরে ব্যবসায়ী ও ছাত্র আন্দোলনে আহতদের সাথে স্থানীয় একটি হোটেলে মতবিনিময় করেন সারজিস আলম।
সৈয়দপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সদস্য জাবেদ আত্তারীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুর-ই-আলম সিদ্দিকী, বিএনপি সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ আলহাজ মো. আব্দুল গফুর সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক মো. রেদোয়ান ইসলাম।