Dhaka বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতে পূর্বের ২ শর্ত বহাল থাকবে : আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতে পূর্বের ২ শর্ত বহাল থাকবে বলে মনে করছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকের পর সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

আনিসুল হক বলেন, আমি জানতে পেরেছি যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খালেদা জিয়ার ভাই একটা আবেদন করেছেন তার শর্তযুক্ত মুক্তির মেয়াদ আরও বাড়ানোর জন্য। সেই ফাইলটা আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এসেছে। আমার কাছে এখনো আসেনি।

আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর ফাইলটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতামত পাঠিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। এছাড়া মুক্তির মেয়াদও ছয় মাস বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে— এমন খবর প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এই ব্যাপারে যে তথ্য এখন টেলিভিশনের স্ক্রলে দেওয়া হচ্ছে তা অসত্য।

খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারবেন কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে এখনো আবেদনটি আসেনি। এলে আমি নিষ্পত্তি করবো। আমি যখন এটি নিষ্পত্তি করবো, আমি আপনাদের (সাংবাদিক) অবশ্যই জানাবো। এখনো আমি জানি না ফাইলের মধ্যে কী আছে।

আনিসুল হক বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোনো অভিমত দেওয়া ছাড়া আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে ফাইলটা পাঠানো হয়েছে। যখন আমার কাছে আসবে, যখন আমি এটা নিষ্পত্তি করতে পারব তখন আমি অবশ্যই আপনাদের জানাব।

খালেদা জিয়ার জামিন প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামিন দেওয়ার এখতিয়ার কিন্তু আদালতের, সরকারের না। আমি যেটা মনে করি, যে শর্ত আছে সেই শর্তই থাকবে। এটাই আমার বিশ্বাস।

আইন মন্ত্রণালয় থেকে ফাইল কবে নাগাদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে— জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে আসুক। তারপর পাঠাব।

খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন কি না- এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, আমি এ ব্যাপারে একটা পরিষ্কার কথা বলতে চাই। আমি যেটা বলেছিলাম, সেটা আইনের বইতে কী আছে আপনারা দেখে নেন। তাহলে আপনারা বুঝতে পারবেন কে ঠিক আর কে ভুল। আমি এটার ব্যাপারে আর কথা বলবো না।

বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি এবং পূর্ণ জামিন চাওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, জামিন দেওয়ার এখতিয়ার কিন্তু আদালতের, সরকারের না। প্রথমবার যখন এই আবেদন করা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতার কারণে সেই দরখাস্তের নিষ্পত্তি করে ফৌজদারি কর্যবিধির ৪০১(১) এর ক্ষমতা বলে বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ স্থগিত করে শর্তযুক্তভাবে তাকে ৬ মাসের জন্য মুক্ত করা হয়েছিল। সেখানে দুটি শর্ত আছে; তিনি ঢাকায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

আনিসুল হক আরও বলেন, সর্বশেষ তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ যখন বাড়ানো হয়েছে, এই শর্তগুলো ছিল। এখন যে আবেদন এসেছে, আপনারা কিছু দিনের মধ্যে জানতে পারবেন…আমি যেটা মনে করি, যে শর্ত আছে, সেই শর্তই থাকবে। এটাই আমার বিশ্বাস।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য বুধবার (৮ মার্চ) সপ্তমবারের মতো আবেদন করেছে তার পরিবার। আবেদনে খালেদা জিয়ার মুক্তির শর্ত শিথিল করে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই আবেদন জমা দেন।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আমরা চাই। সকলেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক সেটা আমরা চাই। আমি এটাও বলতে পারি যে, বাংলাদেশে আসন্ন যে নির্বাচন সেটা ফ্রি, ফেয়ার এবং নিউট্রাল (অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ) হবে এরমধ্যে কোনো প্রশ্ন নাই।

তিনি বলেন, সংবিধানের বাইরে আমরা যাবো না। সংবিধানে যেভাবে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে, ঠিক সেভাবেই নির্বাচন হবে। আমরা চাই বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। কিন্তু নির্বাচনে কে অংশ নেবে, কে নেবে না সেটা সেসব রাজনৈতিকদলের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। আমরা চাই সকলেই এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।’

বিএনপি এই পরিবেশে নির্বাচনে আসবে না। অনেক রাষ্ট্রদূত নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে কথা বলছেন। বিদেশিদের কোনো চাপ অনুভব করছেন কিনা- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ওপর বিদেশিদের কোনো চাপ নেই। বিদেশিরা যদি জানতে চায়, আমরা যেহেতু হত্যা বা মিথ্যার রাজনীতি করি না। তাই আমাদের তাদের এ ব্যাপারে জানাতে কোনো আপত্তি নেই। আমরা কোনো লুকোচুরি করি না, সেজন্য বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের এগুলো জানাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই, কোনো দ্বিধা নেই৷’

আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশ একটা স্বাধীন রাষ্ট্র, তাই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বোভৌমত্বের ব্যাপারে কেউ কোনো কথা বললে আমরা সেটা শুনবো না। আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র, জনগণের জন্য যেটা ভালো হবে, আমরা সেটা করবো।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সরকারের একটি অংশ নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে : তারেক রহমান

খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতে পূর্বের ২ শর্ত বহাল থাকবে : আইনমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৪:১০:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতে পূর্বের ২ শর্ত বহাল থাকবে বলে মনে করছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকের পর সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

আনিসুল হক বলেন, আমি জানতে পেরেছি যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খালেদা জিয়ার ভাই একটা আবেদন করেছেন তার শর্তযুক্ত মুক্তির মেয়াদ আরও বাড়ানোর জন্য। সেই ফাইলটা আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এসেছে। আমার কাছে এখনো আসেনি।

আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর ফাইলটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতামত পাঠিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। এছাড়া মুক্তির মেয়াদও ছয় মাস বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে— এমন খবর প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এই ব্যাপারে যে তথ্য এখন টেলিভিশনের স্ক্রলে দেওয়া হচ্ছে তা অসত্য।

খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারবেন কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে এখনো আবেদনটি আসেনি। এলে আমি নিষ্পত্তি করবো। আমি যখন এটি নিষ্পত্তি করবো, আমি আপনাদের (সাংবাদিক) অবশ্যই জানাবো। এখনো আমি জানি না ফাইলের মধ্যে কী আছে।

আনিসুল হক বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোনো অভিমত দেওয়া ছাড়া আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে ফাইলটা পাঠানো হয়েছে। যখন আমার কাছে আসবে, যখন আমি এটা নিষ্পত্তি করতে পারব তখন আমি অবশ্যই আপনাদের জানাব।

খালেদা জিয়ার জামিন প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামিন দেওয়ার এখতিয়ার কিন্তু আদালতের, সরকারের না। আমি যেটা মনে করি, যে শর্ত আছে সেই শর্তই থাকবে। এটাই আমার বিশ্বাস।

আইন মন্ত্রণালয় থেকে ফাইল কবে নাগাদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে— জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে আসুক। তারপর পাঠাব।

খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন কি না- এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, আমি এ ব্যাপারে একটা পরিষ্কার কথা বলতে চাই। আমি যেটা বলেছিলাম, সেটা আইনের বইতে কী আছে আপনারা দেখে নেন। তাহলে আপনারা বুঝতে পারবেন কে ঠিক আর কে ভুল। আমি এটার ব্যাপারে আর কথা বলবো না।

বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি এবং পূর্ণ জামিন চাওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, জামিন দেওয়ার এখতিয়ার কিন্তু আদালতের, সরকারের না। প্রথমবার যখন এই আবেদন করা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতার কারণে সেই দরখাস্তের নিষ্পত্তি করে ফৌজদারি কর্যবিধির ৪০১(১) এর ক্ষমতা বলে বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ স্থগিত করে শর্তযুক্তভাবে তাকে ৬ মাসের জন্য মুক্ত করা হয়েছিল। সেখানে দুটি শর্ত আছে; তিনি ঢাকায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

আনিসুল হক আরও বলেন, সর্বশেষ তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ যখন বাড়ানো হয়েছে, এই শর্তগুলো ছিল। এখন যে আবেদন এসেছে, আপনারা কিছু দিনের মধ্যে জানতে পারবেন…আমি যেটা মনে করি, যে শর্ত আছে, সেই শর্তই থাকবে। এটাই আমার বিশ্বাস।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য বুধবার (৮ মার্চ) সপ্তমবারের মতো আবেদন করেছে তার পরিবার। আবেদনে খালেদা জিয়ার মুক্তির শর্ত শিথিল করে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই আবেদন জমা দেন।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আমরা চাই। সকলেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক সেটা আমরা চাই। আমি এটাও বলতে পারি যে, বাংলাদেশে আসন্ন যে নির্বাচন সেটা ফ্রি, ফেয়ার এবং নিউট্রাল (অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ) হবে এরমধ্যে কোনো প্রশ্ন নাই।

তিনি বলেন, সংবিধানের বাইরে আমরা যাবো না। সংবিধানে যেভাবে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে, ঠিক সেভাবেই নির্বাচন হবে। আমরা চাই বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। কিন্তু নির্বাচনে কে অংশ নেবে, কে নেবে না সেটা সেসব রাজনৈতিকদলের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। আমরা চাই সকলেই এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।’

বিএনপি এই পরিবেশে নির্বাচনে আসবে না। অনেক রাষ্ট্রদূত নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে কথা বলছেন। বিদেশিদের কোনো চাপ অনুভব করছেন কিনা- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ওপর বিদেশিদের কোনো চাপ নেই। বিদেশিরা যদি জানতে চায়, আমরা যেহেতু হত্যা বা মিথ্যার রাজনীতি করি না। তাই আমাদের তাদের এ ব্যাপারে জানাতে কোনো আপত্তি নেই। আমরা কোনো লুকোচুরি করি না, সেজন্য বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের এগুলো জানাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই, কোনো দ্বিধা নেই৷’

আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশ একটা স্বাধীন রাষ্ট্র, তাই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বোভৌমত্বের ব্যাপারে কেউ কোনো কথা বললে আমরা সেটা শুনবো না। আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র, জনগণের জন্য যেটা ভালো হবে, আমরা সেটা করবো।