নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বেগম জিয়ার চিকিৎসার জন্য ওনাদের এত দরদি হওয়ার দরকার নেই, আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি চাই।
শুক্রবার (১০ মার্চ) রাজধানীর শেরেবাংলানগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এম-ট্যাব) ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
তিনি বলেন, নিঃশর্ত মুক্তি পাওয়ার পর তিনি বিদেশে চিকিৎসা করাবেন, নাকি দেশে চিকিৎসা করাবেন, ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নেবেন, নাকি ফকিরের কাছে চিকিৎসা নেবেন সেটা তার একান্ত নিজস্ব ব্যাপার। তারা যে ধরনের কথা বলছেন, তাতে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ গণতন্ত্র অনুপস্থিত। যে গণতন্ত্রের চিন্তা, স্বপ্ন এবং চেতনা নিয়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছি। কিন্তু সত্যিকার অর্থে আমরা এখনো স্বাধীনতা পাইনি। কর্তৃত্ববাদী এবং ক্ষমতালোভীদের কারণে কখনোই সুষ্ঠু গণতন্ত্র আমরা পাই না। দীর্ঘ ১৪ বছর যাবত এমনিতেই ফ্যাসিবাদী সরকার চেপে বসে আছে, যারা ভোটের তোয়াক্কা করে না, জনগণের অধিকারের তোয়াক্কা করে না, যারা ক্ষমতায় এসে লুটপাটের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতি শূন্যের কোঠায় নিয়ে গেছে। একদিকে লুটপাট, অন্যদিকে মুদ্রাপাচার। এ কারণে আজকে রাষ্ট্রের কোষাগার অনেকটাই শূন্য।
তিনি বলেন, একটি ভোটারবিহীন সরকারের পক্ষে দেশ পরিচালনা করা সম্ভব নয়। সে কারণে আমরা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছি। নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে বর্তমানে যারা ভোটে বিশ্বাস করে না, জনগণের অধিকারে বিশ্বাস করে না, তাদের ক্ষমতায় রেখে সম্ভব নয়। সে কারণে তাদের ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করা এবং সংসদ বিলুপ্ত করা এরপর নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। তারা একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করবে সে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে জনগণ ভোট দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছে।
গয়েশ্বর বলেন, সরকারের যে চরিত্র তারা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা থাকতেও চায় না, আসতেও চায় না। তাই তারা কর্তৃত্ববাদী, ফ্যাসিবাদী এবং লুটপাটের জন্য ক্ষমতায় আসা এত তীব্র, সেখানে জনগণের নীতি কথা তাদের কানে যায় না। সে কারণে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং হবে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে আজকে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, আজকে দফায়-দফায় দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে। কিন্তু মানুষের আয় বাড়ছে না। বরং চাকরির বাজার ছোট হচ্ছে।
সরকার দেশে একটা অরাজক পরিবেশ সৃষ্টি করছে দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, দেশে আজকে বাক স্বাধীনতা নেই। সাংবাদিকরা যা দেখে তা বলতে পারে না। লিখতেও পারে না। যার ফলে, দেশের প্রকৃত অবস্থা থেকে জনগণকে তারা অন্ধকারে রাখছে। কিন্তু জনগণ নিজের আত্মউপলব্ধি থেকে আজকে দেশের কি অবস্থা তা জানছে। তারা বাজারে গেলে বোঝতে পারে অর্থনৈতিক সংকট কত?
বিএনপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্র উত্তরণ ঘটাবো, এটাই আমাদের বিশ্বাস।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, সভাপতি এ কে এম মুসা লিটন, মহাসচিব বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব প্রমুখ।