নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কেবিন থেকে আবারো করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক কিছু জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে বিকেলে তাঁকে কেবিন থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার হঠাৎ অবনতি হওয়ায় আজ বিকেল ৫টার দিকে সপ্তম তলার কেবিন থেকে চতুর্থ তলার সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। খালেদা জিয়া লিভার জটিলতার সঙ্গে অন্যান্য রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় তাকে সেখানে নেওয়া হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, মেডিকেল বোর্ডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন ম্যাডাম।
এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হাওয়ায় মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে বেগম জিয়াকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। পরে অবস্থার উন্নতি হলে তাকে ফের কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন খালেদা জিয়া। গত ৯ আগস্ট রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখন তার লিভার, হৃদযন্ত্র ও কিডনির সমস্যা জটিল অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়। তখন থেকে তিনি গুলশানের বাসভবনে অবস্থান করছেন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এর আগে ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিসে আক্রান্তের বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিল তার মেডিকেল বোর্ড। তখন থেকে প্রায় দুই বছরে পরিপাকতন্ত্রে কয়েকবার রক্তক্ষরণ হয়েছে তার।
বিএনপি নেত্রীর মেডিক্যাল বোর্ডের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে অনেক আগেই খালেদা জিয়ার পরিপাকতন্ত্র সংকুচিত হয়ে গেছে এবং এর কার্যক্ষমতা প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে তার লিভারে জটিলতা বেড়েছে ও রক্তক্ষরণের ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে।