নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই শোকবার্তা প্রকাশ করা হয়।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি।
দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় খালেদা জিয়ার অবদান তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন. বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তাঁর অবদান অপরিসীম। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে এবং বিএনপি নেতৃত্বের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি তাঁর ছেলে তারেক রহমান ও পরিবারের অন্যান্য শোকাহত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আশা করছি মহান আল্লাহ তার পরিবারের সদস্যদের এবং বিএনপির সবাইকে এই শোক কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবেন।
গত ৪০ দিন ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে মঙ্গলবার ভোর ৬টায় মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
ঢাকা ও ভারতের কূটনৈতিক সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে যে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর এটিই শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আসা প্রথম কোনো বড় ধরণের আনুষ্ঠানিক শোক বার্তা। তিনি তার বার্তায় বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
দীর্ঘদিন ধরে লিভার, কিডনি, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন ৭৯ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর থেকে তিনি রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গত সোমবার দিবাগত রাত ২টার পর তার স্বাস্থ্যের চরম অবনতি হলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা হাসপাতালে ছুটে যান। চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টার পর মঙ্গলবার ভোর ৬টায় তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন উপস্থিত সাংবাদিকদের বেগম জিয়ার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন।
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনের মাধ্যমে ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে খ্যাতি পাওয়া বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ ৪১ বছর বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো যে, তিনি একাধিকবার সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে কখনো পরাজিত হননি। তিনি তিনবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দুবার বিরোধীদলীয় নেতার ভূমিকা পালন করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজপথের আন্দোলন এবং জেল-জুলুম সহ্য করেও দেশ ছেড়ে না যাওয়ার যে দৃষ্টান্ত তিনি স্থাপন করেছেন, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে তাকে চিরস্মরণীয় করে রাখবে। তার এই মহাপ্রয়াণে কেবল বিএনপি নয়, বরং সমগ্র দেশের রাজনৈতিক কাঠামোর এক শক্তিশালী স্তম্ভের পতন ঘটল।
নিজস্ব প্রতিবেদক 




















