Dhaka বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার আসনে এনসিপি কোনো প্রার্থী দেবে না : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনি আসনে কোনো প্রার্থী দেবে না জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে দলটির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশে রাষ্ট্র গঠনের ব্যর্থতার অনিবার্য পরিণতি: নভেম্বর, ১৯৭৫’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, খালেদা জিয়ার আসনে এনসিপি কোনো প্রার্থী দেবে না। এ গণঅভ্যুত্থানের পরে নতুন একটি সৌন্দর্য এসেছে খালেদা জিয়া প্রার্থী হয়েছেন, আমরা তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। তার আপসহীন ও লড়াকু নেতৃত্ব বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে অনেক শক্তিশালী করেছে।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সরকার গঠন করলে বিএনপির দুর্নীতির বিচার করা হবে। আমরা যদি সরকার গঠন করি ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত যে দুর্নীতি করেছিল, সেগুলোর বিচার করব। বাংলাদেশে কেউ অপরাধ করে ছাড় পাবে এ মন-মানসিকতায় আমরা নেই।

তিনি বলেন, বিএনপি চাঁদাবাজি, মাস্তানি এত বেশি করেছে, এগুলো ক্ষমার অযোগ্য। এগুলোর জন্য বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। আর ২০০১ থেকে ২০০৬-এ তারা যে দুর্নীতি করেছিল, শেখ হাসিনা এত আকাম করেছে যে, বিএনপির দুর্নীতি ঢাকা পড়ে গিয়েছিল। বিএনপির মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেছে। লন্ডনের চুক্তি অনুযায়ী দলটি ক্ষমতায় এলে এনসিপির মাধ্যমে তাদের পতন নিশ্চিত হবে।

পাটওয়ারী বলেন, বিএনপি শুধু দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। খালেদা জিয়ার পাশে দুর্নীতিবাজরা ছিল। এবারের প্রার্থী তালিকায় যারা জুলাই সনদ প্রয়োজন নেই বলছে, তাদের অবস্থানে আমরা হতাশ। যদি বিএনপি সংস্কার বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে, তবে এনসিপি কিছু সুযোগ দিতে রাজি রয়েছে।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জিয়াউর রহমান একজন লাকি ম্যান ছিলেন, ক্ষমতা না চাইতেও তিনি পেয়ে ছিলেন। তার (জিয়াউর রহমান) কিছু ক্যারিশমেটিক জায়গা ছিল, সেই জায়গা থেকে তিনি অর্থনৈতিক কিছু স্বনির্ভরতার জায়গায় বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন। কিন্তু সে সময় সুযোগ ছিল বাংলাদেশকে নতুন করে পুনর্গঠন করার।

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান অর্থনীতিকে পুনর্গঠন করেছেন। রাজনৈতিক পুনর্গঠনের কিছু চেষ্টা চালিয়েছেন কিন্তু তিনি সফল হননি। তিনি যদি চাইতেন, তার হাতে এত ক্ষমতা ছিল জনগণ যেভাবে সাপোর্ট দিয়েছিল, বাংলাদেশের গতিপথ তিনি ঘুরিয়ে দিতে পারতেন। ওই সময় বাংলাদেশে নতুন একটা রিফর্ম প্রসেসের মধ্যে যেতে পারত। কিন্তু জিয়াউর রহমান ঐতিহাসিকভাবে এই সুযোগ মিস করেছেন।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে ডিল করে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এনসিপির হাতে তাদের পতন হবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিএনপির বর্তমানে যে ইকোনমিক পলিসি তা দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উত্তরণ সম্ভব নয়। বিএনপি যদি জোর-জবরদস্তি করে ড. ইউনূসের সঙ্গে ডিল করে, লন্ডনে ডিল করেছিল, নতুনভাবে সেই ডিল নবায়ন করে যদি ক্ষমতায় যায় তাহলে এনসিপির হাতে তাদের পতন হবে।

আলোচনা সভায় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, আমরা পঁচাত্তরের যে ঘটনাপ্রবাহ দেখি, মুক্তিযুদ্ধের পর একটি ঘটনাপ্রবাহ দেখি, এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ভার যেমন আওয়ামী লীগের এবং বর্তমান বাংলাদেশের যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তার দায়ভারও বিএনপির ওপর বর্তায়।

এনসিপির নিবন্ধনের খবরে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, এনসিপি নিবন্ধন পাবে কি না; জনগণ এনসিপির সঙ্গে আছে কি নাই, সে বিষয় নিয়ে অনেকে অনেক ধরনের কটাক্ষ করেছে। কিন্তু আমরা দিন শেষে দেখিয়ে দিয়েছি যে, বাংলাদেশের জনগণ এনসিপির সঙ্গে আছে এবং জনগণ এনসিপিকে সামনের নির্বাচনে সে সমর্থন ব্যক্ত করবে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর রাষ্ট্র গঠনের ব্যর্থতার পেছনে শেখ মুজিবের বিভক্তির রাজনীতি অন্যতম কারণ। আওয়ামী লীগের মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশের ইতিহাস নয়, নিজেদের দলের ইতিহাসও সঠিকভাবে লেখানো সম্ভব নয়।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন, জয়নাল আবেদীন শিশির প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

খালেদা জিয়ার আসনে এনসিপি কোনো প্রার্থী দেবে না : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

প্রকাশের সময় : ১০:৩৬:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনি আসনে কোনো প্রার্থী দেবে না জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে দলটির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশে রাষ্ট্র গঠনের ব্যর্থতার অনিবার্য পরিণতি: নভেম্বর, ১৯৭৫’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, খালেদা জিয়ার আসনে এনসিপি কোনো প্রার্থী দেবে না। এ গণঅভ্যুত্থানের পরে নতুন একটি সৌন্দর্য এসেছে খালেদা জিয়া প্রার্থী হয়েছেন, আমরা তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। তার আপসহীন ও লড়াকু নেতৃত্ব বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে অনেক শক্তিশালী করেছে।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সরকার গঠন করলে বিএনপির দুর্নীতির বিচার করা হবে। আমরা যদি সরকার গঠন করি ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত যে দুর্নীতি করেছিল, সেগুলোর বিচার করব। বাংলাদেশে কেউ অপরাধ করে ছাড় পাবে এ মন-মানসিকতায় আমরা নেই।

তিনি বলেন, বিএনপি চাঁদাবাজি, মাস্তানি এত বেশি করেছে, এগুলো ক্ষমার অযোগ্য। এগুলোর জন্য বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। আর ২০০১ থেকে ২০০৬-এ তারা যে দুর্নীতি করেছিল, শেখ হাসিনা এত আকাম করেছে যে, বিএনপির দুর্নীতি ঢাকা পড়ে গিয়েছিল। বিএনপির মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেছে। লন্ডনের চুক্তি অনুযায়ী দলটি ক্ষমতায় এলে এনসিপির মাধ্যমে তাদের পতন নিশ্চিত হবে।

পাটওয়ারী বলেন, বিএনপি শুধু দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। খালেদা জিয়ার পাশে দুর্নীতিবাজরা ছিল। এবারের প্রার্থী তালিকায় যারা জুলাই সনদ প্রয়োজন নেই বলছে, তাদের অবস্থানে আমরা হতাশ। যদি বিএনপি সংস্কার বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে, তবে এনসিপি কিছু সুযোগ দিতে রাজি রয়েছে।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জিয়াউর রহমান একজন লাকি ম্যান ছিলেন, ক্ষমতা না চাইতেও তিনি পেয়ে ছিলেন। তার (জিয়াউর রহমান) কিছু ক্যারিশমেটিক জায়গা ছিল, সেই জায়গা থেকে তিনি অর্থনৈতিক কিছু স্বনির্ভরতার জায়গায় বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন। কিন্তু সে সময় সুযোগ ছিল বাংলাদেশকে নতুন করে পুনর্গঠন করার।

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান অর্থনীতিকে পুনর্গঠন করেছেন। রাজনৈতিক পুনর্গঠনের কিছু চেষ্টা চালিয়েছেন কিন্তু তিনি সফল হননি। তিনি যদি চাইতেন, তার হাতে এত ক্ষমতা ছিল জনগণ যেভাবে সাপোর্ট দিয়েছিল, বাংলাদেশের গতিপথ তিনি ঘুরিয়ে দিতে পারতেন। ওই সময় বাংলাদেশে নতুন একটা রিফর্ম প্রসেসের মধ্যে যেতে পারত। কিন্তু জিয়াউর রহমান ঐতিহাসিকভাবে এই সুযোগ মিস করেছেন।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে ডিল করে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এনসিপির হাতে তাদের পতন হবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিএনপির বর্তমানে যে ইকোনমিক পলিসি তা দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উত্তরণ সম্ভব নয়। বিএনপি যদি জোর-জবরদস্তি করে ড. ইউনূসের সঙ্গে ডিল করে, লন্ডনে ডিল করেছিল, নতুনভাবে সেই ডিল নবায়ন করে যদি ক্ষমতায় যায় তাহলে এনসিপির হাতে তাদের পতন হবে।

আলোচনা সভায় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, আমরা পঁচাত্তরের যে ঘটনাপ্রবাহ দেখি, মুক্তিযুদ্ধের পর একটি ঘটনাপ্রবাহ দেখি, এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ভার যেমন আওয়ামী লীগের এবং বর্তমান বাংলাদেশের যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তার দায়ভারও বিএনপির ওপর বর্তায়।

এনসিপির নিবন্ধনের খবরে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, এনসিপি নিবন্ধন পাবে কি না; জনগণ এনসিপির সঙ্গে আছে কি নাই, সে বিষয় নিয়ে অনেকে অনেক ধরনের কটাক্ষ করেছে। কিন্তু আমরা দিন শেষে দেখিয়ে দিয়েছি যে, বাংলাদেশের জনগণ এনসিপির সঙ্গে আছে এবং জনগণ এনসিপিকে সামনের নির্বাচনে সে সমর্থন ব্যক্ত করবে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর রাষ্ট্র গঠনের ব্যর্থতার পেছনে শেখ মুজিবের বিভক্তির রাজনীতি অন্যতম কারণ। আওয়ামী লীগের মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশের ইতিহাস নয়, নিজেদের দলের ইতিহাসও সঠিকভাবে লেখানো সম্ভব নয়।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন, জয়নাল আবেদীন শিশির প্রমুখ।