পাবনা জেলা প্রতিনিধি :
পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক কলেজপাড়া থেকে মাস্টারপাড়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার অংশে চলাচলে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। প্রায় এক বছর ধরে সড়কজুড়ে অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই ওইসব গর্তে পানি জমে যায়। তখন কাদাপানিতে একাকার হয়ে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে জনজীবন।
প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হওয়া সত্ত্বেও সড়কের এমন ভগ্নদশায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা, পথচারী ও যানবাহন চালকরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভাঙ্গুড়া পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুন নাহার সড়কটি ‘দ্রুত’ সংস্কারের আশ্বাস দেন।
ভাঙ্গুড়া পৌরসভার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কলেজপাড়া থেকে মাস্টারপাড়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কটি পৌর এলাকা ছাড়াও ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিষদ, ভাঙ্গুড়া থানা, ভাঙ্গুড়া হাটবাজার, সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ, সরকারি ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং জেলা সদরে যাতায়াতের একমাত্র প্রধান পথ হিসেবে ব্যবহার হয়।
বিশেষ করে অষ্টমিষা, খানমরিচ ও দিলপাশার ইউনিয়নের বহু মানুষ প্রতিদিন এই রাস্তা ব্যবহার করেন। অথচ বছরের পর বছর ধরে এই সড়কের কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি। ভোগান্তি মাথায় নিয়েই এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, রোগী এবং সাধারণ জনগণ চলাচল করেন।
কলেজপাড়া এলাকায় কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা পথচারী মেহেদী হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই রাস্তায় হাঁটতে গেলে পা আটকে যায়। পিছলে পড়ে আহতও হয়েছি। বৃষ্টির দিনে বাচ্চদের কাদাপানি মাড়িয়ে স্কুল-কলেজে যেতে খুব কষ্ট হয়। তখন ভ্যান বা রিকশাও পাওয়া যায় না।
কলেজপাড়া থেকে মাস্টারপাড়া সড়কের গাড়িচালক কেরামত আলী বলেন, রাস্তায় গর্তের কারণে প্রায়ই গাড়ির চাকা নষ্ট হয়। এতে গাড়ি চালানো যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনি ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মাস্টারপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী সাজিদ হোসেন বলেন, রাস্তাটি ভালো না থাকায় ভাঙ্গুড়া হাটবাজারে পণ্য আনা-নেওয়া বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে ব্যবসা ক্ষতির মুখে পড়ছে।
ভাঙ্গুড়ার পাটুলিপাড়ার রায়হার আলী বলেন, এই রাস্তা দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকার কারণে জনজীবনে সরাসরি প্রভাব পড়ছে। আমরা অবিলম্বে সড়কটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবি জানাই।
পাড়ভাঙ্গুড়ার রাউজ হোসেন বলেন, জরুরি প্রয়োজনে এ পথে গাড়ি নিয়ে চলতে গেলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। খানাখন্দে গাড়ি আটকে গেলে সেটা তুলতে কষ্ট হয়, সময়ও লাগে অনেক। আসলে প্রতিনিধি না থাকার কারণে এ দশা তৈরি হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কবর্মকর্তা এখন এ দায়িত্বে আছেন। তিনি একা কয়টা কাজ দেখবেন।
তবে সড়কটির অবস্থা সম্পর্কে ‘অবগত’ বলে জানিয়েছেন ভাঙ্গুড়া পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার।
তিনি বলেন, জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইতোমধ্যে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যেই সংস্কার কাজ শুরু হবে।