Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খানাখন্দে বেহাল বোয়ালমারী-ময়েনদিয়া সড়ক, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অসংখ্য ছোট-বড় খানাখন্দে ভরা ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার বোয়ালমারী-ময়েনদিয়া সড়কটির বেহাল দশা। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোটবড় অসংখ্য দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সড়কটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সংস্কারের অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় লোকজনদের। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক যানবাহন চলাচল করলেও বর্তমানে বেহাল রাস্তায় পরিণত হওয়ায় যান চলাচলেও ভোগান্তিতে পড়েতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, বোয়ালমারী-ময়েনদিয়া সড়কজুড়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এখানে প্রায়ই ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। বিগত কয়েক বছর ধরে সংস্কার করা হয়নি সড়কটি। ফলে সড়কটিতে অসংখ্য খানা-খন্দসহ প্রায় স্থানেই বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এমন ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজারো মানুষকে। প্রায়ই পথিমধ্যে বিকল হয়ে যায় যানবাহন।

খবর নিয়ে জানা গেছে, সড়কটির পাশেই কলারন গ্রামে রয়েছে গোল্ডেন জুট মিল। সেই মিলে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি ট্রাক পাট বোঝাই করে আসা যাওয়া করে। তাছাড়া ময়েনদিয়া বাজারে রয়েছে পাটের মোকাম, সেখানেও প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০টি ট্রাক পাট নিয়ে আসা যাওয়া করে। বোয়ালমারী থেকে ময়েনদিয়া পর্যন্ত রাস্তাটি ৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা এরইমধ্যে সংস্কার হয়েছে, বাকি সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

ট্রাকচালক কবির হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ সড়টির বেহাল অবস্থা। অনেকটা মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে চলতে হচ্ছে। এর মধ্যেই আজকে ট্রাকটি নিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হলো। সড়কটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।

এ ব্যপারে স্থানীয় বাসিন্দা মির্জা শামসুজ্জামান বেগ বলেন, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শত শত শিক্ষার্থী বোয়ালমারী ও ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী নগরকান্দা, সালথা, মুকসেদপুর, ভাঙা উপজেলার মানুষও এ সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। কিন্তু চলার মতো কোনো অবস্থা নেই সড়কটির।

এ ব্যপারে বোয়ালমারী শাহ্ জফর টেকনিকেল অ্যান্ড বিজনেস কলেজের অধ্যক্ষ লিয়াকত হোসেন লিটন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির বেহাল দশা। যানবাহনতো দূরে থাক, পায়ে হেঁটে চলাও দ্বায়। এ সড়ক দিয়ে যানবাহনের চালকরাও সহজে যেতে চান না। এই সুযোগে ভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নছিমন ও মোটরসাইকেল চালকরা এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া। এরমধ্যে বৃষ্টি হলেতো কথায় নেই। কাদা পানিতে পুরো সড়ক যেন চাষযোগ্য জমিতে পরিণত হয়।

এ ব্যাপারে সড়কটি সংস্কার কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সালেহ্ অ্যান্ড ব্রাদার্সের সত্ত্বাধিকারী সালেহ আহম্মেদ বলেন, এডিবির প্রকল্পভুক্ত আরসিআইবি প্রকল্পের মাধ্যমে ৭ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ টেন্ডারের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি। এর মধ্যে সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার কাজ এরইমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি সাড়ে তিন কিলোমিটারের কাজ সিডিউল মোতাবেক সংশোধিত প্রাক্কলন করে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে ঢাকায় এলজিইডির প্রকল্প অফিসে পাঠানো হয়েছে। সংশোধিত প্রাক্কলন অনুমোদিত হয়ে গেলেই সড়কের বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (স্থানীয় সরকার বিভাগ) পূর্নেন্দু সাহা বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়েছি। সাত কিলোমিটার সড়কটির সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকি সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা টেকসই ও মজবুত করার লক্ষ্যে সংশোধিত প্রাক্কলন নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে ঢাকায় এলজিইডির এডিবি প্রকল্প অফিসে পাঠানো হয়েছে। সংশোধিত প্রাক্কলন অনুমোদিত হলেই রাস্তার বাকি কাজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শুরু করবেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চাঁদাবাজি নয়, ভাঙারি দোকান দখল দ্বন্দ্বেই মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: ডিএমপি

খানাখন্দে বেহাল বোয়ালমারী-ময়েনদিয়া সড়ক, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

প্রকাশের সময় : ০৮:১০:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অসংখ্য ছোট-বড় খানাখন্দে ভরা ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার বোয়ালমারী-ময়েনদিয়া সড়কটির বেহাল দশা। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোটবড় অসংখ্য দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সড়কটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সংস্কারের অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় লোকজনদের। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক যানবাহন চলাচল করলেও বর্তমানে বেহাল রাস্তায় পরিণত হওয়ায় যান চলাচলেও ভোগান্তিতে পড়েতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, বোয়ালমারী-ময়েনদিয়া সড়কজুড়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এখানে প্রায়ই ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। বিগত কয়েক বছর ধরে সংস্কার করা হয়নি সড়কটি। ফলে সড়কটিতে অসংখ্য খানা-খন্দসহ প্রায় স্থানেই বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এমন ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজারো মানুষকে। প্রায়ই পথিমধ্যে বিকল হয়ে যায় যানবাহন।

খবর নিয়ে জানা গেছে, সড়কটির পাশেই কলারন গ্রামে রয়েছে গোল্ডেন জুট মিল। সেই মিলে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি ট্রাক পাট বোঝাই করে আসা যাওয়া করে। তাছাড়া ময়েনদিয়া বাজারে রয়েছে পাটের মোকাম, সেখানেও প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০টি ট্রাক পাট নিয়ে আসা যাওয়া করে। বোয়ালমারী থেকে ময়েনদিয়া পর্যন্ত রাস্তাটি ৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা এরইমধ্যে সংস্কার হয়েছে, বাকি সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

ট্রাকচালক কবির হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ সড়টির বেহাল অবস্থা। অনেকটা মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে চলতে হচ্ছে। এর মধ্যেই আজকে ট্রাকটি নিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হলো। সড়কটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।

এ ব্যপারে স্থানীয় বাসিন্দা মির্জা শামসুজ্জামান বেগ বলেন, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শত শত শিক্ষার্থী বোয়ালমারী ও ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী নগরকান্দা, সালথা, মুকসেদপুর, ভাঙা উপজেলার মানুষও এ সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। কিন্তু চলার মতো কোনো অবস্থা নেই সড়কটির।

এ ব্যপারে বোয়ালমারী শাহ্ জফর টেকনিকেল অ্যান্ড বিজনেস কলেজের অধ্যক্ষ লিয়াকত হোসেন লিটন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির বেহাল দশা। যানবাহনতো দূরে থাক, পায়ে হেঁটে চলাও দ্বায়। এ সড়ক দিয়ে যানবাহনের চালকরাও সহজে যেতে চান না। এই সুযোগে ভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নছিমন ও মোটরসাইকেল চালকরা এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া। এরমধ্যে বৃষ্টি হলেতো কথায় নেই। কাদা পানিতে পুরো সড়ক যেন চাষযোগ্য জমিতে পরিণত হয়।

এ ব্যাপারে সড়কটি সংস্কার কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সালেহ্ অ্যান্ড ব্রাদার্সের সত্ত্বাধিকারী সালেহ আহম্মেদ বলেন, এডিবির প্রকল্পভুক্ত আরসিআইবি প্রকল্পের মাধ্যমে ৭ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ টেন্ডারের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি। এর মধ্যে সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার কাজ এরইমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি সাড়ে তিন কিলোমিটারের কাজ সিডিউল মোতাবেক সংশোধিত প্রাক্কলন করে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে ঢাকায় এলজিইডির প্রকল্প অফিসে পাঠানো হয়েছে। সংশোধিত প্রাক্কলন অনুমোদিত হয়ে গেলেই সড়কের বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (স্থানীয় সরকার বিভাগ) পূর্নেন্দু সাহা বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়েছি। সাত কিলোমিটার সড়কটির সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকি সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা টেকসই ও মজবুত করার লক্ষ্যে সংশোধিত প্রাক্কলন নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে ঢাকায় এলজিইডির এডিবি প্রকল্প অফিসে পাঠানো হয়েছে। সংশোধিত প্রাক্কলন অনুমোদিত হলেই রাস্তার বাকি কাজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শুরু করবেন।