Dhaka বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খলিলসহ তিন ব্যবসায়ীর পক্ষে কম দামে আর মাংস বিক্রি সম্ভব নয়: ভোক্তার ডিজি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, গরুর মাংস বিক্রেতা খলিল, নয়ন ও উজ্জ্বল এতদিন লোকসান দিয়ে গরুর মাংস বিক্রি করেছেন। গরুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে মাংসের দামও বেড়ে গেছে। তাদের পক্ষে কম দামে আর মাংস বিক্রি করা সম্ভব নয়। এ পরিস্থিতিতে তারা কি করবেন, এটি সম্পূর্ণ তাদের সিদ্ধান্ত।

রোববার (২৪ মার্চ) জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ের নতুন সভাকক্ষে ব্যক্তি পর্যায়ে সাশ্রয়ী মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ভোক্তার ডিজি বলেন, মূলত গরুর দাম বেশি হওয়ার কারণে মাংসের দাম বেড়ে গেছে। গত বছরের শেষদিকে খলিলের উদ্যোগে দেশের বাজারে কমতে শুরু করে গরুর মাংসের দাম। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশন এক মাসের জন্য ৬৫০ টাকা দাম বেঁধে দেয়ার পর চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি থেকে আবারও বাড়তে শুরু করে মাংসের দাম।

এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, রমজানের পর খলিল-নয়নদের দোকানে উপচেপড়া ভিড় ছিল। মাংস কিনতে ঢাকার বাইরে থেকে মানুষ এসেছে তাদের দোকানে। সেখানে পুলিশ পর্যন্ত মোতায়েন করা হয়েছিল। এর আগে খলিলকে মৃত্যুর হুমকি পর্যন্ত দেয়া হয়েছিল। রাজশাহীতে কম দামে মাংস বিক্রি করায় একজনকে খুন করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, মূলত খলিল-নয়নরা এতদিন লোকসান দিয়ে মাংস বিক্রি করেছেন। এখন বাজারে গরুর দাম বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে তারা কী করবেন, এটি সম্পূর্ণ তাদের সিদ্ধান্ত।

এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, বাজারের দ্রব্যমূল্য সামাল দেয়াই ভোক্তা অধিকারের একমাত্র কাজ না। আমার একার পক্ষে বাজার সামাল দেয়া সম্ভব না।

তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকারের মূল কাজ ভোক্তাদের সচেতন করা। ভোক্তাদের অভিযোগের নিষ্পত্তি করা। এর পাশাপাশি ভোক্তা অধিকার বাজার মনিটরিং করে থাকে। বাজার মনিটরিংয়ের একটি অংশ দ্রব্যমূল্য সামাল দেয়া। এটি অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। ভোক্তা অধিকারের হাতে সব বিষয় নেই। যতদূর সম্ভব ভোক্তা অধিকার দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।

ভোক্তা অধিকারের কাজের প্রভাব বাজারে দেখা যায় না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, আজকেও ভোক্তা অধিকারের ৫০টি টিম বাজার তদারকি করছে। একটু আগেও আমাদের কাছে খবর এসেছে চট্টগ্রাম রেডিসন ব্লু হোটেলে একটি পাঞ্জাবি ৩ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেখানে আমরা টিম পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। বাজার সামলাতে মাঠে ৫ হাজার টিম থাকা দরকার, যেটা জনবল সংকটের কারণে চাইলেও সম্ভব না।

তবে এত সীমাবদ্ধতার মধ্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের অনেক সফলতা আছে উল্লেখ করে সফিকুজ্জামান বলেন, রোজার শুরুতে বেগুনের দাম ছিল ১০০ টাকা কেজি। এখন কারওয়ান বাজারে বেগুনের দাম কমে ৬০ টাকায় নেমেছে। তরমুজ ক’দিন আগে কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন পিস হিসাবে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি সাইজের একটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায় এবং বড় সাইজের তরমুজ ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অতীত উদাহরণ টেনে মহাপরিচালক বলেন, আগের রোজায় মুরগির দাম বেড়ে গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থায় কেজিপ্রতি মুরগির দাম ১০০ টাকা কমে গিয়েছিল। বর্তমানে গরুর মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তবে যারা সিন্ডিকেট ভেঙে কম দামে মাংস বিক্রি করছে তাদের সর্বাত্মকভাবে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের করা নানা প্রশ্নের উত্তরের প্রেক্ষিতে সফিকুজ্জামান বলেন, আপনারা দাম বাড়লে সেটাকে লাল কালিতে হেডলাইন করেন। তখন বাজার সামাল দেয়া আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যায়। একইভাবে দাম কমলে সেটাকে ফলাও করে প্রচার করেন না আপনারা। আপনাদের সহযোগিতা না থাকলে বাজার সামলানো আমাদের জন্য কঠিন হয়ে উঠবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

হাদি হত্যাচেষ্টা মামলায় ৩ দিনের রিমান্ডে নুরুজ্জামান

খলিলসহ তিন ব্যবসায়ীর পক্ষে কম দামে আর মাংস বিক্রি সম্ভব নয়: ভোক্তার ডিজি

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৪:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, গরুর মাংস বিক্রেতা খলিল, নয়ন ও উজ্জ্বল এতদিন লোকসান দিয়ে গরুর মাংস বিক্রি করেছেন। গরুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে মাংসের দামও বেড়ে গেছে। তাদের পক্ষে কম দামে আর মাংস বিক্রি করা সম্ভব নয়। এ পরিস্থিতিতে তারা কি করবেন, এটি সম্পূর্ণ তাদের সিদ্ধান্ত।

রোববার (২৪ মার্চ) জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ের নতুন সভাকক্ষে ব্যক্তি পর্যায়ে সাশ্রয়ী মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ভোক্তার ডিজি বলেন, মূলত গরুর দাম বেশি হওয়ার কারণে মাংসের দাম বেড়ে গেছে। গত বছরের শেষদিকে খলিলের উদ্যোগে দেশের বাজারে কমতে শুরু করে গরুর মাংসের দাম। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশন এক মাসের জন্য ৬৫০ টাকা দাম বেঁধে দেয়ার পর চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি থেকে আবারও বাড়তে শুরু করে মাংসের দাম।

এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, রমজানের পর খলিল-নয়নদের দোকানে উপচেপড়া ভিড় ছিল। মাংস কিনতে ঢাকার বাইরে থেকে মানুষ এসেছে তাদের দোকানে। সেখানে পুলিশ পর্যন্ত মোতায়েন করা হয়েছিল। এর আগে খলিলকে মৃত্যুর হুমকি পর্যন্ত দেয়া হয়েছিল। রাজশাহীতে কম দামে মাংস বিক্রি করায় একজনকে খুন করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, মূলত খলিল-নয়নরা এতদিন লোকসান দিয়ে মাংস বিক্রি করেছেন। এখন বাজারে গরুর দাম বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে তারা কী করবেন, এটি সম্পূর্ণ তাদের সিদ্ধান্ত।

এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, বাজারের দ্রব্যমূল্য সামাল দেয়াই ভোক্তা অধিকারের একমাত্র কাজ না। আমার একার পক্ষে বাজার সামাল দেয়া সম্ভব না।

তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকারের মূল কাজ ভোক্তাদের সচেতন করা। ভোক্তাদের অভিযোগের নিষ্পত্তি করা। এর পাশাপাশি ভোক্তা অধিকার বাজার মনিটরিং করে থাকে। বাজার মনিটরিংয়ের একটি অংশ দ্রব্যমূল্য সামাল দেয়া। এটি অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। ভোক্তা অধিকারের হাতে সব বিষয় নেই। যতদূর সম্ভব ভোক্তা অধিকার দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।

ভোক্তা অধিকারের কাজের প্রভাব বাজারে দেখা যায় না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, আজকেও ভোক্তা অধিকারের ৫০টি টিম বাজার তদারকি করছে। একটু আগেও আমাদের কাছে খবর এসেছে চট্টগ্রাম রেডিসন ব্লু হোটেলে একটি পাঞ্জাবি ৩ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেখানে আমরা টিম পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। বাজার সামলাতে মাঠে ৫ হাজার টিম থাকা দরকার, যেটা জনবল সংকটের কারণে চাইলেও সম্ভব না।

তবে এত সীমাবদ্ধতার মধ্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের অনেক সফলতা আছে উল্লেখ করে সফিকুজ্জামান বলেন, রোজার শুরুতে বেগুনের দাম ছিল ১০০ টাকা কেজি। এখন কারওয়ান বাজারে বেগুনের দাম কমে ৬০ টাকায় নেমেছে। তরমুজ ক’দিন আগে কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন পিস হিসাবে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি সাইজের একটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায় এবং বড় সাইজের তরমুজ ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অতীত উদাহরণ টেনে মহাপরিচালক বলেন, আগের রোজায় মুরগির দাম বেড়ে গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থায় কেজিপ্রতি মুরগির দাম ১০০ টাকা কমে গিয়েছিল। বর্তমানে গরুর মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তবে যারা সিন্ডিকেট ভেঙে কম দামে মাংস বিক্রি করছে তাদের সর্বাত্মকভাবে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের করা নানা প্রশ্নের উত্তরের প্রেক্ষিতে সফিকুজ্জামান বলেন, আপনারা দাম বাড়লে সেটাকে লাল কালিতে হেডলাইন করেন। তখন বাজার সামাল দেয়া আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যায়। একইভাবে দাম কমলে সেটাকে ফলাও করে প্রচার করেন না আপনারা। আপনাদের সহযোগিতা না থাকলে বাজার সামলানো আমাদের জন্য কঠিন হয়ে উঠবে।