Dhaka শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খরচ কমাতে বিছানার অর্ধেক ভাড়া দিতে চান টরন্টোর নারী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

কানাডার টরন্টোয় জীবনযাত্রার ব্যয় দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বাসা ভাড়া বেড়ে যাচ্ছে বহুগুণে। এই ব্যয় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন মানুষ। এ অবস্থায় একজন নারী সংসারে খরচ কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে আনতে তাঁর বিছানার অর্ধেক ভাড়া দেওয়ার (বেডমেট) প্রস্তাব দিয়েছেন। গত মাসে টরন্টো-ভিত্তিক রিয়েলটর আনিয়া ইটিঙ্গার ফেসবুকে এ–সংক্রান্ত এক নারীর একটি পোস্ট সবার সামনে তুলে ধরেছেন। ফেসবুকের মার্কেটপ্লেসে দেওয়া ওই পোস্ট ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে টরন্টো-ভিত্তিক রিয়েলটর আনিয়া ইটিঙ্গার ফেসবুকের মার্কেটপ্লেসে এক নারীর বিছানার অর্ধেক ভাড়া দেবেন বলে পোস্ট দেন। এতে তিনি বিছানার অর্ধেক অংশের ভাড়া বাবদ মাসে ৯০০ কানাডিয়ান ডলার (বাংলাদেশি প্রায় ৭২ হাজার ৯১৮ টাকা) নেবেন বলে জানান। অবশ্য ওই পোস্ট এখন ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

তবে পরবর্তীতে ফেসবুক থেকে ওই পোস্টটি মুছে ফেলা হয়েছে। পোস্টে রিয়েলটর আনিয়া ইটিঙ্গার বলেন, মাস্টার বেডরুমে একটি কুইন সাইজ বিছানা শেয়ার করার জন্য একজন সহজ-সরল নারী খুঁজছি। আমি এর আগেও ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া এক নারীর সঙ্গে বিছানা শেয়ার করেছিলাম। আর এটা ভালোভাবেই চলছিল।

‘‘শেয়ারড বেডরুম ইন আ লেক-ফেসিং ডাউনটাউন কনডো’’ শিরোনামের ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে দেওয়া বিজ্ঞাপনে এ জন্য মাসে ৯০০ কানাডিয়ান ডলার দিতে হবে বলে জানান তিনি। এই পোস্টের বিষয়ে আনিয়ার ইটিঙ্গা বলেন, আপনি যখন মনে করেন টরন্টোর বাজার পরিস্থিতিতে খারাপ কিছু ঘটেনি। তখন এটা দেখুন, আসলে এমনই ঘটছে। এটা অত্যন্ত বিপর্যয়কর। মাসে ৯০০ কানাডিয়ান ডলারে আপনার বিছানার অর্ধেক জায়গা ভাড়া দিচ্ছেন? এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এখানে অনেক মানুষ এটা পছন্দ করবেন না।

প্রতি মাসে বিছানার ভাড়া বাবদ ওই নারী ৯০০ কানাডিয়ান ডলার দাবি করেছিলেন। পোস্টটি প্রসঙ্গে সিটিভি নিউজ টরন্টোকে আনিয়া ইটিঙ্গার বলেন, আপনি যদি ভাবেন, টরন্টোর অর্থনৈতিক অবস্থায় খারাপ কিছু ঘটেনি। তাহলে এটা দেখুন, আসলে এমটাই ঘটছে। একজন মাসে ৯০০ কানাডিয়ান ডলারে তাঁর বিছানা ভাড়া দিতে চাচ্ছেন। অনেকেই বিষয়টিকে ভালোভাবে দেখবে না। তবে সবচেয়ে খারাপ বিষয় হচ্ছে, অনেকে এটা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।

টরন্টোর আবাসন সংকটের তীব্রতা তুলে ধরে সিটিভি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে লোকজন বিভিন্ন ধরনের মন্তব্যও করছেন। একজন লিখেছেন, এই বিজ্ঞাপনটি অযৌক্তিক নয়। তবে আরও আতঙ্কের বিষয় হল, তিনি বিছানা ভাড়া দেওয়ার জন্য যেকোনও নারীকে খুঁজছেন। আর কারও কাছে মনে হচ্ছে এটাই সঠিক এবং কেউ না কেউ তা ভাড়াও নিচ্ছেন।

অন্য একজন কমেন্টে লিখেছেন, এর একটা সুবিধা হলো এটা একাকিত্ব নিরাময় করে।

টরন্টো কানাডার দ্বিতীয় সবচেয়ে ব্যয়বহুল আবাসন বাজার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টরন্টোয় একটি এক কক্ষের বাসার গড় খরচ প্রতি মাসে প্রায় ২ লাখ ৮৯ হাজার ৬৬০ টাকা (২ হাজার ৬১৪ মার্কিন ডলার)। এই অর্থ জোগাড় করতে মানুষকে অপ্রচলিত নানা উপায় অবলম্বন করতে হয়। এ কারণে শহরে বিছানা ভাড়া (হট বেডিং) দিয়ে অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে বিছানা শেয়ার করার প্রবণতা বাড়ছে।

২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি এবং মেলবোর্নে ৭ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে দেখা যায়, এই শিক্ষার্থীদের প্রায় ৩ শতাংশই ভাড়া বাঁচানোর জন্য হট বেডিং করছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

খরচ কমাতে বিছানার অর্ধেক ভাড়া দিতে চান টরন্টোর নারী

প্রকাশের সময় : ০৭:৩৬:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

কানাডার টরন্টোয় জীবনযাত্রার ব্যয় দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বাসা ভাড়া বেড়ে যাচ্ছে বহুগুণে। এই ব্যয় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন মানুষ। এ অবস্থায় একজন নারী সংসারে খরচ কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে আনতে তাঁর বিছানার অর্ধেক ভাড়া দেওয়ার (বেডমেট) প্রস্তাব দিয়েছেন। গত মাসে টরন্টো-ভিত্তিক রিয়েলটর আনিয়া ইটিঙ্গার ফেসবুকে এ–সংক্রান্ত এক নারীর একটি পোস্ট সবার সামনে তুলে ধরেছেন। ফেসবুকের মার্কেটপ্লেসে দেওয়া ওই পোস্ট ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে টরন্টো-ভিত্তিক রিয়েলটর আনিয়া ইটিঙ্গার ফেসবুকের মার্কেটপ্লেসে এক নারীর বিছানার অর্ধেক ভাড়া দেবেন বলে পোস্ট দেন। এতে তিনি বিছানার অর্ধেক অংশের ভাড়া বাবদ মাসে ৯০০ কানাডিয়ান ডলার (বাংলাদেশি প্রায় ৭২ হাজার ৯১৮ টাকা) নেবেন বলে জানান। অবশ্য ওই পোস্ট এখন ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

তবে পরবর্তীতে ফেসবুক থেকে ওই পোস্টটি মুছে ফেলা হয়েছে। পোস্টে রিয়েলটর আনিয়া ইটিঙ্গার বলেন, মাস্টার বেডরুমে একটি কুইন সাইজ বিছানা শেয়ার করার জন্য একজন সহজ-সরল নারী খুঁজছি। আমি এর আগেও ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া এক নারীর সঙ্গে বিছানা শেয়ার করেছিলাম। আর এটা ভালোভাবেই চলছিল।

‘‘শেয়ারড বেডরুম ইন আ লেক-ফেসিং ডাউনটাউন কনডো’’ শিরোনামের ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে দেওয়া বিজ্ঞাপনে এ জন্য মাসে ৯০০ কানাডিয়ান ডলার দিতে হবে বলে জানান তিনি। এই পোস্টের বিষয়ে আনিয়ার ইটিঙ্গা বলেন, আপনি যখন মনে করেন টরন্টোর বাজার পরিস্থিতিতে খারাপ কিছু ঘটেনি। তখন এটা দেখুন, আসলে এমনই ঘটছে। এটা অত্যন্ত বিপর্যয়কর। মাসে ৯০০ কানাডিয়ান ডলারে আপনার বিছানার অর্ধেক জায়গা ভাড়া দিচ্ছেন? এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এখানে অনেক মানুষ এটা পছন্দ করবেন না।

প্রতি মাসে বিছানার ভাড়া বাবদ ওই নারী ৯০০ কানাডিয়ান ডলার দাবি করেছিলেন। পোস্টটি প্রসঙ্গে সিটিভি নিউজ টরন্টোকে আনিয়া ইটিঙ্গার বলেন, আপনি যদি ভাবেন, টরন্টোর অর্থনৈতিক অবস্থায় খারাপ কিছু ঘটেনি। তাহলে এটা দেখুন, আসলে এমটাই ঘটছে। একজন মাসে ৯০০ কানাডিয়ান ডলারে তাঁর বিছানা ভাড়া দিতে চাচ্ছেন। অনেকেই বিষয়টিকে ভালোভাবে দেখবে না। তবে সবচেয়ে খারাপ বিষয় হচ্ছে, অনেকে এটা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।

টরন্টোর আবাসন সংকটের তীব্রতা তুলে ধরে সিটিভি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে লোকজন বিভিন্ন ধরনের মন্তব্যও করছেন। একজন লিখেছেন, এই বিজ্ঞাপনটি অযৌক্তিক নয়। তবে আরও আতঙ্কের বিষয় হল, তিনি বিছানা ভাড়া দেওয়ার জন্য যেকোনও নারীকে খুঁজছেন। আর কারও কাছে মনে হচ্ছে এটাই সঠিক এবং কেউ না কেউ তা ভাড়াও নিচ্ছেন।

অন্য একজন কমেন্টে লিখেছেন, এর একটা সুবিধা হলো এটা একাকিত্ব নিরাময় করে।

টরন্টো কানাডার দ্বিতীয় সবচেয়ে ব্যয়বহুল আবাসন বাজার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টরন্টোয় একটি এক কক্ষের বাসার গড় খরচ প্রতি মাসে প্রায় ২ লাখ ৮৯ হাজার ৬৬০ টাকা (২ হাজার ৬১৪ মার্কিন ডলার)। এই অর্থ জোগাড় করতে মানুষকে অপ্রচলিত নানা উপায় অবলম্বন করতে হয়। এ কারণে শহরে বিছানা ভাড়া (হট বেডিং) দিয়ে অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে বিছানা শেয়ার করার প্রবণতা বাড়ছে।

২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি এবং মেলবোর্নে ৭ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে দেখা যায়, এই শিক্ষার্থীদের প্রায় ৩ শতাংশই ভাড়া বাঁচানোর জন্য হট বেডিং করছেন।