নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আর বিএনপি অন্তরজ্বালায় মরে। হাসিনাকে ক্ষমতায় থাকতে দেবে না। ক্ষমতা কি আপনার বাপ-দাদার? সকল ক্ষমতার মালিক আল্লাহ, সেখানে বিএনপি কিভাবে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামাবে। আওয়ামী লীগের উন্নয়নে বিএনপির অন্তরজ্বালা। বিএনপি নিজেরাই ক্ষমতায় যেতে পারে না। আবার কথা বলে বড় বড়।’
শনিবার (১২ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিব) আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, এ বছর পৃথিবীর ২২টি দেশে নির্বাচন হচ্ছে। কোথাও কোনও প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে না। শুধু বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়েই বিদেশিরা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলছে। কী অপরাধ গণতন্ত্রের, কী অপরাধ উন্নয়নের। গণতন্ত্র আছে বলেই উন্নয়নের মুখ দেখছে বাংলাদেশ। পৃথিবীর কোনও দেশেই ওয়াশিংটন হস্তক্ষেপ করতে পারে না, শুধুমাত্র বাংলাদেশেই চুন থেকে পান খসলেই ভিসা নীতির কথা বলে। বিএনপি এটার সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। দেশের উন্নয়নে তারা প্রশংসা করতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির এক দফা খাদে পড়ে মরণ যন্ত্রণায় ছটফট করছে। বিএনপির সমাবেশে নেতাকর্মীদের সংখ্যা কমে গেছে, তাদের মিছিল সমাবেশে দৈর্ঘ্য বেড়েছে, প্রস্থ কমেছে। বিএনপি জানে নির্বাচনে তাদের কী দশা হবে। আওয়ামী লীগ বিএনপিকে প্রতিপক্ষ ভাবে। আর বিএনপি আওয়ামী লীগকে শত্রু ভাবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পরাজয়ের ভয়ে বিএনপির এক দফা। তারা খাদে পড়ে মরণ যন্ত্রণায় ছটফট করছে। তারা আগুন নিয়ে খেলা করতে এলে, সেই হাত পুড়িয়ে দেওয়া হবে।
১৫ই আগস্ট কিংবা একুশে আগস্টসহ সকল হত্যাকাণ্ড এবং ষড়যন্ত্রের মাস্টারমাইন্ড জিয়া পরিবারের সদস্যরা বলেও অভিযোগ করেন সেতুমন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি জানে নির্বাচনে তাদের কী দশা হবে। এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে এ দেশের ৭০% ভাগ মানুষ ভোট শেখ হাসিনাকে দেবে।
যেকোনো সংকট কিংবা সমস্যায় শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখার প্রতি সারা দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
বিএনপি খালেদা জিয়ার জন্মদিন ৬ বার হয় কী করে এমন প্রশ্ন রাখেন ওবায়দুল কাদের। তিনি আরও বলেন, সংবিধানের কাটাছেঁড়া বা সংশোধনী করেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান।
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, পার্লামেন্ট বিলুপ্তি,শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ বিএনপির কোনো দাবি মেনে নেওয়া হবে না,সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। মন চাইলে নির্বাচনে আসবেন না হয় যা মন চায় তা করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোনো অবস্থায়ই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদ থেকে পদত্যাগ করবেন না বা সংসদও বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে না।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনের হুমকি দিয়ে লাভ নেই, খেলা হবে নির্বাচনে। খেলা হবে ভোটের মাঠে। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগও করবেন না, সংসদও বিলুপ্ত হবে না। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারও হবে না।
শত্রুতা ও নেতিবাচক রাজনীতির জন্য বিএনপিকে আজীবন বিরোধী দল হিসেবে থাকতে হবে উল্লেখ করে কাদের বলেন, ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আপনাদের আজীবন বিরোধীদলে থাকতে হবে।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, যে ইনডেমনিটি আইন পাস করে যিনি খুনীদের পুরষ্কৃত করে বিদেশি দূতাবাসে চাকরি দেয়, যে খুনীদের নিরাপদে দেশের বাইরে পাঠান রাতের অন্ধকারে। সেই জিয়াউর রহমান পঞ্চম সংশোধনী আনলেন। আজকে মির্জা আব্বাস বলে সংবিধান আমরা মানি না। এটা নাকি কাঁটাছেড়া করেছি আমরা। কাঁটাছেড়া আমরা করিনি। কাটাঁছেড়া করেছে সেনাপতিরা।
জিয়াউর রহমানকে কাঁটাছেড়ার নায়ক দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিচারপতি খায়রুল হক বিবেকের রায়ে সংবিধানকে যথাস্থানে প্রতিস্থাপন করেছেন। এখন বিএনপি বলে তা খায়রুল হকের সংবিধান। পঞ্চম সংশোধনী বাদ দেওয়া খায়রুল হকের অপরাধ?
বিএনপির উদ্দেশে বলেন, ২০১৪, ২০১৫ আর ২০২৩ সাল কিন্তু এক নয়। ফখরুল সাহেব যত লাফালাফি করেন লাভ নাই। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে আছে, থাকবে। খেলা হবে। নির্বাচনে খেলা হবে, নির্বাচনে আগুন নিয়ে খেলা হবে না। খেলা হবে ভোটাভুটিতে, জনগণের ভোটে আসল খেলা হবে।
বিএনপি তাদের সঙ্গে সহাবস্থান করার একটা রাস্তাও খোলা রাখেননি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা তোমাদের প্রতিপক্ষ ভাবি, তোমরা আমাদের শত্রু ভাব। শত্রুর সঙ্গে কিভাবে সহাবস্থান হবে?’
করোনা অতিমারির চিকৎসকদের ভূমিকার কথাও স্বীকার করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। স্বাচিপের সভাপতি জামাল উদ্দীন চৌধুরী সভায় সভাপতিত্ব করেন এবং মহাসচিব কামরুল হাসানের সঞ্চালনা করেন।