Dhaka সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্ষমতার মালাই খাওয়া জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশ্য নয় : জামায়াতের আমির

দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি : 

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ক্ষমতার মালাই খাওয়া জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশ্য নয়। সমাজের একটা গুণগত পরিবর্তন আনা আমাদের উদ্দেশ্য। এমন একটি দেশ, এমন একটি জগৎ আমরা আমাদের এখানে চাই যে দেশে জাতি দল নির্বিশেষে সমস্ত মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে। এদেশের নাগরিক হিসেবে সারাবিশ্বে মাথা উঁচু করে গর্বের সঙ্গে পরিচয় দিতে পারবে।

সোমাবার (২ সেপ্টম্বর) বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র জনতার গণঅভ্যূত্থানে নিহত রুদ্রসেন, অন্যান্য শহীদ ও আহতদের জন্য সমাবেশ ও দোয়া অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, যারা শহীদ হয়েছে, তাদের বীরের মর্যাদা দেওয়া হবে। যাতে শহীদদের পরিবার বলতে পারেন, আমাদেরও একজন শহীদ আছে। আমাদেরও একজন আবু সাইদ আছে, আমাদেরও একজন মুগ্ধ আছে, আমাদেরও একজন রুদ্রসেন আছে, আমাদেরও একজন রাহুল আছে।

তিনি আরও বলেন, যে দেশে ছাত্ররা বৈষ্যম্যবিরোধী আন্দোলন করেছে, সে দেশে সকল প্রকার বৈষম্যের কবর রচনা হোক। যে দেশে মসজিদ পাহারার প্রয়োজন হয় না, সে দেশে মন্দিরও পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। আমরা সবাই এ দেশের নাগরিক, যারা জন্মগ্রহণ করবে তারাও এই দেশের নাগরিক। কোনো বিশেষ গোষ্ঠি বৈষ্যমবিরোধী আন্দোলন করেনি। এই আন্দোলন করতে গিয়ে দেশের সোনার সন্তানেরা শহীদ হয়েছে। বুকের তাজা রক্তে ভরে উঠেছে এই দেশের রাজপথ। হাজারো প্রাণের বিনিময়ে এই সফলতা যদি কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় তাহলে এই দেশের ১৮ কোটি মানুষ তা সহ্য করবে না। আপামর জনতার আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে যদি কোনো গোষ্ঠি সুফল নিতে চায় তা হবে না। যদি কেউ এই আন্দোলনের সুফলকে ব্যবহার করতে চায় তাহলে দেশের ১৮ কোটি মানুষ তা রুখে দেবে।

জামায়াত আমীর বলেন, আমরা এমন একটা দেশ, এমন একটি জগৎ চাই, যে দেশে জাতি, দল, ধর্ম নির্বিশেষে সকল ধর্মের মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে। এ দেশের নাগরিক হিসেবে দেশে ও প্রবাসে যেখানেই যাক গর্বের সঙ্গে বলবে আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। এখানে বিশেষ বিশেষ সময়ে কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ে পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। কারণ এখানে জন্মগতভাবে সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। বাংলাদেশ একটা বৈষম্যবিহীন দেশে পরিণত হোক। আমাদেরকে নিয়ে যেন গর্ব করতে পারে এমন একটা জাতি আমরা চাই।

জামায়াতে ইসলামী দিনাজপুর উত্তর জেলা শাখার আমীর অধ্যক্ষ মো. আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলান মমতাজ উদ্দিন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল ও জাগপা কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর জেলা জামায়াতের সাবেক আমির চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন মোল্লা, জামায়াতে ইসলামী দিনাজপুর দক্ষিণ জেলা আমীর মো. আনোয়ারুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল হাকিম।

এর আগে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা থেকে দিনাজপুরে পৌঁছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ রুদ্র সেনের পাহাড়পুরস্থ বাসভবনে যান এবং তার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। এছাড়া সমাবেশস্থ আগত শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ও প্রত্যেক শহীদের পরিবারকে নগদ দুই লাখ করে টাকা প্রদান করেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ক্ষমতার মালাই খাওয়া জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশ্য নয় : জামায়াতের আমির

প্রকাশের সময় : ০২:৩৮:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি : 

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ক্ষমতার মালাই খাওয়া জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশ্য নয়। সমাজের একটা গুণগত পরিবর্তন আনা আমাদের উদ্দেশ্য। এমন একটি দেশ, এমন একটি জগৎ আমরা আমাদের এখানে চাই যে দেশে জাতি দল নির্বিশেষে সমস্ত মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে। এদেশের নাগরিক হিসেবে সারাবিশ্বে মাথা উঁচু করে গর্বের সঙ্গে পরিচয় দিতে পারবে।

সোমাবার (২ সেপ্টম্বর) বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র জনতার গণঅভ্যূত্থানে নিহত রুদ্রসেন, অন্যান্য শহীদ ও আহতদের জন্য সমাবেশ ও দোয়া অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, যারা শহীদ হয়েছে, তাদের বীরের মর্যাদা দেওয়া হবে। যাতে শহীদদের পরিবার বলতে পারেন, আমাদেরও একজন শহীদ আছে। আমাদেরও একজন আবু সাইদ আছে, আমাদেরও একজন মুগ্ধ আছে, আমাদেরও একজন রুদ্রসেন আছে, আমাদেরও একজন রাহুল আছে।

তিনি আরও বলেন, যে দেশে ছাত্ররা বৈষ্যম্যবিরোধী আন্দোলন করেছে, সে দেশে সকল প্রকার বৈষম্যের কবর রচনা হোক। যে দেশে মসজিদ পাহারার প্রয়োজন হয় না, সে দেশে মন্দিরও পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। আমরা সবাই এ দেশের নাগরিক, যারা জন্মগ্রহণ করবে তারাও এই দেশের নাগরিক। কোনো বিশেষ গোষ্ঠি বৈষ্যমবিরোধী আন্দোলন করেনি। এই আন্দোলন করতে গিয়ে দেশের সোনার সন্তানেরা শহীদ হয়েছে। বুকের তাজা রক্তে ভরে উঠেছে এই দেশের রাজপথ। হাজারো প্রাণের বিনিময়ে এই সফলতা যদি কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় তাহলে এই দেশের ১৮ কোটি মানুষ তা সহ্য করবে না। আপামর জনতার আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে যদি কোনো গোষ্ঠি সুফল নিতে চায় তা হবে না। যদি কেউ এই আন্দোলনের সুফলকে ব্যবহার করতে চায় তাহলে দেশের ১৮ কোটি মানুষ তা রুখে দেবে।

জামায়াত আমীর বলেন, আমরা এমন একটা দেশ, এমন একটি জগৎ চাই, যে দেশে জাতি, দল, ধর্ম নির্বিশেষে সকল ধর্মের মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে। এ দেশের নাগরিক হিসেবে দেশে ও প্রবাসে যেখানেই যাক গর্বের সঙ্গে বলবে আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। এখানে বিশেষ বিশেষ সময়ে কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ে পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। কারণ এখানে জন্মগতভাবে সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। বাংলাদেশ একটা বৈষম্যবিহীন দেশে পরিণত হোক। আমাদেরকে নিয়ে যেন গর্ব করতে পারে এমন একটা জাতি আমরা চাই।

জামায়াতে ইসলামী দিনাজপুর উত্তর জেলা শাখার আমীর অধ্যক্ষ মো. আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলান মমতাজ উদ্দিন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল ও জাগপা কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর জেলা জামায়াতের সাবেক আমির চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন মোল্লা, জামায়াতে ইসলামী দিনাজপুর দক্ষিণ জেলা আমীর মো. আনোয়ারুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল হাকিম।

এর আগে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা থেকে দিনাজপুরে পৌঁছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ রুদ্র সেনের পাহাড়পুরস্থ বাসভবনে যান এবং তার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। এছাড়া সমাবেশস্থ আগত শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ও প্রত্যেক শহীদের পরিবারকে নগদ দুই লাখ করে টাকা প্রদান করেন।