স্পোর্টস ডেস্ক :
খুশদিল শাহর ফুল লেংথে পিচ করা বলটা এগিয়ে এসে এক্সট্রা কভার দিয়ে তুলে মারলেন বিরাট কোহলি। ছয়ের জন্য মেরেছিলেন, হলো চার। তাতেও ক্ষতি নেই। বলটা বাউন্ডারি লাইন পার হতে হতেই হেলমেট খুলে ফেললেন কোহলি, পূর্ণ হলো ৫১তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। এরচেয়ে বড় ব্যাপার সেঞ্চুরি পূর্ণ করা এই চারেই ম্যাচ জিতেছে ভারত।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুবাইয়ের ভরপুর গ্যালারিতে পাকিস্তানের দেয়া ২৪২ রানের লক্ষ্য ৪২.৩ ওভারে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়েই টপকে গেল ভারত। একইসাথে সেমিফাইনালও নিশ্চিত প্রায়।
কোহলির দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ৪৫ বল হাতে রেখে পাওয়া এই জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে মুখোমুখি দেখায় এখন সমতায় ফিরল ভারত। এই ওয়ানডে টুর্নামেন্টে ৬ বারের দেখায় ৩টি করে ম্যাচ জিতেছে দুই দল।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেছিল রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি রোহিত। ১৫ বলে ২০ রান করে বোল্ড আউট হন এই তারকা ব্যাটার। তবে গিলকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন বিরাট কোহলি।
৫২ বলে ৪৬ রান করে গিল আউট হলেও ৬২ বলে ফিফটি তুলে নেন কোহলি। তাকে যোগ্য সঙ্গে দেন শ্রেয়াস আইয়ার। ৬৩ বলে ফিফটির দেখার পান এই তরুণ ব্যাটার। তবে ৫৬ রান করতে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে তাকে। ৬ বলে ৮ রান তাকে সঙ্গ দেন হার্দিক পান্ডিয়া।
তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে সেঞ্চুরির দ্বার প্রান্ত পৌঁছে যায় কোহলি। ৪২তম ওভার শেষে ভারতের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৪ রান, আর সেঞ্চুরি জন্য কোহলির প্রয়োজন ছিল ৫ রান। প্রথমে দুটি সিঙ্গেল নেওয়ার পর তৃতীয় বলে বাউন্ডারি হাকিয়ে দলকে জয়ে এনে দেওয়ার পাশাপাশি নিজের সেঞ্চুরি তুলে নেন কোহলি।
পাকিস্তানের হয়ে দুই উইকেট শিকার করেন হারিস রাউফ। এ ছাড়াও আবরার আহমেদ ও খুশদিল শাহ একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে দশ ওভারের মধ্যেই দুই উইকেট হারায় পাকিস্তান। সেখান থেকে শত রানের জুটিতে দলকে লড়াইয়ে ফেরান অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সৌদ শাকিল। তুলনামূলক ধীরগতির সেই জুটি ১০৪ রান পৌঁছাতেই যেন মড়ক লাগে পাকিস্তানের ব্যাটিং অর্ডারে।
যদিও শতক পেরোনো জুটির পর রিজওয়ান জীবন পেয়েছেন হার্শিতের হাতে ক্যাচ দিয়ে, তবুও সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। অক্ষর প্যাটেলের বলে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে বোল্ড হন এই ডানহাতি ব্যাটার। ৭৭ বলে ৪৬ রান করেন রিজওয়ান।
চতুর্থ ফিফটি ছোঁয়া শাকিলও জীবন পেয়েছেন অক্ষরের বলে কুলদীপ যাদবের হাতে ক্যাচ দিয়ে। তবে এই বাঁহাতি ব্যাটারও ইনিংস বেশি দূর টেনে নিতে পারেননি। হার্দিকের বলে পুল করে অক্ষরের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন তিনি। এর আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৭৬ বলে ৬২ রান।
মিডল অর্ডার ব্যাটাররাও সুবিধা করতে পারেননি। তৈয়ব তাহির বোল্ড হয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজার সোজা বলে। সালমান আঘা আউট হয়েছেন কুলদীপকে তুলে মারতে গিয়ে। পরের বলেই এলবিডব্লিউ হন শাহীন শাহ আফ্রিদি। যদিও হ্যাট্ট্রিকের সুযোগ থাকার পরেও সেটা করতে পারেননি কুলদীপ। বলটা ঠেকিয়ে দেন নাসিম শাহ।
শেষদিকে লড়াই যা করেছেন এক খুশদিল শাহই। হার্শিতের বলে কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে দুই ছক্কায় ৩৯ বলে ৩৮ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন কুলদীপ, হার্দিকের শিকার দুটি।