Dhaka বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোনো চাপের কাছে নির্বাচন কমিশন নতি স্বীকার করবে না : সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচন কমিশনও কারও কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন।

বুধবার (২২ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি ইউএনওদের বলেন, কোনো প্রেশারের কাছে নতি স্বীকার করবেন না, কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। সম্পূর্ণভাবে নিজের সিদ্ধান্তে আইন অনুযায়ী অটল থাকবেন। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব। নির্বাচন কমিশনও কারও কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। সুতরাং আমরা আপনাদের অন্যায় কোনো আদেশ দেব না। অন্যায় কোনো হুকুম দেব না। এটা আপনারা ধরে রাখতে পারেন যে আইন অনুযায়ী আমাদের নির্দেশনা যাবে বা আপনারা সেটা সেভাবে পালন করবেন।

নির্বাচনে সব কটি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের কাজটি ইউএনওদের গুরুত্বের সঙ্গে করতে হবে বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, কোনো সংকট দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে নিরসনের চেষ্টা করতে হবে। ঘটনা শেষ হয়ে যাওয়ার পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হবে না। কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার করা যাবে না। আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্তে অটল থাকতে হবে।

নাসির উদ্দীন বলেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশনও কারও চাপের কাছে নত হবে না। প্রচলিত আইন মেনেই নির্বাচন কমিশন সব নির্দেশনা দেবে।

তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনে সময় কর্মকর্তাদের অন্যায় কোনো আদেশ দেব না বা অন্যায় কোনো হুকুম দেব না। আমাদের নির্দেশনা যা যাবে আপনারা সেটা সেভাবে পালন করবেন।

সিইসি বলেন, আপনারা ন্যায়ভাবে আইনসম্মতভাবে নিউট্রালি প্রফেশনালি কাজ করবেন বা পালন করবেন। আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। আমাদের দেশের যে এই দুরবস্থা এর একটা মূল কারণ হলো আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি যে আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নই। যে জাতি আইনের প্রতি যতটা শ্রদ্ধাশীল সেই জাতি তত সভ্য বলে আমরা মনে করি। সভ্য দুনিয়া কিন্তু আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে। আমাদের এই কালচারটা কাল্টিভেট করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা রুল রুল অফ ল চাই। আমরা চাই সর্বস্তরের সবাই আইন মেনে চলবো আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবো এবং আইনকে এস্টাবলিশ করব সর্বক্ষেত্রে এবং আমার গন্ডির মধ্যে যে কাজ থাকবে সেখানে আমি আইনকেই বাস্তবায়ন করব। আমরা চাইবো আপনারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের মধ্যে সমন্বয়টা একটা বড় জিনিস। তা আপনারা যেহেতু উপজেলা পর্যায়ে নিয়োজিত আছেন এবং সমন্বয়ের দায়িত্বটা মূলত আপনাদের ওপরে নির্ভর করে। যারা ইউএনও আছেন উপজেলা পর্যায়ে সমন্বয়টা আপনারাই করে থাকেন। সুতরাং নির্বাচনের সময়ও এ সমন্বয়টা খুবই জরুরি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় আমাদের প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে সমন্বয়, পুলিশ অফিসারের সঙ্গে সমন্বয়, আমাদের কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের সঙ্গে সমন্বয়, জেলার যে মনিটরিং সেল থাকবে ইলেকশন মনিটরিং সেল থাকবে, ওর সাথে সমন্বয়; এ সার্বিক সমন্বয়টা আপনাদের খুব সিরিয়াসলি পার করতে হবে। এটার দায়িত্ব আপনাদের নিজের কাধে নিতে হবে যেকোনো ক্রাইসিস হলে প্লিজ ট্রাই টু এড্রেস ক্রাইসিস… শুরুতেই যাতে এটা ট্যাকেল করা যায়, সেই চেষ্টা আপনারা নিবেন।

সিইসি বলেন, আমাদের ব্রিগেডিয়ার সাহেব নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন যে- ওই মোবাইল ম্যাজিস্ট্রেসি, অনেক সময় তারা যায় এভিথিং ইজ ওভার, সবকিছু শেষ হওয়ার পরে। তখন দেখবেন যে আর কেউ নাই। সবাই মারামারি করে ভোটের কেন্দ্র দখল করে বাক্স দখল করে বাড়ি চলে গেছে। আর আপনি গিয়ে হাজির হলেন সেটা যাতে না হয় এটা আপনাদের এনসিওর করতে হবে।

কোনো ক্রাইসিস বা সংকট দেখা দিলে তা শুরুতেই মোকাবিলা করার জন্য তিনি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। সিইসি বলেন, যেকোনো ক্রাইসিস হলে প্লিজ ট্রাই টু অ্যাড্রেস ক্রাইসিস অ্যান্ড মিট ইন দা বার্ড। শুরুতেই যাতে এটা ট্যাকেল করা যায় সেই চেষ্টা আপনারা নেবেন। ঘটনার পর নয়, বরং যথাসময়ে উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালনের গুরুত্ব দেন তিনি।

প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, ট্রেনিংটা কিন্তু একদম পুরা ক্যারিয়ারব্যাপী চলে, মানুষের শেখার কিন্তু শেষ নাই। এই প্রশিক্ষণকে গুরুত্ব সহকারে নিয়ে এখান থেকে অর্জিত জ্ঞান অন্যদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

আরপিও সংশোধনের পর ম্যানুয়াল আপডেট হলে প্রয়োজনীয় সংযোজন করা হবে বলেও জানান সিইসি। এছাড়াও, প্রশিক্ষণে কোনো গ্যাপ থাকলে বা কোনো টপিক বাদ পড়ে গেলে, অনলাইনে কানেক্ট করে সেই গ্যাপ পূরণ করে দেওয়া হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, তাহমিদা আহমদ ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ। স্বাগত বক্তব্য দেন নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রাজধানীতে ৬ হাজার পিস ইয়াবাসহ তিন মাদক কারবারি গ্রেফতার

কোনো চাপের কাছে নির্বাচন কমিশন নতি স্বীকার করবে না : সিইসি

প্রকাশের সময় : ১২:৪৮:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

‎নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচন কমিশনও কারও কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন।

বুধবার (২২ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি ইউএনওদের বলেন, কোনো প্রেশারের কাছে নতি স্বীকার করবেন না, কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। সম্পূর্ণভাবে নিজের সিদ্ধান্তে আইন অনুযায়ী অটল থাকবেন। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব। নির্বাচন কমিশনও কারও কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। সুতরাং আমরা আপনাদের অন্যায় কোনো আদেশ দেব না। অন্যায় কোনো হুকুম দেব না। এটা আপনারা ধরে রাখতে পারেন যে আইন অনুযায়ী আমাদের নির্দেশনা যাবে বা আপনারা সেটা সেভাবে পালন করবেন।

নির্বাচনে সব কটি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের কাজটি ইউএনওদের গুরুত্বের সঙ্গে করতে হবে বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, কোনো সংকট দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে নিরসনের চেষ্টা করতে হবে। ঘটনা শেষ হয়ে যাওয়ার পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হবে না। কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার করা যাবে না। আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্তে অটল থাকতে হবে।

নাসির উদ্দীন বলেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশনও কারও চাপের কাছে নত হবে না। প্রচলিত আইন মেনেই নির্বাচন কমিশন সব নির্দেশনা দেবে।

তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনে সময় কর্মকর্তাদের অন্যায় কোনো আদেশ দেব না বা অন্যায় কোনো হুকুম দেব না। আমাদের নির্দেশনা যা যাবে আপনারা সেটা সেভাবে পালন করবেন।

সিইসি বলেন, আপনারা ন্যায়ভাবে আইনসম্মতভাবে নিউট্রালি প্রফেশনালি কাজ করবেন বা পালন করবেন। আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। আমাদের দেশের যে এই দুরবস্থা এর একটা মূল কারণ হলো আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি যে আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নই। যে জাতি আইনের প্রতি যতটা শ্রদ্ধাশীল সেই জাতি তত সভ্য বলে আমরা মনে করি। সভ্য দুনিয়া কিন্তু আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে। আমাদের এই কালচারটা কাল্টিভেট করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা রুল রুল অফ ল চাই। আমরা চাই সর্বস্তরের সবাই আইন মেনে চলবো আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবো এবং আইনকে এস্টাবলিশ করব সর্বক্ষেত্রে এবং আমার গন্ডির মধ্যে যে কাজ থাকবে সেখানে আমি আইনকেই বাস্তবায়ন করব। আমরা চাইবো আপনারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের মধ্যে সমন্বয়টা একটা বড় জিনিস। তা আপনারা যেহেতু উপজেলা পর্যায়ে নিয়োজিত আছেন এবং সমন্বয়ের দায়িত্বটা মূলত আপনাদের ওপরে নির্ভর করে। যারা ইউএনও আছেন উপজেলা পর্যায়ে সমন্বয়টা আপনারাই করে থাকেন। সুতরাং নির্বাচনের সময়ও এ সমন্বয়টা খুবই জরুরি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় আমাদের প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে সমন্বয়, পুলিশ অফিসারের সঙ্গে সমন্বয়, আমাদের কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের সঙ্গে সমন্বয়, জেলার যে মনিটরিং সেল থাকবে ইলেকশন মনিটরিং সেল থাকবে, ওর সাথে সমন্বয়; এ সার্বিক সমন্বয়টা আপনাদের খুব সিরিয়াসলি পার করতে হবে। এটার দায়িত্ব আপনাদের নিজের কাধে নিতে হবে যেকোনো ক্রাইসিস হলে প্লিজ ট্রাই টু এড্রেস ক্রাইসিস… শুরুতেই যাতে এটা ট্যাকেল করা যায়, সেই চেষ্টা আপনারা নিবেন।

সিইসি বলেন, আমাদের ব্রিগেডিয়ার সাহেব নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন যে- ওই মোবাইল ম্যাজিস্ট্রেসি, অনেক সময় তারা যায় এভিথিং ইজ ওভার, সবকিছু শেষ হওয়ার পরে। তখন দেখবেন যে আর কেউ নাই। সবাই মারামারি করে ভোটের কেন্দ্র দখল করে বাক্স দখল করে বাড়ি চলে গেছে। আর আপনি গিয়ে হাজির হলেন সেটা যাতে না হয় এটা আপনাদের এনসিওর করতে হবে।

কোনো ক্রাইসিস বা সংকট দেখা দিলে তা শুরুতেই মোকাবিলা করার জন্য তিনি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। সিইসি বলেন, যেকোনো ক্রাইসিস হলে প্লিজ ট্রাই টু অ্যাড্রেস ক্রাইসিস অ্যান্ড মিট ইন দা বার্ড। শুরুতেই যাতে এটা ট্যাকেল করা যায় সেই চেষ্টা আপনারা নেবেন। ঘটনার পর নয়, বরং যথাসময়ে উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালনের গুরুত্ব দেন তিনি।

প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, ট্রেনিংটা কিন্তু একদম পুরা ক্যারিয়ারব্যাপী চলে, মানুষের শেখার কিন্তু শেষ নাই। এই প্রশিক্ষণকে গুরুত্ব সহকারে নিয়ে এখান থেকে অর্জিত জ্ঞান অন্যদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

আরপিও সংশোধনের পর ম্যানুয়াল আপডেট হলে প্রয়োজনীয় সংযোজন করা হবে বলেও জানান সিইসি। এছাড়াও, প্রশিক্ষণে কোনো গ্যাপ থাকলে বা কোনো টপিক বাদ পড়ে গেলে, অনলাইনে কানেক্ট করে সেই গ্যাপ পূরণ করে দেওয়া হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, তাহমিদা আহমদ ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ। স্বাগত বক্তব্য দেন নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।