Dhaka সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোনোভাবে যদি আমরা ব্যর্থ হই কারোই অস্তিত্ব খুনি হাসিনা রাখবে না : সারজিস আলম

ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি : 

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, খুনি হাসিনা ও তার দোসররা সবদিক দিয়ে চেষ্টা করছে আমরা যেন সফল না হই। কোনোভাবে যদি আমরা ব্যর্থ হই কারোই অস্তিত্ব খুনি হাসিনা রাখবে না। প্রশাসনের মধ্যে যারা জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। বর্তমান প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহে নগরীর তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ ময়মনসিংহ বিভাগের ৫৫ শহীদ পরিবারের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, এমন অনেক শহীদ পরিবার রয়েছে যাদের দাফন করতে দেওয়া হয় নাই। তাদের বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয় নাই। তাদের হয়রানি করা হয়েছে। এখন যদি খুনি হাসিনা আসে এখনই একই কাজ করা হবে। সেই জায়গা থেকে আমাদের দায়িত্ব যে স্বপ্ন নিয়ে যে স্পিরিট নিয়ে অভ্যুত্থান হয়েছে তা রক্ষা করা।

পুলিশ প্রশাসন, জেলা ও বিভাগীয় প্রশানের কাছে অনুরোধ করে তিনি বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে সরকারের যেমন গঠনমূলক সমালোচনা করব, একইভাবে আমরা প্রশাসন থেকে শুরু করে সবার কাজে সহযোগিতা করব। যারা এই অভ্যুত্থানের রক্তাক্ত হত্যাযজ্ঞে জড়িত ছিল, যাদের ভিডিও ফুটেজ, ছবি ক্লিয়ার ডকুমেন্ট রয়েছে সে যে পরিচয়েরই হোক না কেন তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমরা যদি মনে করি, সে ছাত্রলীগ যুবলীগ আওয়ামী লীগের নেতা বা সে পুলিশের সদস্য, অথচ সে সরাসরি হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত ছিল এবং তার ছবি-ভিডিও ও ডকুমেন্ট আছে, তারপরও কিছু করাটা রিস্কি, তাহলে আমরা মনে করি, আপনারা আমাদের এই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করেন না। আপনি তাহলে এই দায়িত্ব ছেড়ে অন্য জায়গায় যেতে পারেন। এটা শুধু আমাদের নয়, এখন যারা প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করছে এটা তাদের অস্তিত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

তিনি অনুরোধ করে বলেন, যাদের বিরুদ্ধে ডকুমেন্টস আছে তাদের বিচারিক পক্রিয়ায় যেন বিন্দুমাত্র দয়া দেখানো না হয়। এটা যদি করা হয় বা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যদি করা শুরু করে তাহলে একসময় দেখা যাবে কোনো বিচারই হচ্ছে না। মিশরে যেটা হয়েছিল যে অসংখ্য স্বপ্ন দেখানোর পর সরকার আসল। এরপর একবছর পরে সে সরকার আর টিকল না। নতুন করে সামরিক শাসনের কাছে গেল। দেশি-বিদেশি চক্রান্ত শুরু হলো। আমাদের কঠোর ব্যবস্থা প্রত্যেকের জায়গা থেকে পূরণ করতে হবে। বর্তমানে সে কনস্টেবল তাকে তার দায়িত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। যিনি বিভাগীয় কমিশনার তাকেও তার দায়িত্ব থেকে পুরো দায়িত্ব পালন করতে হবে।

সারজিস বলেন, আমরা যদি বেঁচে থাকি, আমরা কোনো শহীদ পরিবার বা আহত যোদ্ধার গায়ে একটা আচর পর্যন্ত লাগতে দেব না। আমরা যদি বেঁচে থাকি কোনো শহিদ পরিবার বা আহত কোনো ভাইকে দুর্দশাগ্রস্ত জীবন অতিবাহিত করতে হবে না। উৎস: কালের কণ্ঠ ও এখন।

তিনি আরও বলেন, আজকে যারা পদ পেয়েছেন তা আমাদের আন্দোলনের জন্য। আর আপনারা যদি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেন তাহলে আপনাদের পদে থাকার প্রয়োজন নেই। আপনাদের মধ্যে যারা অন্যায় করেছে তাদের বিচার আপনাদেরই করতে হবে। শকুনদের খারাপ নজর চক্রান্ত শেষ হয়নি, আমরা যদি বেঁচে থাকি তাহলে আমাদের জীবনের বিনিময়ে হলেও শহীদ পরিবারের পাশে থাকব। তাদের শরীরে বিন্দু পরিমাণ আঁচ লাগতেও দেব না।

সারজিস বলেন, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে আহত এবং শহীদদের সঠিক তথ্য প্রয়োজন। আপনারা সেই তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন। কারণ হচ্ছে খুনি হাসিনা সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মাত্র দুই কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে জেল খাটিয়েছেন। আমরা আমাদের ফাউন্ডেশনের হিসেব সঠিক না রাখলে ২০ বছর পরেও যদি খুনি শেখ হাসিনার দোসররা ক্ষমতায় আসে তাহলে এই কারণে আমাদের জেলে যেতে হবে। তাই এটিকে একটি শক্তিশালী স্বচ্ছ ফাউন্ডেশন করতে চাই।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মুগ্ধ, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. ইউসুফ আলী, জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলম প্রমূখ।

 

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কোনোভাবে যদি আমরা ব্যর্থ হই কারোই অস্তিত্ব খুনি হাসিনা রাখবে না : সারজিস আলম

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৮:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি : 

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, খুনি হাসিনা ও তার দোসররা সবদিক দিয়ে চেষ্টা করছে আমরা যেন সফল না হই। কোনোভাবে যদি আমরা ব্যর্থ হই কারোই অস্তিত্ব খুনি হাসিনা রাখবে না। প্রশাসনের মধ্যে যারা জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। বর্তমান প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহে নগরীর তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ ময়মনসিংহ বিভাগের ৫৫ শহীদ পরিবারের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, এমন অনেক শহীদ পরিবার রয়েছে যাদের দাফন করতে দেওয়া হয় নাই। তাদের বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয় নাই। তাদের হয়রানি করা হয়েছে। এখন যদি খুনি হাসিনা আসে এখনই একই কাজ করা হবে। সেই জায়গা থেকে আমাদের দায়িত্ব যে স্বপ্ন নিয়ে যে স্পিরিট নিয়ে অভ্যুত্থান হয়েছে তা রক্ষা করা।

পুলিশ প্রশাসন, জেলা ও বিভাগীয় প্রশানের কাছে অনুরোধ করে তিনি বলেন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে সরকারের যেমন গঠনমূলক সমালোচনা করব, একইভাবে আমরা প্রশাসন থেকে শুরু করে সবার কাজে সহযোগিতা করব। যারা এই অভ্যুত্থানের রক্তাক্ত হত্যাযজ্ঞে জড়িত ছিল, যাদের ভিডিও ফুটেজ, ছবি ক্লিয়ার ডকুমেন্ট রয়েছে সে যে পরিচয়েরই হোক না কেন তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমরা যদি মনে করি, সে ছাত্রলীগ যুবলীগ আওয়ামী লীগের নেতা বা সে পুলিশের সদস্য, অথচ সে সরাসরি হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত ছিল এবং তার ছবি-ভিডিও ও ডকুমেন্ট আছে, তারপরও কিছু করাটা রিস্কি, তাহলে আমরা মনে করি, আপনারা আমাদের এই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করেন না। আপনি তাহলে এই দায়িত্ব ছেড়ে অন্য জায়গায় যেতে পারেন। এটা শুধু আমাদের নয়, এখন যারা প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করছে এটা তাদের অস্তিত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

তিনি অনুরোধ করে বলেন, যাদের বিরুদ্ধে ডকুমেন্টস আছে তাদের বিচারিক পক্রিয়ায় যেন বিন্দুমাত্র দয়া দেখানো না হয়। এটা যদি করা হয় বা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যদি করা শুরু করে তাহলে একসময় দেখা যাবে কোনো বিচারই হচ্ছে না। মিশরে যেটা হয়েছিল যে অসংখ্য স্বপ্ন দেখানোর পর সরকার আসল। এরপর একবছর পরে সে সরকার আর টিকল না। নতুন করে সামরিক শাসনের কাছে গেল। দেশি-বিদেশি চক্রান্ত শুরু হলো। আমাদের কঠোর ব্যবস্থা প্রত্যেকের জায়গা থেকে পূরণ করতে হবে। বর্তমানে সে কনস্টেবল তাকে তার দায়িত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। যিনি বিভাগীয় কমিশনার তাকেও তার দায়িত্ব থেকে পুরো দায়িত্ব পালন করতে হবে।

সারজিস বলেন, আমরা যদি বেঁচে থাকি, আমরা কোনো শহীদ পরিবার বা আহত যোদ্ধার গায়ে একটা আচর পর্যন্ত লাগতে দেব না। আমরা যদি বেঁচে থাকি কোনো শহিদ পরিবার বা আহত কোনো ভাইকে দুর্দশাগ্রস্ত জীবন অতিবাহিত করতে হবে না। উৎস: কালের কণ্ঠ ও এখন।

তিনি আরও বলেন, আজকে যারা পদ পেয়েছেন তা আমাদের আন্দোলনের জন্য। আর আপনারা যদি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেন তাহলে আপনাদের পদে থাকার প্রয়োজন নেই। আপনাদের মধ্যে যারা অন্যায় করেছে তাদের বিচার আপনাদেরই করতে হবে। শকুনদের খারাপ নজর চক্রান্ত শেষ হয়নি, আমরা যদি বেঁচে থাকি তাহলে আমাদের জীবনের বিনিময়ে হলেও শহীদ পরিবারের পাশে থাকব। তাদের শরীরে বিন্দু পরিমাণ আঁচ লাগতেও দেব না।

সারজিস বলেন, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে আহত এবং শহীদদের সঠিক তথ্য প্রয়োজন। আপনারা সেই তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন। কারণ হচ্ছে খুনি হাসিনা সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মাত্র দুই কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে জেল খাটিয়েছেন। আমরা আমাদের ফাউন্ডেশনের হিসেব সঠিক না রাখলে ২০ বছর পরেও যদি খুনি শেখ হাসিনার দোসররা ক্ষমতায় আসে তাহলে এই কারণে আমাদের জেলে যেতে হবে। তাই এটিকে একটি শক্তিশালী স্বচ্ছ ফাউন্ডেশন করতে চাই।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মুগ্ধ, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. ইউসুফ আলী, জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলম প্রমূখ।