Dhaka বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুষ্টিয়ায় মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি : 

কুষ্টিয়া আদালত চত্বরে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুর একটার দিকে মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (৭৭), সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (৭৪), কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ (৬৫), কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু (৭৭), পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী (৬৩), কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার এস.এম মেহেদী হাসানকে নির্দেশদাতা হিসেবে আসামি করা হয়েছে।

অন্য আসামিরা হলেন- কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, কুষ্টিয়া সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন, কুষ্টিয়া আদালতের সাবেক কোর্ট ইন্সপেক্টর মনিরুজ্জামান, কুষ্টিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইয়াছির আরাফাত তুষার, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ, রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, সজীব শেখ, রেদওয়ান রনি, হাসিবুল ইসলাম সুইট, লাম, শশী, রাকিব, জয়নাল আবেদীন, রবিউল ইসলাম, জিয়াউল ইসলাম স্বপন, আবু তৈয়ব বাদশা, মীর অভি, শিমুল, মাহমুদ হাসান, জীবন মাহমুদ ডাবলু, হাসিব কোরাইশী, অভি, ফেরদৌস খন্দকার, সোহাগ, সাদ্দাম হোসেন, রাসেল , আতিকুর রহমান অনিক, শামিম রুমী, সবুজ, ফিরোজ কায়সার, ইমরান হোসেন দোলন, অনুপ কুমার নন্দী (সাবেক পিপি), মানব চাকি, ইমরান পারভেজ রাসেল, রাকিব আহাম্মেদ, সজিব আহাম্মদ, বাধন, মাখন, সুজন, অনন্ত।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে ।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২২ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়ার একটি আদালত থেকে মানহানির মামলায় জামিন নিয়ে বের হওয়ার সময় মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা হয়। আদালত প্রাঙ্গণ ছাড়ার সময় লাঠি ও ইটের আঘাতে তিনি আহত হন। তাকে বহনকারী গাড়ির গ্লাসও ভেঙে ফেলা হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাহমুদুর রহমান ও তার সহযোগীরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার মামলাটি করেন। ওই মামলায় জামিন নিতে কুষ্টিয়া আদালতে গিয়েছিলেন তিনি।

সেদিন কুষ্টিয়ায় দায়ের হওয়া মানহানির মামলায় মাহমুদুর রহমানের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এম এম মোর্শেদ ১০ হাজার টাকা জামানতে স্থায়ীভাবে তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পাওয়ার পর দুপুর ১টা থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং বিক্ষোভ মিছিল করেন।

জামিন মঞ্জুর করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার ওপর হামলা চালানো হয়। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আগে থেকে আদালত চত্বরে অবস্থান নেন। জামিন মঞ্জুরের পর তারা মাহমুদুর রহমানকে আদালতের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। একপর্যায়ে সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি নিজের গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এতে রক্তাক্ত হন মাহমুদুর রহমান।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আমতলী-তালতলী আঞ্চলিক সড়ক বেহাল, দুর্ভোগে স্থানীয়রা

কুষ্টিয়ায় মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশের সময় : ০৮:৪৬:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি : 

কুষ্টিয়া আদালত চত্বরে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুর একটার দিকে মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (৭৭), সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (৭৪), কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ (৬৫), কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু (৭৭), পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী (৬৩), কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার এস.এম মেহেদী হাসানকে নির্দেশদাতা হিসেবে আসামি করা হয়েছে।

অন্য আসামিরা হলেন- কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, কুষ্টিয়া সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন, কুষ্টিয়া আদালতের সাবেক কোর্ট ইন্সপেক্টর মনিরুজ্জামান, কুষ্টিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইয়াছির আরাফাত তুষার, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ, রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, সজীব শেখ, রেদওয়ান রনি, হাসিবুল ইসলাম সুইট, লাম, শশী, রাকিব, জয়নাল আবেদীন, রবিউল ইসলাম, জিয়াউল ইসলাম স্বপন, আবু তৈয়ব বাদশা, মীর অভি, শিমুল, মাহমুদ হাসান, জীবন মাহমুদ ডাবলু, হাসিব কোরাইশী, অভি, ফেরদৌস খন্দকার, সোহাগ, সাদ্দাম হোসেন, রাসেল , আতিকুর রহমান অনিক, শামিম রুমী, সবুজ, ফিরোজ কায়সার, ইমরান হোসেন দোলন, অনুপ কুমার নন্দী (সাবেক পিপি), মানব চাকি, ইমরান পারভেজ রাসেল, রাকিব আহাম্মেদ, সজিব আহাম্মদ, বাধন, মাখন, সুজন, অনন্ত।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে ।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২২ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়ার একটি আদালত থেকে মানহানির মামলায় জামিন নিয়ে বের হওয়ার সময় মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা হয়। আদালত প্রাঙ্গণ ছাড়ার সময় লাঠি ও ইটের আঘাতে তিনি আহত হন। তাকে বহনকারী গাড়ির গ্লাসও ভেঙে ফেলা হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাহমুদুর রহমান ও তার সহযোগীরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার মামলাটি করেন। ওই মামলায় জামিন নিতে কুষ্টিয়া আদালতে গিয়েছিলেন তিনি।

সেদিন কুষ্টিয়ায় দায়ের হওয়া মানহানির মামলায় মাহমুদুর রহমানের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এম এম মোর্শেদ ১০ হাজার টাকা জামানতে স্থায়ীভাবে তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পাওয়ার পর দুপুর ১টা থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং বিক্ষোভ মিছিল করেন।

জামিন মঞ্জুর করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার ওপর হামলা চালানো হয়। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আগে থেকে আদালত চত্বরে অবস্থান নেন। জামিন মঞ্জুরের পর তারা মাহমুদুর রহমানকে আদালতের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। একপর্যায়ে সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি নিজের গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এতে রক্তাক্ত হন মাহমুদুর রহমান।