Dhaka শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার ঘটনায় আটক ৫

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করার ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। পরে দুপুরে তাদেরকে সিআরপিসির ৫৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আক্তার উজ জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আটককৃতরা হলেন- উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা গ্রামের মজুমদার বাড়ির আব্দুল হক মজুমদারের ছেলে ইসমাইল হোসেন মজুমদার (৪৩), একই এলাকার মৃত সুলতান আহম্মেদ মজুমদারের ছেলে জামাল উদ্দিন মজুমদার (৫৮), কুলিয়ারা ভূঁইয়া বাড়ির মৃত এছাক ভূঁইয়ার ছেলে ইলিয়াছ ভূঁইয়া (৫৮), নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট উত্তর ইউনিয়নের রায়কোট গ্রামের মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে, কুলিয়ারা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম আবুল কালাম আজাদ (৪৮) এবং চাঁদপুর জেলার সদর থানার মইশাদী গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে ইমতিয়াজ আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ (১৯)।

রোববার আবদুল হাই কানুর গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে সারা গ্রাম ঘুরিয়ে লাঞ্ছিত করে একদল লোক। তারা ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। সন্ধ্যার পর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়।

এক মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, দুই ব্যক্তি জুতার মালা পরা অবস্থায় কানুকে টানাহেঁচড়া করছেন। এ সময় কানু বারবার তাকে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানাচ্ছিলেন।

কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুল হাই কানু সংগঠনের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা কমিটির সাবেক সহসভাপতি। তিনি ঘটনাস্থলের পাশের লুদিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা।

এ ঘটনার জন্য মুক্তিযোদ্ধা কানুর পরিবার স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর সদস্যদের দায়ী করলেও দলটি নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে। অবশ্য সোমবার দলটি তাদের দুই সমর্থককে বহিষ্কার করার কথা জানায়।

যাদের আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে জামায়াত থেতে বহিষ্কৃত দুই সমর্থক আবুল হাশেম ও অহিদুর রহমান নেই।

তবে আটক ইমতিয়াজ আবদুল্লাহ সাজ্জাদ বহিষ্কৃত জামায়াত সমর্থক আবুল হাশেমের ভাগনে।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি আক্তার উজ জামান বলেন, ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর প্রধান দুই অভিযুক্ত আত্মগোপনে চলে যান। যার কারণে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশ মোতাবেক ভিডিও দেখে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ওসি দাবি করেন, “ঘটনার পর আমরা তাৎক্ষণিক ভিডিও ফুটেজ দেখে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি বাড়িতে না থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরে জানতে পারি, তিনি নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুর সঙ্গে যোগাযোগ করে অপ্রীতিকর ঘটনার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। এ ছাড়া ঘটনায় জড়িতদের সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু।”

তিনি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা আজকে মামলা দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি মামলা করলে আটকদের ওই মামলা গ্রেপ্তার দেখানো হবে।”

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

দেশে যেন উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে না পারে : তারেক রহমান

কুমিল্লায় মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার ঘটনায় আটক ৫

প্রকাশের সময় : ১০:৫৩:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করার ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। পরে দুপুরে তাদেরকে সিআরপিসির ৫৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আক্তার উজ জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আটককৃতরা হলেন- উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা গ্রামের মজুমদার বাড়ির আব্দুল হক মজুমদারের ছেলে ইসমাইল হোসেন মজুমদার (৪৩), একই এলাকার মৃত সুলতান আহম্মেদ মজুমদারের ছেলে জামাল উদ্দিন মজুমদার (৫৮), কুলিয়ারা ভূঁইয়া বাড়ির মৃত এছাক ভূঁইয়ার ছেলে ইলিয়াছ ভূঁইয়া (৫৮), নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট উত্তর ইউনিয়নের রায়কোট গ্রামের মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে, কুলিয়ারা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম আবুল কালাম আজাদ (৪৮) এবং চাঁদপুর জেলার সদর থানার মইশাদী গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে ইমতিয়াজ আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ (১৯)।

রোববার আবদুল হাই কানুর গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে সারা গ্রাম ঘুরিয়ে লাঞ্ছিত করে একদল লোক। তারা ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। সন্ধ্যার পর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়।

এক মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, দুই ব্যক্তি জুতার মালা পরা অবস্থায় কানুকে টানাহেঁচড়া করছেন। এ সময় কানু বারবার তাকে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানাচ্ছিলেন।

কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুল হাই কানু সংগঠনের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা কমিটির সাবেক সহসভাপতি। তিনি ঘটনাস্থলের পাশের লুদিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা।

এ ঘটনার জন্য মুক্তিযোদ্ধা কানুর পরিবার স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর সদস্যদের দায়ী করলেও দলটি নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে। অবশ্য সোমবার দলটি তাদের দুই সমর্থককে বহিষ্কার করার কথা জানায়।

যাদের আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে জামায়াত থেতে বহিষ্কৃত দুই সমর্থক আবুল হাশেম ও অহিদুর রহমান নেই।

তবে আটক ইমতিয়াজ আবদুল্লাহ সাজ্জাদ বহিষ্কৃত জামায়াত সমর্থক আবুল হাশেমের ভাগনে।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি আক্তার উজ জামান বলেন, ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর প্রধান দুই অভিযুক্ত আত্মগোপনে চলে যান। যার কারণে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশ মোতাবেক ভিডিও দেখে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ওসি দাবি করেন, “ঘটনার পর আমরা তাৎক্ষণিক ভিডিও ফুটেজ দেখে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি বাড়িতে না থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরে জানতে পারি, তিনি নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুর সঙ্গে যোগাযোগ করে অপ্রীতিকর ঘটনার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। এ ছাড়া ঘটনায় জড়িতদের সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু।”

তিনি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা আজকে মামলা দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি মামলা করলে আটকদের ওই মামলা গ্রেপ্তার দেখানো হবে।”