কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি :
কুমিল্লা নগরের কালিয়াজুড়ি এলাকা থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থী ও তার মায়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন ১৬তম ব্যাচের সুমাইয়া আফরিন (২৪)। পুলিশ ধারণা করছে, এটি ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে নগরের কালিয়াজুড়ি খেলার মাঠের পাশের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে কখন তারা মারা গেছেন বা তাদের কেউ হত্যা করেছে কি না, এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
নিহতরা হলেন- কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকার বাসিন্দা ও কুমিল্লা আদালতের সাবেক হিসাবরক্ষক মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী তাহমিনা বেগম (৪৫) এবং তার মেয়ে সুমাইয়া আরফিন (২৩)।
পুলিশ জানায়, গত রাত ১টার দিকে সুমাইয়ার বড় ভাই জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দেন। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং সকালে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়।
বাড়ির মালিক আনিসুল ইসলাম রানা জানান, সাড়ে তিন থেকে চার বছর আগে কুমিল্লা আদালতের কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বাড়িটি ভাড়া নেন। গত বছর তার মৃত্যুর পর স্ত্রী তাহমিনা আক্তার (৫০), মেয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিনসহ তার আরও দুই ছেলে বাড়িটিতে থাকছেন।
তিনি আরও জানান, তারা অন্য কারও সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না। গতকাল রাতে তার দুই ছেলে ঢাকা থেকে বাসায় আসলে তারা ঘরের দরজা খোলা দেখেন। এই সময় তারা ভাবেন তাদের মা ও বোন ঘুমিয়ে আছে। কিন্তু বাসায় ঢোকার পর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও তাদের কোনও সাড়াশব্দ না পেলে জাগাতে গিয়ে দেখেন তারা নড়ছেন না। পরে ৯৯৯-এ কল পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠায়।
তাহমিনার বড় ছেলে মো. তাজুল ইসলাম ফয়সাল জানান, আমরা দুই ভাই, এক বোন। ছোট ভাই কুমিল্লা ইপিজেডে চাকরি করে। আমি ঢাকায় আইন পেশায় নিযুক্ত। রোববার ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে নিজের ঘরে যাই। আমার ভাইও বাসায় ফিরে নিজের রুমে বিশ্রাম নিচ্ছিল। আমরা মাকে বারবার ডেকেও সাড়া না পেয়ে মায়ের রুমে যাই। সেখানে গিয়ে মায়ের নিথর দেহ দেখতে পাই। পরে বোনের কক্ষে গিয়ে বোনেরও লাশ দেখতে পাই। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে তাদের লাশ উদ্ধার করে। দুর্বৃত্তরা তার মা ও বোনকে হত্যা করে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কানের দুল নিয়ে গেছেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, মরদেহ দুটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। বিষয়টি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মরদেহ দুইটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।