কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় একটি সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তিন ইউনিয়নের ৩০ গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে সেতুর জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি অর্থবছরে কাজ শুরু হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, দেশ স্বাধীনের পর থেকে অনেক জনপ্রতিনিধির পালাবদল হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি ব্রহ্মপুত্র নদ বিচ্ছিন্ন উপজেলা রৌমারীর দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামের মানুষের।
এছাড়া উলিপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন সাহেবের আলগা ও রৌমারীর চরশৌলমারী এবং দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের শান্তিরচর, খড়ানির চর, কাজাইকাটা, গাছবাড়ি, চর কাজাইকাটা, আনন্দ বাজার, ফুলকার চর, সোনাপুর, গেন্দার আলগা, নামাজের চর, খেয়ারচর, ডিগ্রিরচর, বাংলা বাজার, চর ইটালুকান্দা, লাউবাড়ি, উত্তর নামাজের চর, জাহাজের আলগা, দই খাওয়ার চর, হবিগঞ্জ, ফুলকার চরসহ অর্ধলক্ষাধিক মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন একটি ব্রিজের অভাবে। এসব অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত হওয়ায় কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল রানা, মর্জিনা বেগম, মজিবর, সমশের আলীসহ অনেকে জানান, উপজেলার হলহলিয়া নদীর ওপর একটি সেতু না থাকায় দুর্ভোগে বছরের পর বছর ধরে চর শৌলমারী, সাহেবের আলগা এবং দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের মানুষ চলাচল করে আসছে। প্রত্যন্ত এলাকার অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা হওয়ায় সীমাহীন কষ্টে আছি আমরা। অনেক আন্দোলন করেও লাভ হয়নি। অথচ জনপ্রতিনিধিদের শুধু ভোটের সময় দেখা মিললেও পরে আর তাদের দেখা মেলে না। ফলে এলাকাবাসীর উদ্যোগে ৪০০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি বাঁশের সাকো নির্মাণ করা হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করছে এই সাকো দিয়ে।
স্থানীয়রা বলেন, বর্ষা মৌসুমে কর্দমাক্ত পথে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয় দারিদ্রপীড়িত এই জনপদের মানুষকে। উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র পথে প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার ও ক্ষতির মুখে পড়ছেন পথচারীরা। বেশি কষ্টে পড়তে হয় গর্ভবতী নারীসহ অসুস্থ রোগী, শিশু এবং বয়স্কদের।
তারা আরো বলেন, সেতু এবং রাস্তার সমস্যার সমাধান হলে জেলা শহরের সঙ্গে রৌমারী উপজেলার মানুষ মাত্র আড়াই থেকে তিন ঘণ্টায় যাতায়াত করতে পারবে। এতে করে সব পেশাজীবী মানুষের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।
এ বিষয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, কাজাইকাটা এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৬৩০ মিটার চেইনেজ সেতুর জন্য একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি অর্থবছরে সেতুর কাজ শুরু হবে।