Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামে সেতুতে সংযোগ সড়কের অভাবে ঝুঁকি চলাচল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কুড়িগ্রাম পৌর শহরের ভেলাকোপা হানাগড়ের মাথায় অবস্থিত সেতুটি ২০১১-১২ অর্থবছরে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হয়। ১৭ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৫ মিটার প্রস্থ সেতুটির সংযোগ সড়ক কয়েক বছর আগে বন্যায় ধসে যাওয়ার পর আর মেরামত হয়নি। এলাকাবাসী বর্তমানে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি সাঁকো ব্যবহার করে চলাচল করছেন। যেটি প্রতি ৩-৪ মাস অন্তর এলাকাবাসীর চাঁদায় মেরামত করতে হয়। মানববন্ধন কর্মসূচি পালনসহ বার বার পৌর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও বিষয়টির সুরাহা হয়নি। জেলা প্রশাসন থেকে কয়েক দফা পরিদর্শন করার পরও সংযোগ সড়কটি মেরামত করা হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চর ভেলোকোপা এলাকার মানুষদের চলাচলের একমাত্র সড়কে নির্মাণ করা সেতুটি ২০১৭ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভেঙে যায় পূর্বদিকের সংযোগ সড়কটি। সংযোগ সড়কের অভাবে ঝুঁকি চলাচল করছে এলাকার বাসিন্দাদের।

ভেলাকোপার বাসিন্দা ফজলুল হক বলেন, প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে দুই পারের হাজার হাজার মানুষ পারাপার হচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে লোকজন সেতুটি পার হচ্ছে। সব থেকে ভয় স্কুলগামী বাচ্চাদের নিয়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা আয়নাল মিয়া বলেন, এক মাস পর বন্যা আসবে। বন্যার সময় এই সেতু দিয়ে চলাচল খুব কষ্টের।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. ফিরোজ বলেন, যাঁরা প্রতিনিয়ত ব্যবসার কাজে কুড়িগ্রাম শহরে যান তাঁদের মালপত্র নিয়ে আসতে খুব সমস্যা হয়। গ্রামবাসীকে আবাদি ফসল বিক্রি করার জন্য বাজারে নিতেও অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিনেও মেরামতের কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকাবাসী সত্যিই হতাশ। এলাকাবাসীর পক্ষে অনেক আন্দোলন, মানববন্ধন করে কোনো ফল হয়নি। দ্রুত সেতুর সংযোগ সড়কের মেরামত দাবি করেন তিনি।

দিনমজুর শমসের আলী বলেন, সাইকেলত করি কাঠের সাঁকোত যখন উঠি, গাঁও (শরীর) টলমল করে। ভয় নাগে এই বুঝি পড়ি গেলং। আইজ ৬টা বছর গেলো ব্রিজ কোনা কাইও ঠিক (মেরামত) করি না দেয়। প্রতিদিন কাজের সন্ধানে এই সেতুর ওপর ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হয়। সংযোগ সড়কের অভাবে তাঁর মতো কয়েক হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়েই সেতুটি ব্যবহার করতে হচ্ছে।

ভেলাকোপা ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জমশেদ আলী টুংকু জানান, তিনি অনেকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। কোনো কাজ হয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে লোকজনের চলাচলের জন্য সেতুতে কয়েকবার অস্থায়ী সংস্কার করিয়েছেন। বিষয়টির টেকসই সমাধান চান তিনি।

জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র মো. কাজিউল ইসলাম বলেন, ভেলাকোপা সেতুটির ব্যাপারে ঢাকায় কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ না পাওয়ায় সেখানে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, তিনি কুড়িগ্রামে যোগদান করার পর সেতুটি একবার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সংযোগ সড়কটি মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেবেন তিনি। দ্রুত বিষয়টির সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদী।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

কুড়িগ্রামে সেতুতে সংযোগ সড়কের অভাবে ঝুঁকি চলাচল

প্রকাশের সময় : ০৪:০২:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কুড়িগ্রাম পৌর শহরের ভেলাকোপা হানাগড়ের মাথায় অবস্থিত সেতুটি ২০১১-১২ অর্থবছরে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হয়। ১৭ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৫ মিটার প্রস্থ সেতুটির সংযোগ সড়ক কয়েক বছর আগে বন্যায় ধসে যাওয়ার পর আর মেরামত হয়নি। এলাকাবাসী বর্তমানে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি সাঁকো ব্যবহার করে চলাচল করছেন। যেটি প্রতি ৩-৪ মাস অন্তর এলাকাবাসীর চাঁদায় মেরামত করতে হয়। মানববন্ধন কর্মসূচি পালনসহ বার বার পৌর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও বিষয়টির সুরাহা হয়নি। জেলা প্রশাসন থেকে কয়েক দফা পরিদর্শন করার পরও সংযোগ সড়কটি মেরামত করা হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চর ভেলোকোপা এলাকার মানুষদের চলাচলের একমাত্র সড়কে নির্মাণ করা সেতুটি ২০১৭ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভেঙে যায় পূর্বদিকের সংযোগ সড়কটি। সংযোগ সড়কের অভাবে ঝুঁকি চলাচল করছে এলাকার বাসিন্দাদের।

ভেলাকোপার বাসিন্দা ফজলুল হক বলেন, প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে দুই পারের হাজার হাজার মানুষ পারাপার হচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে লোকজন সেতুটি পার হচ্ছে। সব থেকে ভয় স্কুলগামী বাচ্চাদের নিয়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা আয়নাল মিয়া বলেন, এক মাস পর বন্যা আসবে। বন্যার সময় এই সেতু দিয়ে চলাচল খুব কষ্টের।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. ফিরোজ বলেন, যাঁরা প্রতিনিয়ত ব্যবসার কাজে কুড়িগ্রাম শহরে যান তাঁদের মালপত্র নিয়ে আসতে খুব সমস্যা হয়। গ্রামবাসীকে আবাদি ফসল বিক্রি করার জন্য বাজারে নিতেও অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিনেও মেরামতের কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকাবাসী সত্যিই হতাশ। এলাকাবাসীর পক্ষে অনেক আন্দোলন, মানববন্ধন করে কোনো ফল হয়নি। দ্রুত সেতুর সংযোগ সড়কের মেরামত দাবি করেন তিনি।

দিনমজুর শমসের আলী বলেন, সাইকেলত করি কাঠের সাঁকোত যখন উঠি, গাঁও (শরীর) টলমল করে। ভয় নাগে এই বুঝি পড়ি গেলং। আইজ ৬টা বছর গেলো ব্রিজ কোনা কাইও ঠিক (মেরামত) করি না দেয়। প্রতিদিন কাজের সন্ধানে এই সেতুর ওপর ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হয়। সংযোগ সড়কের অভাবে তাঁর মতো কয়েক হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়েই সেতুটি ব্যবহার করতে হচ্ছে।

ভেলাকোপা ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জমশেদ আলী টুংকু জানান, তিনি অনেকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। কোনো কাজ হয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে লোকজনের চলাচলের জন্য সেতুতে কয়েকবার অস্থায়ী সংস্কার করিয়েছেন। বিষয়টির টেকসই সমাধান চান তিনি।

জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র মো. কাজিউল ইসলাম বলেন, ভেলাকোপা সেতুটির ব্যাপারে ঢাকায় কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ না পাওয়ায় সেখানে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, তিনি কুড়িগ্রামে যোগদান করার পর সেতুটি একবার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সংযোগ সড়কটি মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেবেন তিনি। দ্রুত বিষয়টির সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদী।