Dhaka রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের নামে মামলা

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে হামলা ও গুলির ঘটনায় সারাদেশে শত শত মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো কোনো মামলায় আসামি করা হলো সাবেক দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদকে।

আব্দুল হামিদ ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি ছিলেন। অবসর জীবনে তিনি গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে এবং ঢাকার নিকুঞ্জের বাসায় অবস্থান করেন। আন্দোলন চলাকালে কিশোরগঞ্জ শহরে আব্দুল হামিদের বাসায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়), মেয়ে সায়মা ওয়াজেদসহ (পুতুল) ১২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে তহমুল ইসলাম (২৭) নামের এক যুবক কিশোরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তহমুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ সদরের উত্তর লতিবাবাদ এলাকার আবু তাহের ভূঁইয়ার ছেলে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ সদর থানায় ১১টি মামলাসহ জেলায় প্রায় অর্ধশত মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় চার হাজার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরো ১০ হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে। এই প্রথম কোনো মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আসামি করা হলো। মামলায় আবদুল হামিদ ৩ নম্বর আসামি। ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে; ২ নম্বরে আছেন শেখ রেহানা।

মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনে সংগঠিত ছাত্র-জনতার গড়ে ওঠা ঐক্য-আন্দোলনকে দমন করতে দেশ-বিদেশে অবস্থান করা ১ নম্বর থেকে ২০ নম্বর আসামি সারা দেশে গণহত্যার পরিকল্পনা করেন। সেই মোতাবেক তারা কিশোরগঞ্জে যাতে কোনো আন্দোলন হতে না পারে, সে জন্য ২১ থেকে ৪০ নম্বর আসামিদের নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য ৪১ থেকে ১২৪ নম্বর আসামিরা শটগান, বন্দুক, পিস্তল, ককটেল, বোমা ও দেশি অস্ত্র এবং অর্থ সরবরাহ করে আন্দোলন দমাতে এবং গণহত্যার নির্দেশ দেন। গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে জেলা শহরের স্টেশন রোড এলাকায় ছাত্র–জনতার মিছিলে আসামিরা হামলা চালান। তারা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়ে মামলার বাদীসহ সাক্ষীদের আহত করেন। এ ছাড়া আসামিরা গ্রেনেড, ককটেল ও বোমা নিক্ষেপ করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেন।

মামলার বাদী তহমুল ইসলাম জানান, তিনি বিএনপির একজন কর্মী। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের তালিকায় তার নাম রয়েছে। আহত অবস্থায় দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি এখন কিছুটা সুস্থ হওয়ায় মামলা করেছেন।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ সদর থানায় মোট ১১টি মামলাসহ জেলায় প্রায় অর্ধশত রাজনৈতিক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় চার হাজার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০ হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাঁচ মামলায় চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর

কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের নামে মামলা

প্রকাশের সময় : ১২:৩৪:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে হামলা ও গুলির ঘটনায় সারাদেশে শত শত মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো কোনো মামলায় আসামি করা হলো সাবেক দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদকে।

আব্দুল হামিদ ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি ছিলেন। অবসর জীবনে তিনি গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে এবং ঢাকার নিকুঞ্জের বাসায় অবস্থান করেন। আন্দোলন চলাকালে কিশোরগঞ্জ শহরে আব্দুল হামিদের বাসায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়), মেয়ে সায়মা ওয়াজেদসহ (পুতুল) ১২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে তহমুল ইসলাম (২৭) নামের এক যুবক কিশোরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তহমুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ সদরের উত্তর লতিবাবাদ এলাকার আবু তাহের ভূঁইয়ার ছেলে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ সদর থানায় ১১টি মামলাসহ জেলায় প্রায় অর্ধশত মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় চার হাজার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরো ১০ হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে। এই প্রথম কোনো মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আসামি করা হলো। মামলায় আবদুল হামিদ ৩ নম্বর আসামি। ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে; ২ নম্বরে আছেন শেখ রেহানা।

মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনে সংগঠিত ছাত্র-জনতার গড়ে ওঠা ঐক্য-আন্দোলনকে দমন করতে দেশ-বিদেশে অবস্থান করা ১ নম্বর থেকে ২০ নম্বর আসামি সারা দেশে গণহত্যার পরিকল্পনা করেন। সেই মোতাবেক তারা কিশোরগঞ্জে যাতে কোনো আন্দোলন হতে না পারে, সে জন্য ২১ থেকে ৪০ নম্বর আসামিদের নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য ৪১ থেকে ১২৪ নম্বর আসামিরা শটগান, বন্দুক, পিস্তল, ককটেল, বোমা ও দেশি অস্ত্র এবং অর্থ সরবরাহ করে আন্দোলন দমাতে এবং গণহত্যার নির্দেশ দেন। গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে জেলা শহরের স্টেশন রোড এলাকায় ছাত্র–জনতার মিছিলে আসামিরা হামলা চালান। তারা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়ে মামলার বাদীসহ সাক্ষীদের আহত করেন। এ ছাড়া আসামিরা গ্রেনেড, ককটেল ও বোমা নিক্ষেপ করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেন।

মামলার বাদী তহমুল ইসলাম জানান, তিনি বিএনপির একজন কর্মী। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের তালিকায় তার নাম রয়েছে। আহত অবস্থায় দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি এখন কিছুটা সুস্থ হওয়ায় মামলা করেছেন।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ সদর থানায় মোট ১১টি মামলাসহ জেলায় প্রায় অর্ধশত রাজনৈতিক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় চার হাজার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০ হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে।