Dhaka বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কিভাবে দেশে ফিরবেন জানালেন শেখ হাসিনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত কোনো সরকারের অধীনে তিনি দেশে ফিরবেন না। তিনি আপাতত ভারতে থাকার পরিকল্পনা নিয়েছেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে ভারতেই অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। সেখান থেকে বুধবার (২৯ অক্টোবর) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমনটা জানান। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এটিই তার প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকার।

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হাসিনার পতনের পর থেকে বাংলাদেশ পরিচালনা করছে এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের অঙ্গীকার করেছে। দেশে বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ।

ই-মেইলে রয়টার্সকে দেওয়া জবাবে দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি দেশে ফিরতে চাই, তবে শর্ত একটাই- সেখানে বৈধ সরকার থাকতে হবে, সংবিধান অটুট থাকতে হবে এবং প্রকৃত আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা কেবল অন্যায়ই নয়, এটি আত্মঘাতীও বটে। আওয়ামী লীগের লাখ লাখ সমর্থক আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচন বয়কট করবে।

রয়টার্সকে তিনি বলেন, পরবর্তী সরকারের নির্বাচনী বৈধতা থাকা দরকার। লাখ লাখ মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে, তাই এখনকার অবস্থায় তারা ভোট দেবে না। যদি কার্যকর রাজনৈতিক ব্যবস্থা চান, তবে কোটি কোটি মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা চলবে না।

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বা তার পরিবারের কেউ আর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নাও থাকতে পারেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এটা সত্যিই আমি বা আমার পরিবারকে নিয়ে নয়। বাংলাদেশ যে ভবিষ্যৎ চায়, তা অর্জন করতে হলে সাংবিধানিক শাসন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতেই হবে। কোনো একক ব্যক্তি বা পরিবার দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে না।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের ভোটারদের অন্য দলকে সমর্থন করতে বলছি না। আমরা এখনও আশা করি সাধারণ জ্ঞানের জয় হবে এবং আমরা নিজেরাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি পাব।

তিনি বলেননি যে তিনি বা তার পক্ষে অন্য কেউ আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়ার জন্য বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সাথে কোনও আড়ালে আলোচনা করছেন কিনা।

তবে তার এই বক্তব্য তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের আগের মন্তব্যের সঙ্গে কিছুটা ভিন্ন। ওয়াশিংটনে বসবাসরত সজীব ওয়াজেদ গত বছর রয়টার্সকে বলেছিলেন, অনুরোধ করা হলে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

উল্লেখ্য, জুলাই অভ্যুত্থানে সহিংস দমন-পীড়ন ও আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুমসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা চলমান। এর আগে ট্রাইব্যুনাল গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর যেকোনো ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ প্রকাশ বা প্রচার নিষিদ্ধ করে। সূত্র : রয়টার্স।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কিভাবে দেশে ফিরবেন জানালেন শেখ হাসিনা

প্রকাশের সময় : ০৪:১০:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত কোনো সরকারের অধীনে তিনি দেশে ফিরবেন না। তিনি আপাতত ভারতে থাকার পরিকল্পনা নিয়েছেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে ভারতেই অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। সেখান থেকে বুধবার (২৯ অক্টোবর) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমনটা জানান। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এটিই তার প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকার।

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হাসিনার পতনের পর থেকে বাংলাদেশ পরিচালনা করছে এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের অঙ্গীকার করেছে। দেশে বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ।

ই-মেইলে রয়টার্সকে দেওয়া জবাবে দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি দেশে ফিরতে চাই, তবে শর্ত একটাই- সেখানে বৈধ সরকার থাকতে হবে, সংবিধান অটুট থাকতে হবে এবং প্রকৃত আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা কেবল অন্যায়ই নয়, এটি আত্মঘাতীও বটে। আওয়ামী লীগের লাখ লাখ সমর্থক আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচন বয়কট করবে।

রয়টার্সকে তিনি বলেন, পরবর্তী সরকারের নির্বাচনী বৈধতা থাকা দরকার। লাখ লাখ মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে, তাই এখনকার অবস্থায় তারা ভোট দেবে না। যদি কার্যকর রাজনৈতিক ব্যবস্থা চান, তবে কোটি কোটি মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা চলবে না।

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বা তার পরিবারের কেউ আর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নাও থাকতে পারেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এটা সত্যিই আমি বা আমার পরিবারকে নিয়ে নয়। বাংলাদেশ যে ভবিষ্যৎ চায়, তা অর্জন করতে হলে সাংবিধানিক শাসন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতেই হবে। কোনো একক ব্যক্তি বা পরিবার দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে না।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের ভোটারদের অন্য দলকে সমর্থন করতে বলছি না। আমরা এখনও আশা করি সাধারণ জ্ঞানের জয় হবে এবং আমরা নিজেরাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি পাব।

তিনি বলেননি যে তিনি বা তার পক্ষে অন্য কেউ আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়ার জন্য বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সাথে কোনও আড়ালে আলোচনা করছেন কিনা।

তবে তার এই বক্তব্য তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের আগের মন্তব্যের সঙ্গে কিছুটা ভিন্ন। ওয়াশিংটনে বসবাসরত সজীব ওয়াজেদ গত বছর রয়টার্সকে বলেছিলেন, অনুরোধ করা হলে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

উল্লেখ্য, জুলাই অভ্যুত্থানে সহিংস দমন-পীড়ন ও আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুমসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা চলমান। এর আগে ট্রাইব্যুনাল গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর যেকোনো ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ প্রকাশ বা প্রচার নিষিদ্ধ করে। সূত্র : রয়টার্স।