স্পোর্টস ডেস্ক :
ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা কে? এই প্রশ্নে এক সময় ভক্তদের মধ্যে তর্ক উঠতো পেলে-ম্যারাডোনাকে নিয়ে। বর্তমানে সেই পেলে-ম্যারাডোনার পাশেই সর্বকালের সেরার তালিকায় লিওনেল মেসির নামটিও উচ্চারিত হয় অবধারিতভাবেই। অনেকের কাছে তো তাদের পাশে না, মেসি যেন সর্বসাকুল্যেই ফুটবল ইতিহাসের সেরা। বিশেষত ৩৬ বছরের অপেক্ষা ঘুচিয়ে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতানোর পর থেকে তো মেসির শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে সংশয় কেটে গেছে অনেকেরই।
পাশাপাশি দাঁড়ানো দুই লিওনেল মেসি। দু’জনের হাতেই উচ্চকিত বিশ্বকাপ ট্রফি। মেসির তো আর জমজ নেই! সত্যিকারের মেসির পাশে ওখানে আসলে মেসির প্রতিমূর্তি। দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল ফেডারেশনের (কনমেবল) সদর দপ্তরে এভাবেই দেখা গেল বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনার ফুটবল জাদুকরকে।
প্যারাগুলের লুকে শহরে গত সোমবার কনমেবলের সদর দপ্তরে উন্মোচিত হলো বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে মেসির ভাস্কর্য। কোপা লিবার্তাদোরেসের ড্র অনুষ্ঠানের আগে এ দিন ছিল এই আয়োজন। কনমেবলের সদর দপ্তরে জাদুঘরে আরও দুই কিংবদন্তি পেলে ও দিয়েগো মারাদোনার পাশেই থাকবে মেসির ওই ভাস্কর্য।
A new Leo Messi statue has been revealed ???????? pic.twitter.com/O0oX0Pa6g0
— MC (@CrewsMat10) March 27, 2023
একটা সময় ছিল, যখন ফুটবল বিশ্বে প্রশ্ন উঠত, পেলে-মারাদোনার পাশে কে? সেই প্রশ্নের উত্তরে মেসির আনাগোণা ছিল অনেক দিন ধরেই। সংশয় যা কিছু ছিল, তা হয়তো মেসি ঘুচিয়ে দিয়েছেন ৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ে অসাধারণ পারফর্ম করে ও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনা দলকে সম্মান জানাতে কনমেবলের সদর দপ্তরে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে আলবিসেলেস্তেদের জার্সিতে বিশ্বকাপ হাতে মেসির ভাস্কর্য উন্মোচন করা হয়। লা পুলগা নিজেই তার ভাস্কর্য উন্মোচন করেছেন। মেসির সেই ভাস্কর্যটি কনমেবলের সদর দপ্তরে দুই কিংবদন্তি ফুটবলার পেলে ও ম্যারাডোনার পাশে ঠাঁই পেয়েছে।
এখন পেলে-মারাদোনার পাশাপাশি তার নাম উচ্চারিত হয় তো বটেই, অনেকের কাছে তিনিই সবাইকে ছাড়িয়ে সর্বকালের সেরা। কনমেবলের এই উদ্যোগকেও বলা যায় মেসির অর্জনের স্বীকৃতি।
এ প্রসঙ্গে মেসি বলেন, অনেক লম্বা পথ পাড়ি দিতে হয়েছে আমাকে। সেই পথে অনেক মোড় এসেছে, পরাজয় এসেছে। তবে আমি সবসময় সামনে তাকিয়েছি এবং সাফল্য অর্জন করতে চেয়েছি, বিজয় চেয়েছি। আমার মনে হয়, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার এটিই, স্বপ্নকে তাড়া করা, সবকিছুকে সম্ভব করতে লড়াই করা এবং খেলা উপভোগ করা, যেটি সবচেয়ে সুন্দর।
কনমেবলের এমন উদ্যেগে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে মেসি বলেন, আসলে আমরা খুবই সুন্দর একটি মুহূর্তের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এত ভালোবাসা পাচ্ছি। এটা সত্যিই অনেক বড় কিছু। আমি কখনও এমন কিছুর স্বপ্ন দেখিনি। ছোটবেলায় আমার স্বপ্ন ছিল, আমি যেটা পছন্দ করি, শুধু সেটা উপভোগ করা। একজন পেশাদার ফুটবলার হিসেবে এই জীবনটাই আমি সবসময় ভালোবেসেছি। এটা জানতাম, আমাকে অনেক দূর যেতে হবে।
মেসি বলেন, আলেজান্দ্রোকে (ডোমিঙ্গেজ) ধন্যবাদ। এই দুটি ট্রফির রেপ্লিকা আমার হাতে তুলে দেয়ার জন্য। আমরা এ দুটি নিয়েই বেশি কথা বলছি। বিশেষ করে এটা নিয়ে (বিশ্বকাপ ট্রফিকে ইঙ্গিত করে)। আমি এটিকে আমার ঘরের জাদুঘরে রাখবো। যেমনটি রেখেছি আরও অনেকগুলো ট্রফি। কনমেবলের সঙ্গে জড়িত আপনাদের সবাইকে আমার অন্তর থেকে ধন্যবাদ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্লাদিও তাপিয়া। তাছাড়াও মেসির সঙ্গে আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের বাকি সদস্যরাও ছিলেন। তাদেরকেও সম্মান জানিয়েছে কনমেবল।