নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজারে ঝুঁকিপূর্ণ কাঁচামালের আড়ত মার্কেট উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে পড়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। জনভোগান্তির অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয় এ খোলা বাজারটিকে। পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে কারওয়ান বাজারের কাঁচামালের আড়তে অভিযান পরিচালনা করতে এসেছিলেন ডিএনসিসি একটি দল। কিন্তু দোকানিদের বাধার মুখে অভিযান না করেই ফিরে যায় তারা।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) অভিযান পরিচালনা করতে এলে ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে ডিএনসিসির দলটিকে বাধা দেন। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ সময় বাগ-বিতণ্ডা চলে। এসময় ব্যবসায়ীদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো মার্কেট এলাকা। তারা বলেন, আমাদের সময় না দিয়ে আগেই অভিযান চালানো যাবে না। আগে আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এর আগে আমরা কোনো অভিযান পরিচালনা করতে দেবো না।
সেখানকার ব্যবসায়ী নেতা নাহিদ হাসানের দাবি, আড়ত থেকে মালামাল সরাতে ব্যবসায়ীদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়নি। এমনকি ব্যবসা পরিচালনার জন্য বিকল্প জায়গাও দেয়নি ডিএনসিসি। এ কারণেই তারা অভিযানে বাধা দিচ্ছেন।
ব্যবসায়ীদের এমন বাধার মুখে পড়লে ব্যবসায়ীক নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন সংশ্লিষ্ট। আলোচনার একপর্যায়ে ব্যবসায়ীদের ২৫ মে পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয় ডিএনসিসি। বলা হয়, এই সময়ের পর ডিএনসিসির পক্ষ থেকে এই মার্কেট সিলগালা করে দেওয়া হবে।
অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ।
তিনি বলেন, আড়তে ১৭৬টি দোকান রয়েছে। মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গত এপ্রিলে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশে আড়তদারদের মার্কেট ছাড়তে বলা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আজ অভিযানে আসে ডিএনসিসি। মার্কেটটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা আছে। ব্যবসায়ীদের একাধিকবার নোটিশ দিয়ে জানানো হয়েছে এ ব্যাপারে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ বলেন, মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গত এপ্রিল মাসে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশে মার্কেটটি ছেড়ে দিতে বলা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা অভিযানে এসেছিলাম। কিন্তু ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের পর ডিএনসিসির পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করে মার্কেটটি সিলগালা করে দেওয়া হবে।
এদিকে ব্যবসায়ীদের বাধা মুখেই আড়তের সব দোকান বন্ধ করার চেষ্টা করছে ডিএনসিসি। ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে অভিযানের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন। সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করতে দেখা গেছে।
ডিএনসিসি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডিএনসিসি আওতাধীন ৪৩টি মার্কেটের মধ্যে ২০টি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ আর আটটি ‘অতি নাজুক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অতি ঝুঁকিপূর্ণ আট মার্কেটের মধ্যে রয়েছে- গুলশান উত্তর কাঁচা মার্কেট, গুলশান দক্ষিণ পাকা মার্কেট, মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজারের প্রথম ও দ্বিতীয় তলা, রায়েরবাজার মার্কেট, কারওয়ান বাজার ১ নম্বর মার্কেট, কারওয়ান বাজার ২ নম্বর মার্কেট, কারওয়ান বাজার অস্থায়ী কাঁচা মার্কেট (কিচেন মার্কেট), কারওয়ান বাজার কাঁচামালের আড়ত মার্কেট ভবন।
অতি ঝুঁকিপূর্ণ এ আট মার্কেটের বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গত এপ্রিল মাসে আড়তদারদের চিঠি দিয়েছিল ডিএনসিসি।