স্পোর্টস ডেস্ক :
রেকর্ড ভাঙা গড়ার খেলাই যেন চলছে দুবাইয়ে ২০২৪ আইপিএলের মিনি নিলামে। কে কাকে টপকে রেবর্ড গড়বেন, সেই লড়াইটা চলছে সদ্য বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের মধ্যে। প্রথমে আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামি ক্রিকেটার বনে যান বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কামিন্স। ২০ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে তাকে কেনে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ঘণ্টা দুইয়ের মধ্যে কামিন্সকে টপকে সর্বোচ্চ দামি ক্রিকেটার হলেন সতীর্থ মিচেল স্টার্ক। স্টার্ককে কেনা হয়েছে ২৪ কোটিরও বেশি দামে।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুবাইয়ের কোকাকোলা এরিনাতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার (আইপিএল) এবারের আসরের নিলাম। এই নিলামে সঞ্চালক হিসেবে আছেন মল্লিকা সাগর। তিনিই প্রথম নারী অকশনার হিসেবে আইপিএলের নিলাম সঞ্চালনা করছেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একের পর এক রেকর্ড গড়া স্টার্ক আইপিএলে যেন ‘অমাবশ্যার চাঁদ।’ ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছেন ২০১৫ তে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে। সেই স্টার্ককে নিতেই এবারের নিলামে লড়াই চলছিল গুজরাট টাইটান্স ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত ২৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে তাঁকে কিনেছে কলকাতা। হয়ে গেলেন আইপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামি ক্রিকেটার।
স্টার্কের ভিত্তিমূল্য ছিল ২ কোটি রুপি। দিল্লি ক্যাপিটালস বিড ওপেন করে। এরপর সেখানে যোগ দেয় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। মুম্বাই দাম উঠিয়েছিল ৮ কোটি রুপি।
এরপর কলকাতা হাঁকায় ৯ কোটি ৮০ লাখ। গুজরাট টাইটান্স বলে ১০ কোটি। এরপর লড়াই শুরু হয় গুজরাট আর কলকাতার মধ্যে। কলকাতা আরেকটু বাড়ায়। গুজরাট বলে ফেলে ১০ কোটি।
কলকাতা হাল ছাড়েনি। এক লাফে বলে ১৫ কোটি রুপি। গুজরাট আবার ১৫ কোটি ৫০ লাখ হাঁকায়। সেখান থেকে উঠতে উঠতে ১৮-২০ কোটি।
এবার কামিন্সের সমান ২০ কোটি ৫০ লাখ বলে কলকাতা। গুজরাট বলে সর্বকালের রেকর্ড দাম ২১ কোটি। সেখানেই শেষ হয়নি। ১০ মিনিট ধরে চলে স্টার্কের বিড। গুজরাট উঠেছিল ২৪ কোটি পর্যন্ত। কিন্তু জয় হয় কলকাতার। ২৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে শেষ পর্যন্ত অসি পেসারকে দলে ভেড়ায় তারা।
স্টার্ক, কামিন্সের পর আইপিএল ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ দামি ক্রিকেটার হলেন স্যাম কারান। ২০২৩ আইপিএলের নিলামে ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডারকে ১৮ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে কিনেছিল পাঞ্জাব কিংস। গত এক বছর আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামি ক্রিকেটারের রেকর্ডটা কারানই ধরে রেখেছিলেন। আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামি ক্রিকেটারের তালিকায় চার ও পাঁচ আছেন গ্রিন ও স্টোকস। ২০২৩ আইপিএলে রেকর্ড গড়েছেন ক্যামেরন গ্রিনকে ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। চেন্নাই সুপার কিংস ১৬ কোটি ২৫ লাখ রুপিতে কিনেছিল বেন স্টোকসকে।
আইপিএলে কামিন্স সর্বশেষ খেলেছেন ২০২২ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে। সেই আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে ১৪ বলে ৫০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে রেকর্ড গড়েন। মাঝে ২০২৩ আইপিএল তিনি খেলেননি। এবারের আইপিএলের নিলামে প্রথমে তাঁকে নিতে কাড়াকাড়ি শুরু হয় চেন্নাই সুপার কিংস ও মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের। এরপর চেন্নাইয়ের লড়াই শুরু হয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর সঙ্গে। শেষে আরসিবির সঙ্গে তুমুল লড়াইয়ে জিতে যায় হায়দরাবাদ।
হায়দরাবাদ দলে আছেন বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়ার আরেক ক্রিকেটার ট্রাভিস হেড। ২০২৩ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল ও ফাইনালে ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি। ফাইনালে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে সেঞ্চুরি করে ১২ বছর পর বিশ্বকাপ ফাইনালে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন তিনি। ভিত্তিমূল্য ২ কোটি রুপি থেকে ৬ কোটি ৮০ লাখ রুপিতে কিনেছে হায়দরাবাদ। হেড সর্বশেষ আইপিএলে খেলেছেন ২০১৭ সালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে। কামিন্স বলেন, ‘আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদে যেতে পেরে ভীষণ খুশি। অরেঞ্জ আর্মি সম্পর্কে অনেক শুনেছি। আইপিএলে এর আগে হায়দরাবাদে কয়েকবার খেলেছি। সবসময় পছন্দ করছি। খেলার জন্য আর তর সইছে না।। আরেক অজি ক্রিকেটার ট্রাভিস হেডকে এখানে দেখে ভালো লাগছে।’
আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে দামি ১০ খেলোয়াড় (ভারতীয় রুপি):
মিচেল স্টার্ক; দল: কলকাতা নাইট রাইডার্স; ২৪ কোটি ৭৫ লাখ; ২০২৪।
প্যাট কামিন্স; দল: সানরাইজার্স হায়দরাবাদ; ২০ কোটি ৫০ লাখ; ২০২৪।
স্যাম কারান; দল: পাঞ্জাব কিংস; ১৮ কোটি ৫০ লাখ; ২০২৩।
ক্যামেরন গ্রিন; দল: মুম্বাই ইন্ডিয়ানস; ১৭ কোটি ৫০ লাখ; ২০২৩।
বেন স্টোকস; দল: চেন্নাই সুপার কিংস; ১৬ কোটি ২৫ লাখ; ২০২৩।
ক্রিস মরিস; দল: রাজস্থান রয়্যালস; ১৬ কোটি ২৫ লাখ; ২০২১।
নিকোলাস পুরান; দল: লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস; ১৬ কোটি; ২০২৩।
যুবরাজ সিং; দল: দিল্লি ডেয়ারডেভিলস (বর্তমান দিল্লি ক্যাপিটালস) ; ১৬ কোটি; ২০১৫ ।
প্যাট কামিন্স; দল: কলকাতা নাইট রাইডার্স; ১৫ কোটি ৫০ লাখ; ২০২০।
ইশান কিষাণ: দল: মুম্বাই ইন্ডিয়ানস; ১৫ কোটি ২৫ লাখ; ২০২২।