Dhaka বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশনে শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মাধ্যমিক স্তরের এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকরা তাদের প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশন শুরু করেছেন।

মঙ্গলবার (১ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। সকাল ১১টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এই অনশন কর্মসূচি শুরু হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত হতে শুরু করেন শিক্ষকরা। তাদের অনেকেরই শরীরে জড়ানো কাফনের কাপড়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে শিক্ষকদের সংখ্যাও। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর পল্টন থেকে হাইকোর্ট অভিমুখী সড়কের কদম ফোয়ারা পর্যন্ত রাস্তার একপাশ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

আমরণ অনশন প্রসঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ মো. কাওছার আহমেদ বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণ এবং ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবার জন্য শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করতে হবে। এই আন্দোলন করতে গিয়ে ইতোমধ্যে দুই দফা পুলিশি কঠোরতার মুখে পড়েছেন শিক্ষকরা। বিশেষ করে আন্দোলনের সপ্তম দিনে পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করে। ওইদিন শতাধিক লোক আহত হন। এতে আহত একজন মারা গেছেন।

তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী স্বঘোষিত ও সদ্য গজিয়ে ওঠা কিছু সংগঠনের শিক্ষক নেতাসহ একটি বৈঠক করেছেন। তাদের বেশিরভাগ সরকারি আশীর্বাদপুষ্ট। বৈঠকে আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করে পরিবেশ ঘোলাটে করার চেষ্টা করেছেন তারা।

শেখ মো. কাওছার আহমেদ বলেন, আমরা ১৯ বছর আগের উৎসব ভাতা পেয়ে আসছি। সেই উৎসব ভাতার কোনো পরিবর্তন হয় নাই। আমরা মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া পাই, সেই ১ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকার বস্তিতেও একটা রুম পাওয়া যায় না। আমরা সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষক এতোদিন মনে করেছিল আমরা বেসরকারি এখন দেখছি আমরা বেদরকারি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা বেদরকারি হয়ে গেছি। ৯৬ ভাগ শিক্ষা কার্যক্রম যারা পরিচালনা করে তারা যদি আপনার (প্রধানমন্ত্রী) কাছে বেদরকারি হয়ে যায় তাহলে আমরা কার কাছে দাঁড়াবো? কার কাছে যাবো? আমাদের অনিচ্ছা সত্তেও আমরা কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশনে ডাক দিয়েছি।

শিক্ষক নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পাঁচ মিনিটের জন্য হলেও তাদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করতে হবে। তারা প্রায় একমাস রাজপথে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষকরা শূন্য হাতে ফিরতে চান না। এতদিন আন্দোলনের পর শূন্য হাতে ফেরাটাও হবে লজ্জাজনক। তাই তারা সুনির্দিষ্ট আশ্বাস চান।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ডাকে ১১ জুলাই থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন হাজারো শিক্ষক। এর মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর দফায় দফায় ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানালেও শিক্ষকরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরও কোনো সমাধানে আসতে পারেননি শিক্ষকরা। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষকরা জাতীয়করণের সুস্পষ্ট ঘোষণা বা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ মিনিটের সাক্ষাৎ চেয়েছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশনে শিক্ষকরা

প্রকাশের সময় : ০৪:৩৫:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মাধ্যমিক স্তরের এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকরা তাদের প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশন শুরু করেছেন।

মঙ্গলবার (১ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। সকাল ১১টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এই অনশন কর্মসূচি শুরু হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত হতে শুরু করেন শিক্ষকরা। তাদের অনেকেরই শরীরে জড়ানো কাফনের কাপড়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে শিক্ষকদের সংখ্যাও। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর পল্টন থেকে হাইকোর্ট অভিমুখী সড়কের কদম ফোয়ারা পর্যন্ত রাস্তার একপাশ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

আমরণ অনশন প্রসঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ মো. কাওছার আহমেদ বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণ এবং ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবার জন্য শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করতে হবে। এই আন্দোলন করতে গিয়ে ইতোমধ্যে দুই দফা পুলিশি কঠোরতার মুখে পড়েছেন শিক্ষকরা। বিশেষ করে আন্দোলনের সপ্তম দিনে পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করে। ওইদিন শতাধিক লোক আহত হন। এতে আহত একজন মারা গেছেন।

তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী স্বঘোষিত ও সদ্য গজিয়ে ওঠা কিছু সংগঠনের শিক্ষক নেতাসহ একটি বৈঠক করেছেন। তাদের বেশিরভাগ সরকারি আশীর্বাদপুষ্ট। বৈঠকে আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করে পরিবেশ ঘোলাটে করার চেষ্টা করেছেন তারা।

শেখ মো. কাওছার আহমেদ বলেন, আমরা ১৯ বছর আগের উৎসব ভাতা পেয়ে আসছি। সেই উৎসব ভাতার কোনো পরিবর্তন হয় নাই। আমরা মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া পাই, সেই ১ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকার বস্তিতেও একটা রুম পাওয়া যায় না। আমরা সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষক এতোদিন মনে করেছিল আমরা বেসরকারি এখন দেখছি আমরা বেদরকারি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা বেদরকারি হয়ে গেছি। ৯৬ ভাগ শিক্ষা কার্যক্রম যারা পরিচালনা করে তারা যদি আপনার (প্রধানমন্ত্রী) কাছে বেদরকারি হয়ে যায় তাহলে আমরা কার কাছে দাঁড়াবো? কার কাছে যাবো? আমাদের অনিচ্ছা সত্তেও আমরা কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশনে ডাক দিয়েছি।

শিক্ষক নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পাঁচ মিনিটের জন্য হলেও তাদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করতে হবে। তারা প্রায় একমাস রাজপথে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষকরা শূন্য হাতে ফিরতে চান না। এতদিন আন্দোলনের পর শূন্য হাতে ফেরাটাও হবে লজ্জাজনক। তাই তারা সুনির্দিষ্ট আশ্বাস চান।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ডাকে ১১ জুলাই থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন হাজারো শিক্ষক। এর মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর দফায় দফায় ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানালেও শিক্ষকরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরও কোনো সমাধানে আসতে পারেননি শিক্ষকরা। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষকরা জাতীয়করণের সুস্পষ্ট ঘোষণা বা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ মিনিটের সাক্ষাৎ চেয়েছেন।