Dhaka বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কানাডার ৪১ কূটনীতিককে প্রত্যাহার করতে বলল ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারত ও কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে আরেক দফা অবনতি হল। দেশটি কানাডাকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে ৪১ জন কূটনীতিক কর্মকর্তাকে দেশে ফিরে যেতে বলেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবার) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট সূত্র গুলোর বরাত দিয়ে এ কথা জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডার এই কূটনৈতিকদের ১০ অক্টোবরের মধ্যে ভারত ছাড়ার জন্য বলা হয়েছে। ভারতে কানাডার অন্তত ৬২ জন কূটনৈতিক থাকেন। এই সংখ্যা কমাতে চায় ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুই দেশের মধ্যকার কূটনীতিকদের সংখ্যার মধ্যে সাদৃশ্য থাকা প্রয়োজন।

রয়টার্স জানিয়েছে, এ ব্যাপারে মন্তব্য চেয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল ভারত ও কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু কোনও পক্ষ থেকেই সাড়া মেলেনি। এর আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেনন, কানাডায় ভারতীয় কূটনীতিকেরা জীবন সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন। সেখানে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সহিংস পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। কানাডা সরকারে ভূমিকায় নয়াদিল্লি হতাশ।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী জানিয়েছেন, কানাডায় ভারতের যে সংখ্যক কূটনীতিক রয়েছেন, সেই তুলনায় নয়াদিল্লিতে কানাডার কূটনীতিকদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। তাই দু’দেশের মধ্যে সমতা রাখা উচিত। আর সেই কারণেই ভারত থেকে প্রায় ৪১ জন কানাডার কূটনীতিককে সরানোর কথা বলা হয়েছে। আমরা মনে করি উভয় দেশের মধ্যে সমশক্তি এবং সমমর্যাদা থাকা জরুরি।

কানাডায় খলিস্তানপন্থী নেতা খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত-কানাডার মধ্যকার সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। এই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লির এই নির্দেশে দু’দেশের সম্পর্ক আরও তিক্ত হতে চলেছে বলে মনে করছে দেশটির কূটনৈতিক মহলের একাংশ।

গত ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের ভ্যাঙ্কুভার শহরের গুরুদুয়ারার ভেতরেই গুলি করে হত্যা করা হয় খালিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারকে। হরদীপকে ২০ টিরও বেশি গুলি করা হয়েছিল। কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের সারে অঞ্চলে বাস করতেন হরদীপ। বিগত কয়েক বছরে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে খালিস্তানি বিক্ষোভের নেপথ্যে ছিলেন হরদীপ। সম্প্রতি খালিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারকে দায়ী করে মন্তব্য করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এ নিয়ে বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয় ভারত ও কানাডার মধ্যে। এরমধ্যেই আরেক খালিস্তানপন্থী সুখদুল সিংকে হত্যা করা হয়েছে কানাডায়।

গত জুনে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশে খুন হন খলিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিং। হরদীপের খুনের নেপথ্যে ‘ভারত সরকারের হাত থাকতে পারে’ বলে সম্প্রতি সে দেশের পার্লামেন্টে মন্তব্য করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর এই অভিযোগ সরাসরি খারিজ করে দেয় নয়াদিল্লি। আর এই ঘটনা নিয়েই দু’দেশের মধ্যে শুরু হয় কূটনৈতিক অস্থিরতা। ভারতে বসবাসকারী বা ঘুরতে যাওয়া কানাডার নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সংক্রান্ত কিছু নির্দেশিকা জারি করে কানাডার সরকার। তার পাল্টা জবাবে কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয় শিক্ষার্থী এবং নাগরিকদের চূড়ান্ত সতর্ক ভাবে থাকার নতুন নির্দেশিকা জারি করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ছাড়াও কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়া স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কানাডার ৪১ কূটনীতিককে প্রত্যাহার করতে বলল ভারত

প্রকাশের সময় : ০১:২৭:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারত ও কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে আরেক দফা অবনতি হল। দেশটি কানাডাকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে ৪১ জন কূটনীতিক কর্মকর্তাকে দেশে ফিরে যেতে বলেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবার) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট সূত্র গুলোর বরাত দিয়ে এ কথা জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডার এই কূটনৈতিকদের ১০ অক্টোবরের মধ্যে ভারত ছাড়ার জন্য বলা হয়েছে। ভারতে কানাডার অন্তত ৬২ জন কূটনৈতিক থাকেন। এই সংখ্যা কমাতে চায় ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুই দেশের মধ্যকার কূটনীতিকদের সংখ্যার মধ্যে সাদৃশ্য থাকা প্রয়োজন।

রয়টার্স জানিয়েছে, এ ব্যাপারে মন্তব্য চেয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল ভারত ও কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু কোনও পক্ষ থেকেই সাড়া মেলেনি। এর আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেনন, কানাডায় ভারতীয় কূটনীতিকেরা জীবন সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন। সেখানে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সহিংস পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। কানাডা সরকারে ভূমিকায় নয়াদিল্লি হতাশ।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী জানিয়েছেন, কানাডায় ভারতের যে সংখ্যক কূটনীতিক রয়েছেন, সেই তুলনায় নয়াদিল্লিতে কানাডার কূটনীতিকদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। তাই দু’দেশের মধ্যে সমতা রাখা উচিত। আর সেই কারণেই ভারত থেকে প্রায় ৪১ জন কানাডার কূটনীতিককে সরানোর কথা বলা হয়েছে। আমরা মনে করি উভয় দেশের মধ্যে সমশক্তি এবং সমমর্যাদা থাকা জরুরি।

কানাডায় খলিস্তানপন্থী নেতা খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত-কানাডার মধ্যকার সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। এই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লির এই নির্দেশে দু’দেশের সম্পর্ক আরও তিক্ত হতে চলেছে বলে মনে করছে দেশটির কূটনৈতিক মহলের একাংশ।

গত ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের ভ্যাঙ্কুভার শহরের গুরুদুয়ারার ভেতরেই গুলি করে হত্যা করা হয় খালিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারকে। হরদীপকে ২০ টিরও বেশি গুলি করা হয়েছিল। কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের সারে অঞ্চলে বাস করতেন হরদীপ। বিগত কয়েক বছরে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে খালিস্তানি বিক্ষোভের নেপথ্যে ছিলেন হরদীপ। সম্প্রতি খালিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারকে দায়ী করে মন্তব্য করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এ নিয়ে বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয় ভারত ও কানাডার মধ্যে। এরমধ্যেই আরেক খালিস্তানপন্থী সুখদুল সিংকে হত্যা করা হয়েছে কানাডায়।

গত জুনে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশে খুন হন খলিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিং। হরদীপের খুনের নেপথ্যে ‘ভারত সরকারের হাত থাকতে পারে’ বলে সম্প্রতি সে দেশের পার্লামেন্টে মন্তব্য করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর এই অভিযোগ সরাসরি খারিজ করে দেয় নয়াদিল্লি। আর এই ঘটনা নিয়েই দু’দেশের মধ্যে শুরু হয় কূটনৈতিক অস্থিরতা। ভারতে বসবাসকারী বা ঘুরতে যাওয়া কানাডার নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সংক্রান্ত কিছু নির্দেশিকা জারি করে কানাডার সরকার। তার পাল্টা জবাবে কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয় শিক্ষার্থী এবং নাগরিকদের চূড়ান্ত সতর্ক ভাবে থাকার নতুন নির্দেশিকা জারি করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ছাড়াও কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়া স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার।