আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
কাজাখস্তানে আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। উড়োজাহাজটিতে ক্রুসহ মোট ৭২ জন আরোহী ছিলেন বলে জানা গেছে। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে অন্তত ৩২ জনকে। তাদেরকে কাছের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) কাজাখস্তানের আকতাউ শহরের কাছে উড়োজাহাটি বিধ্বস্ত হয় বলে কাজাখ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকালে কাজাখস্তানের আকতাউ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয় আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের ৮৪৩২ মডেলের একটি যাত্রীবাহী বিমান। মুহূর্তে আগুন ধরে যায় বিমানটিতে।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, ৫ ক্রুসহ ৭২ জনের বেশি আরোহী নিয়ে আজারবাইজানের রাজধানী বাকু থেকে রাশিয়ার গ্রজনি শহরের উদ্দেশে যাত্রা করে বিমানটি। ভারি কুয়াশার কারণে যাত্রাপথ পরিবর্তন করে বিমানটি। আকতাউ বিমানবন্দরের রানওয়েতে বিধ্বস্তের আগে আকাশে বেশ কয়েকবার চক্কর দেয় বিমানটি। এসময় জরুরি বার্তাও দেয় বিমানটি।
কাজাখস্তানের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, যাত্রীদের মধ্যে ৩৭ জন আজারবাইজানের, ৬ জন কাজাখস্তানের, ৩ জন কিরগিজস্তানের ও ১৬ জন রাশিয়ার নাগরিক ছিলেন।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, উড়োজাহাজটি মাটিতে পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এতে আগুন ধরে যায়। এ সময় আকাশে ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়তে দেখা যায়। রক্তাক্ত এবং ক্ষতবিক্ষত যাত্রীদের অক্ষত থাকা উড়োজাহাজের একটি টুকরোতে ধাক্কা খেতে দেখা যায়। তবে এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
কাজাখস্তানের জরুরি পরিষেবাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরা উড়োজাহাজটির আগুন নিভিয়ে ফেলেছেন। তিন শিশুসহ জীবিত উদ্ধার করা ২৭ জনকে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
আজারবাইজান এয়ারলাইন্স বলেছে, এমব্রেয়ার ১৯০ উড়োজাহাজের জে২-৮২৪৩ ফ্লাইটটি আজারবাইজানের রাজধানী বাকু থেকে রাশিয়ার চেচনিয়ার গ্রোজনি শহরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু কাজাখস্তানের আকতাউ থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে উড়োজাহাজটি জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়।
রাশিয়ার একাধিক বার্তা সংস্থা বলেছে, চেচনিয়ার গ্রোজনি শহরে ঘন কুয়াশার কারণে উড়োজাহাজটি ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স বলেছে, উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের এই ঘটনায় কারিগরি ত্রুটিসহ অন্য কোনও কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে কাজাখস্তান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে রাশিয়ার বেসামরিক বিমান পর্যবেক্ষক সংস্থা বলেছে, উড়োজাহাজে পাখির আঘাতের পর পাইলট জরুরি অবতরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে।
উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পরপর রাশিয়া সফররত আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ দেশে ফিরেছেন। বুধবার রাশিয়ায় শীর্ষ এক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তার।