আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৭ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। এছাড়া এই ভূমিধসের ঘটনায় দেশটির মেডেলিন এবং কুইবডো শহরের মাঝে সংযোগকারী সড়কও বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে আটকে পড়া মানুষের কাছে পৌঁছাতে উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে দেশটি। রোববার (১৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলোম্বিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বর্ষণের জেরে হওয়া ভূমিধসে অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চোকো ডিপার্টমেন্ট অঞ্চলের গভর্নর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, বেশ কয়েকটি ভূমিধসের ঘটনায় মেদেলিন ও কুইবদো শহরকে যুক্ত করে যে সড়ক, সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই এটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, রাস্তায় কারমেন ডি আত্রাতো পৌরসভার কাছে ‘অনেক মানুষ’ তাদের যানবাহন ফেলে ‘একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন’। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভূমিধসে তারা চাপা পড়েন। যতদূর জানা গেছে, ৩৭ বা এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রানসিয়া মারকুইজ এক্সে জানিয়েছেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টা প্রচণ্ড ঝড়ের ফলে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় গত শুক্রবার বিকেলে দেশটির মেডেলিন এবং কুইবডো শহরে একাধিক ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এতে শহর দুটির মাঝে সংযোগকারী সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া ভূমিধসের সময় সেখানকার ব্যস্ত মহাসড়কেও বহু মানুষ আহত হয়েছেন। এমনকি রাস্তায় বেশ কয়েকটি গাড়ি কাদায় চাপা পড়ার পর কিছু লোক নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানা গেছে।
কলম্বিয়ার পুলিশের একটি বিশেষ উদ্ধারকারী দল শনিবার বেশ কিছু জীবিত মানুষকে উদ্ধার করার পাশাপাশি নিহত কয়েকজনের মৃতদেহও উদ্ধার করেছে। তবে বেশ কয়েকটি রাস্তা বন্ধ থাকায় উদ্ধারকারী ও দমকলকর্মীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছানোর জন্য কার্যত লড়াই করছেন।
এদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো প্রোতো চোকো অঞ্চলে দুর্যোগ মোকাবিলায় সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সিয়া মার্কেজ বলেছেন, ভূমিধসের ঘটনায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
কারমেন ডি আত্রাতোর মেয়র জেইম হেরেরা স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর এবং অন্যরা এখনও মাটির নিচে চাপা পড়েছেন। তবে ঠিক কতজন মাটির নিচে চাপা পড়েছেন তা নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটিতে বর্তমানে খরা মৌসুম চলছে। তবে পূর্বে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এবং আমাজন বনের সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভূমিধসের ঘটনা ঘটতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে দেশটির জলবায়ু, আবহাওয়া ও পরিবেশ বিদ্যা সংস্থা।