Dhaka সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কবি হেলাল হাফিজ আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কবি হেলাল হাফিজ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চলচ্চিত্র নির্মাতা কবিবন্ধু শবনব ফেরদৌসী বলেন, কবি যে হোস্টেলে থাকতেন, সেখানকার বাথরুমে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করা হয় এবং দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

২০২২ সালে কবি মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এরপর বন্ধু ইসমত শিল্পীর বাসায় কিছুকাল কাটিয়ে ফের একাকী জীবনে ফিরে যান তিনি। তার চিরচেনা শাহবাগের সুপার হোম হোস্টেলেই শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত কাটিয়ে গেলেন হেলাল হাফিজ। কবি ডায়াবেটিস, কিডনি আর গ্লুকোমার পাশাপাশি বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য কবি আবিদ আজম।

হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে। শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য কেটেছে নিজের শহরেই। ১৯৬৭ সালে নেত্রকোনা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় রচিত ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ কবিতাটি তাকে প্রথম পরিচিতি পাইয়ে দেয়।

তার প্রথম কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত বইটির মুদ্রণ হয়েছে ৩৩ বারেরও বেশি। লেখালেখির পাশাপাশি হেলাল হাফিজ দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন। ১৯৮৬ সালে প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘যে জ্বলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশের পর জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন কবি।

দেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলেন সময় হেলাল হাফিজের ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র পঙক্তি ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ উচ্চারিত হয় মিছিলে, স্লোগানে, কবিতাপ্রেমীদের মুখে মুখে।

২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। ২০১২ সালে ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ কাব্যগ্রন্থের কবিতার সঙ্গে কিছু কবিতা যুক্ত করে প্রকাশ করা হয় তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা একাত্তর’। সবশেষ ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয় তৃতীয় কবিতার বই ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ভোটের মাঠে থাকবেন ৬০ হাজার সেনাসদস্য

কবি হেলাল হাফিজ আর নেই

প্রকাশের সময় : ০৪:৩৮:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

কবি হেলাল হাফিজ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চলচ্চিত্র নির্মাতা কবিবন্ধু শবনব ফেরদৌসী বলেন, কবি যে হোস্টেলে থাকতেন, সেখানকার বাথরুমে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করা হয় এবং দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

২০২২ সালে কবি মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এরপর বন্ধু ইসমত শিল্পীর বাসায় কিছুকাল কাটিয়ে ফের একাকী জীবনে ফিরে যান তিনি। তার চিরচেনা শাহবাগের সুপার হোম হোস্টেলেই শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত কাটিয়ে গেলেন হেলাল হাফিজ। কবি ডায়াবেটিস, কিডনি আর গ্লুকোমার পাশাপাশি বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য কবি আবিদ আজম।

হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে। শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য কেটেছে নিজের শহরেই। ১৯৬৭ সালে নেত্রকোনা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় রচিত ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ কবিতাটি তাকে প্রথম পরিচিতি পাইয়ে দেয়।

তার প্রথম কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত বইটির মুদ্রণ হয়েছে ৩৩ বারেরও বেশি। লেখালেখির পাশাপাশি হেলাল হাফিজ দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন। ১৯৮৬ সালে প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘যে জ্বলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশের পর জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন কবি।

দেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলেন সময় হেলাল হাফিজের ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র পঙক্তি ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ উচ্চারিত হয় মিছিলে, স্লোগানে, কবিতাপ্রেমীদের মুখে মুখে।

২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। ২০১২ সালে ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ কাব্যগ্রন্থের কবিতার সঙ্গে কিছু কবিতা যুক্ত করে প্রকাশ করা হয় তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা একাত্তর’। সবশেষ ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয় তৃতীয় কবিতার বই ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’।