Dhaka বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কথা পরিষ্কার, আ.লীগের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি : ফখরুল

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে আবারও পুনর্ব্যক্ত করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতায় টিকে থাকতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে এখন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে চায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু আমাদের পরিষ্কার কথা এই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে বিশ্বাস করে না। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না।

শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিদ্যুৎ, চাল, ডাল, তেল, কৃষি উপকরণ ও শিক্ষা উপকরণসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং ‘বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন’ ও বেগম খালেদা জিয়ার ‘নিঃশর্ত মুক্তি’সহ ১০ দফা দাবি আদায়ের উদ্দেশে এ মানববন্ধন করবে বিএনপি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার বিএনপিকে নির্মূল ও বিএনপি নেতৃত্বকে ধ্বংস করতে চায়। এরা পরিকল্পিতভাবে দেশের সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে দেশের মানুষকে আর বোকা বানানো যাবে না। এরা আজকে ঘুষ দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সামনে বিকল্প কোনো পথ নেই। সরকার অনেক রকমের চক্রান্ত শুরু করেছে। পঞ্চগড়ের সাম্প্রদায়িকতার ঘটনা তৈরি করতে চেয়েছে। ভুলে গেলে চলবে না দেশের মানুষকে আর বোকা বানানো যাবে না। আমরা যখন দুর্নীতির কথা বলছি তখন তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়। তারা নানা ধরনের উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের পতন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে মানুষ দাঁড়িয়েছে। দিন দিন আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে সেই আন্দোলনের উত্তাল তরঙ্গের মতো ভাসিয়ে নিয়ে যাবে এই সরকারকে, তখন আর পালানোর পথ পাবে না।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, সংগঠিত হন মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়ুন মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করুন। উত্তাল তরঙ্গের মতো আন্দোলন সৃষ্টি করে এদেরকে পরাজিত করতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার খায়েশ হয়েছে। তাই তারা নীল নকশার মাধ্যমে ২০২৪ এর নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু বিএনপি শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকারের অধীনে, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আমরা ১০ দফা দিয়েছি। সেখানে আমরা উল্লেখ করেছি, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। তাদের অধীনে নির্বাচন হবে। এই বাইরে কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, মন্ত্রীরা কথায় কথায় বলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার কবরস্থানে চলে গেছে। আপনারা যখন জামায়াত-জাতীয় পার্টিকে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিলেন। ১৭৩ দিন অগ্নিসন্ত্রাস করেছেন। লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। এখন সংবিধান কেটে ছিঁড়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে এ কথা বলছেন।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আমাদের সামনে কোনো বিকল্প পথ নেই। অনেক রকমের চক্রান্ত আবার শুরু করেছে। পঞ্চগড়ে একটা সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তারা ঘটিয়ে বিএনপির ১৮১জন নেতাকে গ্রেফতার করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এসব নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। গায়েবি মামলা দিয়ে মানুষকে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না।

মানববন্ধন কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আজকে ঢাকা মহানগরে উত্তরা থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ি পর্যন্ত মানুষ দাঁড়িয়ে গেছে। সারাদেশের জেলাগুলোতে মানুষ দাঁড়িয়ে গেছে। এভাবে সমাবেশের পর সমাবেশ, মানববন্ধনের পর মানববন্ধন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে আমরা জনগণকে সম্পৃক্ত করব।

আ.লীগ সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, মানুষেরও ধৈর্য্যের সীমা আছে। আপনারা আর কতদিন মানুষকে বোকা বানিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান। সমস্ত মানুষ এক হয়ে উত্তাল তরঙ্গের মতো আপনাদের ভাসিয়ে নিয়ে চলে যাবে। আপনারা পালাবার কোনো পথ খুঁজে পাবেন না।

দিনদুপুরে ব্যাংকের ১১ কোটি টাকা ছিনতাইকে সাজানো নাটক দাবি করে তিনি বলেন, আজকে ব্যাংকের ১১ কোটি টাকা দিনে দুপুরে চড়-থাপ্পড় দিয়ে হাইজ্যাক করা হয়। কি সাজানো নাটক? সবাই মিলে ভাগবাটোয়ারা করে এখন বলছে, ৯ কোটি নয়, তিন কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। বাকি টাকা কোথায় গেল, এর জবাব দেবে কে?

মির্জা ফখরুল বলেন, এই অবৈধ সরকার দেশটাকে নরকে পরিণত করেছে। আজকেও পত্রিকায় ছবি আছে, বিল্ডিং ভেঙে পড়ছে। ছাদের রড বেরিয়ে গেছে, কংক্রিট নাই। কারা তৈরি করেছে এগুলো? দেখার দায়িত্ব কাদের? তার নীচে বসে এখনও হাজার হাজার লোক ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। সিদ্দিকবাজারে ভবন বিস্ফোরিত হয়ে উড়ে গেল। ২২ জন মারা গেল। কারণ যারা দায়িত্বে আছেন তারা দেখেননি। সায়েন্সল্যাব মোড়ে ভবন উড়ে গেল, তিনজন মারা গেল। চট্টগ্রামে মানুষ মারা গেল। কে দায় নেবে?

এসব বিস্ফোরণ-দুর্ঘটনার সব দায় সরকারের জানিয়ে তিনি বলেন, যাদের একমাত্র কাজ হচ্ছে এই দেশের মানুষকে শোষণ করা, লুট করা, বিদেশে টাকা পাচার করা। এ কথা আমার নয়। আজকে গার্ডিয়ান পত্রিকা বলছে বাংলাদেশের উন্নয়নের ফানুস দুর্নীতির কারণে চুপসে গেছে। এমন ভয়াবহ দুর্নীতি চলছে দেশে।

ভারতের ব্যবসায়ী গ্রুপ আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের যে চুক্তি হয়েছে, সেটা বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থবিরোধী চুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, দেশের মানুষ সোচ্চার হয়েছে, প্রতিবাদ করছে, আদানির সঙ্গে যে বিদ্যুৎ চুক্তি হয়েছে এটা বাংলাদেশের স্বার্থের বিরোধী চুক্তি। আমরা প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে বলেছি, এ চুক্তি কোনো মতেই বাংলাদেশের পক্ষে যেতে পারে না। সেটা দেশের মানুষের ক্ষতি করবে। বিদেশে থেকেও প্রশ্ন করা হচ্ছে, কিভাবে বাংলাদেশের সরকার এ চুক্তি সই করল। চুক্তি করেছে এ জন্য, তার স্বার্থে। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। ঘুষ দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার কতটা দেউলিয়া হয়ে গেছে, কতটা দুর্নীতি করেছে যে, ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পরীক্ষামূলকভাবে আদানির কাছ থেকে নেওয়া শুরু করেছে। এ দেশের মানুষকে উপেক্ষা করে, তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার থেকে বঞ্চিত করে পকেট কেটে নিজেদের রক্ষায় টাকার পাহাড় বানাতে চায়, ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। কিন্তু এ দেশের মানুষ সেটা আর কখনো হতে দেবে না।

মানববন্ধন থেকে বিএনপির মহাসচিব আগামী ১৮ মার্চ শনিবার সারাদেশের সকল মহানগরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচির ঘোষণা করেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ। পরিচালনা করেন মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু। দুপুর ১২টায় মানববন্ধন শেষ করা হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

কথা পরিষ্কার, আ.লীগের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি : ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৩:০৭:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে আবারও পুনর্ব্যক্ত করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতায় টিকে থাকতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে এখন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে চায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু আমাদের পরিষ্কার কথা এই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে বিশ্বাস করে না। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না।

শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিদ্যুৎ, চাল, ডাল, তেল, কৃষি উপকরণ ও শিক্ষা উপকরণসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং ‘বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন’ ও বেগম খালেদা জিয়ার ‘নিঃশর্ত মুক্তি’সহ ১০ দফা দাবি আদায়ের উদ্দেশে এ মানববন্ধন করবে বিএনপি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার বিএনপিকে নির্মূল ও বিএনপি নেতৃত্বকে ধ্বংস করতে চায়। এরা পরিকল্পিতভাবে দেশের সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে দেশের মানুষকে আর বোকা বানানো যাবে না। এরা আজকে ঘুষ দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সামনে বিকল্প কোনো পথ নেই। সরকার অনেক রকমের চক্রান্ত শুরু করেছে। পঞ্চগড়ের সাম্প্রদায়িকতার ঘটনা তৈরি করতে চেয়েছে। ভুলে গেলে চলবে না দেশের মানুষকে আর বোকা বানানো যাবে না। আমরা যখন দুর্নীতির কথা বলছি তখন তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়। তারা নানা ধরনের উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের পতন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে মানুষ দাঁড়িয়েছে। দিন দিন আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে সেই আন্দোলনের উত্তাল তরঙ্গের মতো ভাসিয়ে নিয়ে যাবে এই সরকারকে, তখন আর পালানোর পথ পাবে না।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, সংগঠিত হন মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়ুন মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করুন। উত্তাল তরঙ্গের মতো আন্দোলন সৃষ্টি করে এদেরকে পরাজিত করতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার খায়েশ হয়েছে। তাই তারা নীল নকশার মাধ্যমে ২০২৪ এর নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু বিএনপি শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকারের অধীনে, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আমরা ১০ দফা দিয়েছি। সেখানে আমরা উল্লেখ করেছি, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। তাদের অধীনে নির্বাচন হবে। এই বাইরে কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, মন্ত্রীরা কথায় কথায় বলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার কবরস্থানে চলে গেছে। আপনারা যখন জামায়াত-জাতীয় পার্টিকে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিলেন। ১৭৩ দিন অগ্নিসন্ত্রাস করেছেন। লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। এখন সংবিধান কেটে ছিঁড়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে এ কথা বলছেন।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আমাদের সামনে কোনো বিকল্প পথ নেই। অনেক রকমের চক্রান্ত আবার শুরু করেছে। পঞ্চগড়ে একটা সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তারা ঘটিয়ে বিএনপির ১৮১জন নেতাকে গ্রেফতার করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এসব নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। গায়েবি মামলা দিয়ে মানুষকে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না।

মানববন্ধন কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আজকে ঢাকা মহানগরে উত্তরা থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ি পর্যন্ত মানুষ দাঁড়িয়ে গেছে। সারাদেশের জেলাগুলোতে মানুষ দাঁড়িয়ে গেছে। এভাবে সমাবেশের পর সমাবেশ, মানববন্ধনের পর মানববন্ধন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে আমরা জনগণকে সম্পৃক্ত করব।

আ.লীগ সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, মানুষেরও ধৈর্য্যের সীমা আছে। আপনারা আর কতদিন মানুষকে বোকা বানিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান। সমস্ত মানুষ এক হয়ে উত্তাল তরঙ্গের মতো আপনাদের ভাসিয়ে নিয়ে চলে যাবে। আপনারা পালাবার কোনো পথ খুঁজে পাবেন না।

দিনদুপুরে ব্যাংকের ১১ কোটি টাকা ছিনতাইকে সাজানো নাটক দাবি করে তিনি বলেন, আজকে ব্যাংকের ১১ কোটি টাকা দিনে দুপুরে চড়-থাপ্পড় দিয়ে হাইজ্যাক করা হয়। কি সাজানো নাটক? সবাই মিলে ভাগবাটোয়ারা করে এখন বলছে, ৯ কোটি নয়, তিন কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। বাকি টাকা কোথায় গেল, এর জবাব দেবে কে?

মির্জা ফখরুল বলেন, এই অবৈধ সরকার দেশটাকে নরকে পরিণত করেছে। আজকেও পত্রিকায় ছবি আছে, বিল্ডিং ভেঙে পড়ছে। ছাদের রড বেরিয়ে গেছে, কংক্রিট নাই। কারা তৈরি করেছে এগুলো? দেখার দায়িত্ব কাদের? তার নীচে বসে এখনও হাজার হাজার লোক ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। সিদ্দিকবাজারে ভবন বিস্ফোরিত হয়ে উড়ে গেল। ২২ জন মারা গেল। কারণ যারা দায়িত্বে আছেন তারা দেখেননি। সায়েন্সল্যাব মোড়ে ভবন উড়ে গেল, তিনজন মারা গেল। চট্টগ্রামে মানুষ মারা গেল। কে দায় নেবে?

এসব বিস্ফোরণ-দুর্ঘটনার সব দায় সরকারের জানিয়ে তিনি বলেন, যাদের একমাত্র কাজ হচ্ছে এই দেশের মানুষকে শোষণ করা, লুট করা, বিদেশে টাকা পাচার করা। এ কথা আমার নয়। আজকে গার্ডিয়ান পত্রিকা বলছে বাংলাদেশের উন্নয়নের ফানুস দুর্নীতির কারণে চুপসে গেছে। এমন ভয়াবহ দুর্নীতি চলছে দেশে।

ভারতের ব্যবসায়ী গ্রুপ আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের যে চুক্তি হয়েছে, সেটা বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থবিরোধী চুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, দেশের মানুষ সোচ্চার হয়েছে, প্রতিবাদ করছে, আদানির সঙ্গে যে বিদ্যুৎ চুক্তি হয়েছে এটা বাংলাদেশের স্বার্থের বিরোধী চুক্তি। আমরা প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে বলেছি, এ চুক্তি কোনো মতেই বাংলাদেশের পক্ষে যেতে পারে না। সেটা দেশের মানুষের ক্ষতি করবে। বিদেশে থেকেও প্রশ্ন করা হচ্ছে, কিভাবে বাংলাদেশের সরকার এ চুক্তি সই করল। চুক্তি করেছে এ জন্য, তার স্বার্থে। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। ঘুষ দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার কতটা দেউলিয়া হয়ে গেছে, কতটা দুর্নীতি করেছে যে, ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পরীক্ষামূলকভাবে আদানির কাছ থেকে নেওয়া শুরু করেছে। এ দেশের মানুষকে উপেক্ষা করে, তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার থেকে বঞ্চিত করে পকেট কেটে নিজেদের রক্ষায় টাকার পাহাড় বানাতে চায়, ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। কিন্তু এ দেশের মানুষ সেটা আর কখনো হতে দেবে না।

মানববন্ধন থেকে বিএনপির মহাসচিব আগামী ১৮ মার্চ শনিবার সারাদেশের সকল মহানগরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচির ঘোষণা করেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ। পরিচালনা করেন মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু। দুপুর ১২টায় মানববন্ধন শেষ করা হয়।