নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেও বলেন, অক্টোবর মাস শেষ। আরও কত অক্টোবর আসবে-যাবে, তখন দেখা যাবে কারা থাকে। আমরা লড়াই-সংগ্রাম করে এতদূর এসেছি।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য লড়াই করছে। অতীতে তারা (বিএনপি) গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। প্রহসনের নির্বাচনের নামে ভুয়া ভোটার লিস্ট তৈরি করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ লড়াই সংগ্রাম করে এখানে এসেছে। আমাদের আন্দোলন করে হটানোর ভয় দেখায় বিএনপি। আমাদের আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।
বিএনপি অতীতে প্রহসনের নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছে তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা বেমানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের নেতা-কর্মীদের থেকে উত্তাল সাগরের গর্জন শুনতে চাই। আমরা শান্তি চাই। তবে কেউ রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে অশান্তি করতে আসলে খবর আছে। অশান্তি চাইলে পরিস্থিতি বলে দেবে অশান্তি কাকে বলে। ভয় দেখাবেন না। ভয়-ডর আমরা পায়ে ডলে এসেছি বহুদিন আগে।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি আবারও ভুল পথে হাঁটছে। দিনক্ষণ দিয়ে যারা আন্দোলনের ডাক দেয়, তাদের আন্দোলন খাদে গিয়ে পড়ে। তাদের ভুলে গোলাপবাগের গরুর হাটে গিয়েছে তাদের আন্দোলন। বিএনপির রাস্তা দখলের রঙিন খোয়াবের বেলুন চুপসে যাবে, অপেক্ষা করুন।
বন্দুকের নল বিএনপির ক্ষমতার উৎস উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারাই আওয়ামী লীগকে উৎখাত করার ভয় দেখায়। বিএনপি গণতন্ত্রকে উদ্ধারের নামে মূলত ধ্বংস করতে চায়। যে বিএনপি গনতন্ত্রকে হত্যা করেছিল, সে বিএনপির গণতন্ত্রের কথা বলতে লজ্জাও লাগে না? আওয়ামী লীগ শান্তি না চাইলে বিএনপি একটি সমাবেশও করতে পারত না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে বিএনপির প্রতি যে ধৈর্য্য দেখিয়েছে, তা অবাক করার মত।
ক্ষমতাসীন দল হয়েও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছেন মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, গত এক বছর ধরে শান্তি সমাবেশ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ অশান্তি চাইলে বিএনপি কী সমাবেশ করতে পারত। ক্ষমতাসীন দল হয়েও দলের কর্মীরা ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি প্রহসনের নির্বাচন করেছে। ভোটার লিস্ট তৈরি করেছে। যারা গণতন্ত্রকে গলা টিপে মেরেছে, সেই দলের লজ্জা হওয়া উচিত।
জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাস্টারমাইন্ড এমন মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, অবলা নারী, শিশুসহ হত্যার কারণে আওয়ামী লীগের মনে অনেক বেদনা আছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকের বর্ধিত সভার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক। আন্দোলন সংগ্রাম করে এই পার্টি একাধারে ১৫ বছর ক্ষমতায়। খালেদা জিয়া একসময় বলেছিলেন আওয়ামী লীগ এক শ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এখনও আমরা ক্ষমতায় আছি।
বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সংগ্রাম আন্দোলন করে আমরা এতদূর পথ এসেছি। বন্দুকের নল যাদের ক্ষমতার উৎস, তারা আমাদের ক্ষমতার ভয় দেখায়।
বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে মারা যাওয়ার শেখ হাসিনা শোক জানাতে গিয়েছিল। কর্ণপাত করেনি। একুশে নভেম্বর শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। সেই দলের সঙ্গে কীভাবে সমঝোতা করি? আওয়ামী লীগের আমলে কী বিএনপি কোনো নেতাকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে?
ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৫ আগস্টের ঘটনা ভুলে দেওয়ার জন্য খালেদা জিয়া জন্মদিন পালন করে? খালেদা জিয়ার একটি নয়, ছয়টি জন্ম দিন। আওয়ামী লীগ অশান্তি সৃষ্টি করলে বিএনপি দাঁড়াতে পারত না। বিএনপি আবারও ভুল পথে হাঁটছে।
বিএনপি রঙ্গিন স্বপ্ন দেখছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দিনক্ষণ তারিখ দিয়ে আন্দোলন হয় না। দিনক্ষণ দিয়ে আন্দোলনের ডাক দিলে সেই আন্দোলন খাদে গিয়ে পড়ে। ফাঁপা বেলুন চুপসে যাবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে মানুষের সেবা করার জন্য। আওয়ামী লীগ অশান্তি করবে না, তবে কেউ যদি অশান্তি করতে চায় তাদের খবর আছে? সহ্য অনেক করেছি। সহ্যের একটা সীমা আছে। অশান্তি হলে ছাড় দেওয়া হবে না। ভয় আমাদের দেখাবেন না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী। আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, শাজাহান খানসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।