Dhaka বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে সিরিজ হার বাংলাদেশের

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১০:১৯:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৯১ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

বাংলাদেশের জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২১ রান। প্রথম বলেই ২ রান নেন সাকিব। এরপর ওয়াইড দেন আকিল। দ্বিতীয় বল থেকে এক রান নিলে স্ট্রাইক পান রিশাদ। তৃতীয় বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন তিনি। রিশাদ আউট হলে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা কার্যত শেষই হয়ে যায়! শেষ ৩ বলে ১৭ রানের সমীকরণ মেলাতে চেষ্টা করেছেন নাসুম-সাকিব। তবে পারেননি। ১৪ রানের এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন হোপ। জবাবে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান করে বাংলাদেশ।

যদিও লক্ষ্য তাড়ায় নেমে বাংলাদেশের সূচনাটা ভালো না হলেও কাজটা সহজ করে দিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান ফিল্ডাররা। চারটি সহজ ক্যাচ ছাড়েন তারা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই জীবন সাইফ হাসান। ছক্কার চেষ্টায় মিডঅফ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন এই ওপেনার। কিন্তু সে ক্যাচ ধরতে পারেননি ব্রান্ডন কিং। যদিও ৫ রানের বেশি করতে পারেননি সাইফ।

আর ষষ্ঠ ওভারে জীবন পান লিটন দাস। রোমারিও শেফার্ডের বলে এক্রোস দ্য লাইন খেলতে গিয়ে লিডিংএজ হয়ে আকাশে তুলে দিয়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক। কিন্তু সহজ সেই ক্যাচ অবিশ্বাস্যভাবে ফেলে দেন রাদারফোর্ড। জীবন পেয়ে আর দুই রান যোগ করে ব্যক্তিগত ২৩ রানে বিদায় নেন আকিল হোসেনের বলে বোল্ড হয়ে।

একাদশ ওভারে আরও একটি। এবার জীবন পান তাওহিদ হৃদয়। স্কয়ারলেগে এবার ক্যাচ ছাড়েন জেডন সিলস। যদিও আগের দুই ব্যাটারের মতো জীবন কাজে লাগেনি তারও। ব্যক্তিগত ১২ রানে বিদায় নেন শেফার্ডের বলে।

১৪তম ওভারে আলিক আথেনিজের ক্যাচ মিস ম্যাচের সবচেয়ে সহজটি। এবার জীবন পান তানজিদ হাসান। মিড উইকেট সীমানায় যখন তিনি ক্যাচ তুলে দেন, তখন তিনি ব্যাট করছেন ৪৪ রানে। এরপর তুলে নেন ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি। তা অবশ্য যথেষ্ট হয়নি। শেফার্ডের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন কিংয়ের হাতে। ৪৮ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় খেলেন ৬১ রানের ইনিংস।

আগের সিরিজের অধিনায়ক জাকের আলী অনিক, যিনি আগের ম্যাচে বাদ পড়েছিলেন পারফরম্যান্সের কারণে, সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ১৮ বলে ১৭ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন শেফার্ডের তৃতীয় শিকার হয়ে। এরপর শামিম হোসেন, রিশাদ হোসেনও ব্যর্থ। ফলে আরও একটি হার মেনে নিতে হয় টাইগারদের।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২২ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন আকিল হোসেন। ২৯ রানের বিনিময়ে তিনটি শিকার শেফার্ডেরও। এছাড়া ২টি উইকেট পান জেসন হোল্ডার।

এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই আগের ম্যাচে ৩৩ রান করা ব্র্যান্ডন কিংকে ফিরিয়ে ভালো সূচনা এনে দেন তাসকিন আহমেদ। তবে এরপর অধিনায়ক শেই হোপ ও আথানেজ মিলে দলকে এগিয়ে নেন দৃঢ়ভাবে। দুজন মিলে মাত্র ৫৯ বলে গড়ে তোলেন ১০৬ রানের ঝড়ো এক জুটি। পাওয়ার প্লেতেই আসে ৫০ রান, আর ১০.৫ ওভারে স্পর্শ করে দলীয় শতক।

দ্বাদশ ওভারে নাসুম আহমেদ এনে দেন কাঙ্ক্ষিত ব্রেকথ্রু। তাকে লং অনে হাঁকাতে গিয়ে মিডউইকেটে তানজিদ হাসানের হাতে ধরা পড়েন আথানেজ। পরের বলেই শেরফেইন রাদারফোর্ডকে বোল্ড করে ফেরান এই বাঁহাতি স্পিনার। দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে ছন্দপতন ঘটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে।

এরপর পরের ওভারে বল হাতে নিয়ে সেট ব্যাটার হোপকেও ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান। তাতেই পুরো ম্যাচের মোমেন্টাম ঘুরে যায় বাংলাদেশের দিকে।

১৫তম ওভারে বোলিংয়ে ফিরে জোড়া আঘাত হানেন রিশাদ হোসেন, যিনি নিজের প্রথম ওভারে দুটি ছক্কা হজম করে দিয়েছিলেন ১৫ রান। এবার তিনি উইকেটে টিকে থাকার লড়াইয়ে থাকা রভম্যান পাওয়েলকে ফেরানোর পর তুলে নেন জেসন হোল্ডারকেও। ১২ রানের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ক্যারিবিয়ানরা।

পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছুটা সতর্কভাবে এগিয়ে যান রোস্টন চেজ ও রোমারিও শেফার্ড। ২৭ বলে ২৬ রানের ছোট একটি জুটি গড়েন তারা। তবে শেষ ওভারে মোস্তাফিজকে আক্রমণ করতে গিয়ে আউট হন শেফার্ড। পরের বলেই খেরে পিয়েরে বোল্ড হন, আর শেষ বলে রানআউট হয়ে ফেরেন আকিল হোসেন। ফলে দেড়শর আগেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন অধিনায়ক হোপ, ৩৬ বলের ইনিংসে ৩টি করে চার ও ছক্কা। আথানেজের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ বলে ৫২ রান, যাতে ছিল ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা। অপরাজিত থাকেন রোস্টন চেজ ১৭ রানে।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল মোস্তাফিজুর রহমান, ২১ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট। নাসুম আহমেদ ও রিশাদ হোসেন পান ২টি করে উইকেট।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে সিরিজ হার বাংলাদেশের

প্রকাশের সময় : ১০:১৯:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক : 

বাংলাদেশের জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২১ রান। প্রথম বলেই ২ রান নেন সাকিব। এরপর ওয়াইড দেন আকিল। দ্বিতীয় বল থেকে এক রান নিলে স্ট্রাইক পান রিশাদ। তৃতীয় বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন তিনি। রিশাদ আউট হলে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা কার্যত শেষই হয়ে যায়! শেষ ৩ বলে ১৭ রানের সমীকরণ মেলাতে চেষ্টা করেছেন নাসুম-সাকিব। তবে পারেননি। ১৪ রানের এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন হোপ। জবাবে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান করে বাংলাদেশ।

যদিও লক্ষ্য তাড়ায় নেমে বাংলাদেশের সূচনাটা ভালো না হলেও কাজটা সহজ করে দিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান ফিল্ডাররা। চারটি সহজ ক্যাচ ছাড়েন তারা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই জীবন সাইফ হাসান। ছক্কার চেষ্টায় মিডঅফ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন এই ওপেনার। কিন্তু সে ক্যাচ ধরতে পারেননি ব্রান্ডন কিং। যদিও ৫ রানের বেশি করতে পারেননি সাইফ।

আর ষষ্ঠ ওভারে জীবন পান লিটন দাস। রোমারিও শেফার্ডের বলে এক্রোস দ্য লাইন খেলতে গিয়ে লিডিংএজ হয়ে আকাশে তুলে দিয়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক। কিন্তু সহজ সেই ক্যাচ অবিশ্বাস্যভাবে ফেলে দেন রাদারফোর্ড। জীবন পেয়ে আর দুই রান যোগ করে ব্যক্তিগত ২৩ রানে বিদায় নেন আকিল হোসেনের বলে বোল্ড হয়ে।

একাদশ ওভারে আরও একটি। এবার জীবন পান তাওহিদ হৃদয়। স্কয়ারলেগে এবার ক্যাচ ছাড়েন জেডন সিলস। যদিও আগের দুই ব্যাটারের মতো জীবন কাজে লাগেনি তারও। ব্যক্তিগত ১২ রানে বিদায় নেন শেফার্ডের বলে।

১৪তম ওভারে আলিক আথেনিজের ক্যাচ মিস ম্যাচের সবচেয়ে সহজটি। এবার জীবন পান তানজিদ হাসান। মিড উইকেট সীমানায় যখন তিনি ক্যাচ তুলে দেন, তখন তিনি ব্যাট করছেন ৪৪ রানে। এরপর তুলে নেন ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি। তা অবশ্য যথেষ্ট হয়নি। শেফার্ডের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন কিংয়ের হাতে। ৪৮ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় খেলেন ৬১ রানের ইনিংস।

আগের সিরিজের অধিনায়ক জাকের আলী অনিক, যিনি আগের ম্যাচে বাদ পড়েছিলেন পারফরম্যান্সের কারণে, সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ১৮ বলে ১৭ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন শেফার্ডের তৃতীয় শিকার হয়ে। এরপর শামিম হোসেন, রিশাদ হোসেনও ব্যর্থ। ফলে আরও একটি হার মেনে নিতে হয় টাইগারদের।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২২ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন আকিল হোসেন। ২৯ রানের বিনিময়ে তিনটি শিকার শেফার্ডেরও। এছাড়া ২টি উইকেট পান জেসন হোল্ডার।

এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই আগের ম্যাচে ৩৩ রান করা ব্র্যান্ডন কিংকে ফিরিয়ে ভালো সূচনা এনে দেন তাসকিন আহমেদ। তবে এরপর অধিনায়ক শেই হোপ ও আথানেজ মিলে দলকে এগিয়ে নেন দৃঢ়ভাবে। দুজন মিলে মাত্র ৫৯ বলে গড়ে তোলেন ১০৬ রানের ঝড়ো এক জুটি। পাওয়ার প্লেতেই আসে ৫০ রান, আর ১০.৫ ওভারে স্পর্শ করে দলীয় শতক।

দ্বাদশ ওভারে নাসুম আহমেদ এনে দেন কাঙ্ক্ষিত ব্রেকথ্রু। তাকে লং অনে হাঁকাতে গিয়ে মিডউইকেটে তানজিদ হাসানের হাতে ধরা পড়েন আথানেজ। পরের বলেই শেরফেইন রাদারফোর্ডকে বোল্ড করে ফেরান এই বাঁহাতি স্পিনার। দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে ছন্দপতন ঘটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে।

এরপর পরের ওভারে বল হাতে নিয়ে সেট ব্যাটার হোপকেও ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান। তাতেই পুরো ম্যাচের মোমেন্টাম ঘুরে যায় বাংলাদেশের দিকে।

১৫তম ওভারে বোলিংয়ে ফিরে জোড়া আঘাত হানেন রিশাদ হোসেন, যিনি নিজের প্রথম ওভারে দুটি ছক্কা হজম করে দিয়েছিলেন ১৫ রান। এবার তিনি উইকেটে টিকে থাকার লড়াইয়ে থাকা রভম্যান পাওয়েলকে ফেরানোর পর তুলে নেন জেসন হোল্ডারকেও। ১২ রানের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ক্যারিবিয়ানরা।

পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছুটা সতর্কভাবে এগিয়ে যান রোস্টন চেজ ও রোমারিও শেফার্ড। ২৭ বলে ২৬ রানের ছোট একটি জুটি গড়েন তারা। তবে শেষ ওভারে মোস্তাফিজকে আক্রমণ করতে গিয়ে আউট হন শেফার্ড। পরের বলেই খেরে পিয়েরে বোল্ড হন, আর শেষ বলে রানআউট হয়ে ফেরেন আকিল হোসেন। ফলে দেড়শর আগেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন অধিনায়ক হোপ, ৩৬ বলের ইনিংসে ৩টি করে চার ও ছক্কা। আথানেজের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ বলে ৫২ রান, যাতে ছিল ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা। অপরাজিত থাকেন রোস্টন চেজ ১৭ রানে।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল মোস্তাফিজুর রহমান, ২১ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট। নাসুম আহমেদ ও রিশাদ হোসেন পান ২টি করে উইকেট।