Dhaka শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৮:২৯:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৮১ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

মিরপুরে স্পিনের ঘূর্ণিতে ধসে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ! সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে ব্যাটে-বলে দারুণ আধিপত্য দেখিয়ে ১৭৯ রানের বিশাল জয়ে ক্যারিবীয়দের গুঁড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে দেড় বছর পর ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল টাইগাররা।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের দেওয়া ২৯৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৩০.১ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে মাত্র ১১৭ রানেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে ২–১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় লাল-সবুজরা।

সিরিজ জিতলেও ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে দশেই থাকছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারলে নয়ে উঠতে পারতেন মেহেদী হাসান মিরাজরা।

ওয়ানডেতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা জয় এটি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এটিই রেকর্ড। এর চেয়ে বড় জয় আছে কেবল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২০২৩ সালে ১৮৩ রানে। এই জয়ে টানা চার সিরিজ হারার পর একটু স্বস্তির ছোঁয়া পেল বাংলাদেশের ওয়ানডে দল। র‌্যাঙ্কিংয়ে অবশ্য পড়ে থাকতে হচ্ছে সেই ১০ নম্বরেই।

২৯৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপাকে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৬ রানেই ভাঙে ক্যারিনীয়দের উদ্বোধনী জুটি। নাসুম আহমেদের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে আউট হন অলিক আথানেজ। ফেরার আগে অবশ্য তিনি করেন ২১ বলে ১৫ রান। এরপর ক্যারিবীয়দের বাকি দুই উইকেটও তুলে নেন নাসুমই।

দলীয় ২৮ রানে আউট আকিম অগাস্টে, ৩৫ রানে আউট হন ব্র্যান্ডন কিং। ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এরপর উইকেট নেওয়ার উৎসবে যোগ দেন রিশাদ হোসেন। তরুণ এই স্পিনারের বলে আউট হন শেরফান রাদারফোর্ড, রোস্টন চেজ। এর আগে অবশ্য অধিনায়ক শাই হোপকে ফিরিয়েছিলেন তানভির ইসলাম।

এক পর্যায়ে ৬৩ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলীয় একশ রানের আগেই অল আউট হওয়ার শঙ্কাও জেগেছিল ক্যারিবীয়দের সামনে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তিন অঙ্ক ছুঁতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে বড় হার এড়াতে পারেনি তারা। টাইগার স্পিনারদের ঘূর্ণিতে শেষ পর্যন্ত ১১৭ রানেই অল আউট হয় ক্যারিবীয়রা। ১৭৯ রানের বিশাল জয় পায় বাংলাদেশ, ওয়ানডেতে যা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বড় জয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আগের বড় জয়টা ছিল ১৬০ রানের, ২০১২ সালে খুলনায়।

ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে আজকের ম্যাচে বল হাতে দুর্দান্ত করেছেন টাইগার স্পিনাররা। ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন রিশাদ ও নাসুম। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মিরাজ ও তানভীর। এর আগে ব্যাট করতে নেমে সাইফ-সৌম্যর ১৭৬ রানের রেকর্ড উদ্বোধনী জুটিতে ২৯৬ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান দলে থাকলেও একটি বলও করেননি। বাংলাদেশের সবগুলো ওভারই করেছেন স্পিনাররা।

এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই দুই চার মেরে ভালো শুরুর বার্তা দিয়েছিলেন সাইফ। এরপর আগ্রাসী রূপে হাজির হন সৌম্য সরকারও। উদ্বোধনী জুটিতে পঞ্চাশ আসে মাত্র ৪৬ বলে। স্পিনে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না দেখে দশম ওভারে পেস বোলিং অলরাউন্ডার জাস্টিন গ্রেভসের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক শাই হোপ। তবে এই পেসারও সুবিধা করতে পারেননি।

দারুণ ব্যাটিংয়ে ৪৮ বলে ব্যক্তিগত পঞ্চাশ স্পর্শ করেন সৌম্য। ওয়ানডেতে এটি তার ১৪তম ফিফটি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ষষ্ঠ। সৌম্যর পর একই মাইলফলক ছুঁয়েছেন আরেক ওপেনার সাইফও। তিনি খেলছেন মাত্র ৪৪ বল। ওয়ানডেতে এটি তার প্রথম ফিফটি।

ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দুই ওপেনারই ছুটছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। বেশ প্রাণবন্তও মনে হচ্ছিল তাদের। কিন্তু ইনিংসের ২৬তম ওভারে প্রথম হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ওভারের দ্বিতীয় বলে রোস্টন চেজকে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে জাস্টিন গ্রিভসের হাতে ধরা পড়েন সাইফ হাসান। ১৭৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৭২ বলে ৬ ছক্কায় ৮০ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার।

সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে ছিলেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার। তিনিও শেষমেশ ক্যাচ আউট হয়ে ফিরেন। ৮৬ বলে ৯১ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।

দুই ওপেনারের বিদায়ের পর রানের গতি অনেকটাই কমে যায়। তাওহিদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত বেশ কিছু ডট বল খেলেন। তাতে উল্টো চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। চাপ কমাতে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন হৃদয়। ৪৪ বলে ২৮ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এরপর শান্ত ফিরেছেন ফিফটির আগে। ৫৫ বলে করেছেন ৪৪ রান।

মিডল অর্ডারে ব্যর্থ মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদরা। আগের দুই ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করা রিশাদকে প্রমোশন দিয়ে নামানো হয় ছয়ে। তবে এবার ৬ বলে করেছেন মাত্র ৩ রান।

শেষদিকে ভাল ফিনিশিং দিয়েছেন নুরুল হাসান। ৮ বলে অপরাজিত ১৬ রান করেছেন তিনি। এ ছাড়া মিরাজ করেছেন ১৭ বলে ১৭ রান।

দুই দল এখন লড়বে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। চট্টগ্রামে তিন ম্যাচের সিরিজটি শুরু সোমবার।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

প্রকাশের সময় : ০৮:২৯:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক : 

মিরপুরে স্পিনের ঘূর্ণিতে ধসে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ! সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে ব্যাটে-বলে দারুণ আধিপত্য দেখিয়ে ১৭৯ রানের বিশাল জয়ে ক্যারিবীয়দের গুঁড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে দেড় বছর পর ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল টাইগাররা।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের দেওয়া ২৯৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৩০.১ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে মাত্র ১১৭ রানেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে ২–১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় লাল-সবুজরা।

সিরিজ জিতলেও ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে দশেই থাকছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারলে নয়ে উঠতে পারতেন মেহেদী হাসান মিরাজরা।

ওয়ানডেতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা জয় এটি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এটিই রেকর্ড। এর চেয়ে বড় জয় আছে কেবল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২০২৩ সালে ১৮৩ রানে। এই জয়ে টানা চার সিরিজ হারার পর একটু স্বস্তির ছোঁয়া পেল বাংলাদেশের ওয়ানডে দল। র‌্যাঙ্কিংয়ে অবশ্য পড়ে থাকতে হচ্ছে সেই ১০ নম্বরেই।

২৯৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপাকে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৬ রানেই ভাঙে ক্যারিনীয়দের উদ্বোধনী জুটি। নাসুম আহমেদের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে আউট হন অলিক আথানেজ। ফেরার আগে অবশ্য তিনি করেন ২১ বলে ১৫ রান। এরপর ক্যারিবীয়দের বাকি দুই উইকেটও তুলে নেন নাসুমই।

দলীয় ২৮ রানে আউট আকিম অগাস্টে, ৩৫ রানে আউট হন ব্র্যান্ডন কিং। ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এরপর উইকেট নেওয়ার উৎসবে যোগ দেন রিশাদ হোসেন। তরুণ এই স্পিনারের বলে আউট হন শেরফান রাদারফোর্ড, রোস্টন চেজ। এর আগে অবশ্য অধিনায়ক শাই হোপকে ফিরিয়েছিলেন তানভির ইসলাম।

এক পর্যায়ে ৬৩ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলীয় একশ রানের আগেই অল আউট হওয়ার শঙ্কাও জেগেছিল ক্যারিবীয়দের সামনে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তিন অঙ্ক ছুঁতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে বড় হার এড়াতে পারেনি তারা। টাইগার স্পিনারদের ঘূর্ণিতে শেষ পর্যন্ত ১১৭ রানেই অল আউট হয় ক্যারিবীয়রা। ১৭৯ রানের বিশাল জয় পায় বাংলাদেশ, ওয়ানডেতে যা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বড় জয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আগের বড় জয়টা ছিল ১৬০ রানের, ২০১২ সালে খুলনায়।

ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে আজকের ম্যাচে বল হাতে দুর্দান্ত করেছেন টাইগার স্পিনাররা। ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন রিশাদ ও নাসুম। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মিরাজ ও তানভীর। এর আগে ব্যাট করতে নেমে সাইফ-সৌম্যর ১৭৬ রানের রেকর্ড উদ্বোধনী জুটিতে ২৯৬ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান দলে থাকলেও একটি বলও করেননি। বাংলাদেশের সবগুলো ওভারই করেছেন স্পিনাররা।

এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই দুই চার মেরে ভালো শুরুর বার্তা দিয়েছিলেন সাইফ। এরপর আগ্রাসী রূপে হাজির হন সৌম্য সরকারও। উদ্বোধনী জুটিতে পঞ্চাশ আসে মাত্র ৪৬ বলে। স্পিনে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না দেখে দশম ওভারে পেস বোলিং অলরাউন্ডার জাস্টিন গ্রেভসের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক শাই হোপ। তবে এই পেসারও সুবিধা করতে পারেননি।

দারুণ ব্যাটিংয়ে ৪৮ বলে ব্যক্তিগত পঞ্চাশ স্পর্শ করেন সৌম্য। ওয়ানডেতে এটি তার ১৪তম ফিফটি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ষষ্ঠ। সৌম্যর পর একই মাইলফলক ছুঁয়েছেন আরেক ওপেনার সাইফও। তিনি খেলছেন মাত্র ৪৪ বল। ওয়ানডেতে এটি তার প্রথম ফিফটি।

ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দুই ওপেনারই ছুটছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। বেশ প্রাণবন্তও মনে হচ্ছিল তাদের। কিন্তু ইনিংসের ২৬তম ওভারে প্রথম হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ওভারের দ্বিতীয় বলে রোস্টন চেজকে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে জাস্টিন গ্রিভসের হাতে ধরা পড়েন সাইফ হাসান। ১৭৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৭২ বলে ৬ ছক্কায় ৮০ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার।

সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে ছিলেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার। তিনিও শেষমেশ ক্যাচ আউট হয়ে ফিরেন। ৮৬ বলে ৯১ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।

দুই ওপেনারের বিদায়ের পর রানের গতি অনেকটাই কমে যায়। তাওহিদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত বেশ কিছু ডট বল খেলেন। তাতে উল্টো চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। চাপ কমাতে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন হৃদয়। ৪৪ বলে ২৮ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এরপর শান্ত ফিরেছেন ফিফটির আগে। ৫৫ বলে করেছেন ৪৪ রান।

মিডল অর্ডারে ব্যর্থ মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদরা। আগের দুই ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করা রিশাদকে প্রমোশন দিয়ে নামানো হয় ছয়ে। তবে এবার ৬ বলে করেছেন মাত্র ৩ রান।

শেষদিকে ভাল ফিনিশিং দিয়েছেন নুরুল হাসান। ৮ বলে অপরাজিত ১৬ রান করেছেন তিনি। এ ছাড়া মিরাজ করেছেন ১৭ বলে ১৭ রান।

দুই দল এখন লড়বে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। চট্টগ্রামে তিন ম্যাচের সিরিজটি শুরু সোমবার।