Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ওয়াসার চার জোনে পানির সমস্যা হচ্ছে : তাকসিম

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঢাকা ওয়াসার দশটি জোনের মধ্যে চারটি জোনে পানির সমস্যা চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য এ সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুর পৌনে দুইটায় কারওয়ান বাজারস্থ ওয়াসা ভবনে চলমান পানি সংকট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তাকসিম এ খান বলেন, আমাদের দশটি জোনের মধ্যে ছয়টিতে পানি সরবরাহ ঠিক আছে। বাকী চারটি জোনে সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যুৎ নিয়মিত না পাওয়ার কারণে পাম্প চালাতে পারছে না ঢাকা ওয়াসা। ফলে ডিপ টিউবওয়েল থেকে পানি উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না।

বসুন্ধরা এলাকার পানি সমস্যা শুক্রবার (৯ জুন) মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

ঢাকা ওয়াসার এমডি জানান, যে সকল এলাকায় পানির সমস্যা হচ্ছে, সেখানে ওয়াসার পানির গাড়ির মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ কাজে ঢাকা ওয়াসার ৪৮টি পানির গাড়ি কাজ করছে। জেনারেটর দিয়ে পাম্পগুলোকে সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু জেনারেটরে বিদ্যুতের মতো প্রেসার পাওয়া যাচ্ছে না। ছোট রাস্তার জন্য ১৭টি ট্রলি গাড়ির মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, অসহনীয় গরম ও লাগামছাড়া লোডশেডিংয়ের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। মূলত পানি সরবরাহ করতে না পারায় সেসব এলাকায় পানি সংকটে পড়েছেন নগরের অনেক এলাকার মানুষ। তবে ঠিকমতো পানি সরবরাহ করতে না পারায় ঢাকা ওয়াসার কোনও দোষ নেই।
তিনি আরো বলেন, সাময়িকভাবে পানি সরবরাহের যে সমস্যা হচ্ছে, বিঘ্নিত হচ্ছে, রাজধানীর অনেক এলাকার মানুষ পানি পাচ্ছে না, এতে ঢাকা ওয়াসার কোনও দোষ নেই। আমাদের প্রোডাকশনের ইকুইপমেন্টে বা যন্ত্রপাতিতে কোনও সমস্যা নেই। বিভিন্ন এলাকায় পানি না পাওয়ার একমাত্র কারণ লোডশেডিং। এখানে আমাদের দিক থেকে কোনও সমস্যা নেই।

তাকসিম এ খান বলেন, আমাদের পানি প্রোডাকশন আমরা করতে পারছি, কিন্তু এটা সাপ্লাই দেওয়ার জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন। কিন্তু কিছুদিন ধরে আমরা ঠিকমতো বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। ফলে আমাদের পাম্পগুলো বন্ধ থাকছে। লোডশেডিংয়ের কারণে পানিতে প্রেসার দিয়ে সরবরাহ করা যাচ্ছে না। পাম্পের ডিপ টিউবওয়েলগুলো বন্ধ থাকছে। ফলে পানি পৌঁছানো যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, তাপমাত্রা কমে গিয়ে বৃষ্টি হলে ও লোডশেডিং কমে গেলে আমরা এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে সঠিকভাবে পানি সরবরাহ করতে পারব। আমরা নিজেরা বার বার মিটিং করে ও কর্মীদের সর্বোচ্চ এফোর্ট দিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি।

ওয়াসার এমডি বলেন, বুধবার (৭ জুন) ২৪০ কোটি লিটার পানি প্রোডাকশন করা গেছে। কিন্তু বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিংয়ের কারণে প্রেসার দিয়ে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া এই বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আশা করছি লোডশেডিংটা কমে গেলে আমরা সঠিকভাবে বিদ্যুৎ পেলে আর পানির সমস্যা থাকবে না।

ওয়াসার এমডি বলেন, মাইকিং করেও পানির সমস্যা কথা জানানো হচ্ছে। পানির ব্যবহার কমানো গেলে ওয়াসার সেবা দেয়া সহজ হয়। যেসব বাড়িতে দুই দিনের পানি মজুদ রাখা হয় সেসব এলাকায় একদিন কমিয়ে অন্য জায়গায় দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। রানিং সময়ে পানি ব্যবহার করলে দুইগুন বেশি পানি খরচ হয়। একটু সাশ্রয়ী হলে দুইদিনের পানি তিনদিন ব্যবহার করা যায়।
পানি ব্যবহারে নগরবাসীকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওয়াসার এমডি বলেন, ‘পানি ব্যবহারে নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। পানি গরম বলে ফেলে দেয়া যাবে না। রানিং পানিতে গোসল না করে বালতিতে পানি ধরে গোসল করার অনুরোধ। তাহলে অনেক পানি থাকবে এবং সেটা অন্যরা ব্যবহার করতে পারবে।’

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজের সুফল পাচ্ছে না সাত গ্রামের মানুষ

ওয়াসার চার জোনে পানির সমস্যা হচ্ছে : তাকসিম

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৩:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঢাকা ওয়াসার দশটি জোনের মধ্যে চারটি জোনে পানির সমস্যা চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য এ সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুর পৌনে দুইটায় কারওয়ান বাজারস্থ ওয়াসা ভবনে চলমান পানি সংকট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তাকসিম এ খান বলেন, আমাদের দশটি জোনের মধ্যে ছয়টিতে পানি সরবরাহ ঠিক আছে। বাকী চারটি জোনে সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যুৎ নিয়মিত না পাওয়ার কারণে পাম্প চালাতে পারছে না ঢাকা ওয়াসা। ফলে ডিপ টিউবওয়েল থেকে পানি উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না।

বসুন্ধরা এলাকার পানি সমস্যা শুক্রবার (৯ জুন) মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

ঢাকা ওয়াসার এমডি জানান, যে সকল এলাকায় পানির সমস্যা হচ্ছে, সেখানে ওয়াসার পানির গাড়ির মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ কাজে ঢাকা ওয়াসার ৪৮টি পানির গাড়ি কাজ করছে। জেনারেটর দিয়ে পাম্পগুলোকে সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু জেনারেটরে বিদ্যুতের মতো প্রেসার পাওয়া যাচ্ছে না। ছোট রাস্তার জন্য ১৭টি ট্রলি গাড়ির মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, অসহনীয় গরম ও লাগামছাড়া লোডশেডিংয়ের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। মূলত পানি সরবরাহ করতে না পারায় সেসব এলাকায় পানি সংকটে পড়েছেন নগরের অনেক এলাকার মানুষ। তবে ঠিকমতো পানি সরবরাহ করতে না পারায় ঢাকা ওয়াসার কোনও দোষ নেই।
তিনি আরো বলেন, সাময়িকভাবে পানি সরবরাহের যে সমস্যা হচ্ছে, বিঘ্নিত হচ্ছে, রাজধানীর অনেক এলাকার মানুষ পানি পাচ্ছে না, এতে ঢাকা ওয়াসার কোনও দোষ নেই। আমাদের প্রোডাকশনের ইকুইপমেন্টে বা যন্ত্রপাতিতে কোনও সমস্যা নেই। বিভিন্ন এলাকায় পানি না পাওয়ার একমাত্র কারণ লোডশেডিং। এখানে আমাদের দিক থেকে কোনও সমস্যা নেই।

তাকসিম এ খান বলেন, আমাদের পানি প্রোডাকশন আমরা করতে পারছি, কিন্তু এটা সাপ্লাই দেওয়ার জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন। কিন্তু কিছুদিন ধরে আমরা ঠিকমতো বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। ফলে আমাদের পাম্পগুলো বন্ধ থাকছে। লোডশেডিংয়ের কারণে পানিতে প্রেসার দিয়ে সরবরাহ করা যাচ্ছে না। পাম্পের ডিপ টিউবওয়েলগুলো বন্ধ থাকছে। ফলে পানি পৌঁছানো যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, তাপমাত্রা কমে গিয়ে বৃষ্টি হলে ও লোডশেডিং কমে গেলে আমরা এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে সঠিকভাবে পানি সরবরাহ করতে পারব। আমরা নিজেরা বার বার মিটিং করে ও কর্মীদের সর্বোচ্চ এফোর্ট দিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি।

ওয়াসার এমডি বলেন, বুধবার (৭ জুন) ২৪০ কোটি লিটার পানি প্রোডাকশন করা গেছে। কিন্তু বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিংয়ের কারণে প্রেসার দিয়ে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া এই বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আশা করছি লোডশেডিংটা কমে গেলে আমরা সঠিকভাবে বিদ্যুৎ পেলে আর পানির সমস্যা থাকবে না।

ওয়াসার এমডি বলেন, মাইকিং করেও পানির সমস্যা কথা জানানো হচ্ছে। পানির ব্যবহার কমানো গেলে ওয়াসার সেবা দেয়া সহজ হয়। যেসব বাড়িতে দুই দিনের পানি মজুদ রাখা হয় সেসব এলাকায় একদিন কমিয়ে অন্য জায়গায় দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। রানিং সময়ে পানি ব্যবহার করলে দুইগুন বেশি পানি খরচ হয়। একটু সাশ্রয়ী হলে দুইদিনের পানি তিনদিন ব্যবহার করা যায়।
পানি ব্যবহারে নগরবাসীকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওয়াসার এমডি বলেন, ‘পানি ব্যবহারে নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। পানি গরম বলে ফেলে দেয়া যাবে না। রানিং পানিতে গোসল না করে বালতিতে পানি ধরে গোসল করার অনুরোধ। তাহলে অনেক পানি থাকবে এবং সেটা অন্যরা ব্যবহার করতে পারবে।’