Dhaka বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ওয়ানডে ‘স্টাইলে’ খেলে বাংলাদেশকে হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১২:২২:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
  • ১৯১ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

মিরপুরে আলো-আঁধারির খেলা থাকলো প্রায় পুরো ম্যাচজুড়ে। বাংলাদেশও থাকলো মোটামুটি নিষ্প্রভ। দ্বিতীয় ইনিংসে মেহেদী হাসান মিরাজের লড়াইটুকুই কেবল ব্যতিক্রম। পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পরের সময়টাও ভালো কাটছে না।

ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচ হারের পর এখন ঘরের মাঠে বাংলাদেশ হারলো দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। মিরপুরে স্পিন ফাঁদের আশা থাকলেও তেমন কিছু হয়নি। প্রথম ইনিংসে অল্পতে অলআউট হওয়ার পর সেভাবে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি কখনোই।

মিরপুরে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে স্টাইলে খেলে অনায়াসেই ম্যাচটা জিতল ৭ উইকেটের ব্যবধানে। প্রথম ইনিংসে ১০৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম ইনিংসে প্রোটিয়ারা করে ৩০৮ রান। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০৭ রানে অলআউট হলে ১০৬ রানের লক্ষ্য পায় তারা। ওই রান তাড়াক রতে পুরো সেশন খেলতে হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকাকে।

এই নিয়ে দশ বছর পর উপমহাদেশের মাঠে টেস্ট জিতল প্রোটিয়ারা। সর্বশেষ ২০১৪ সালে গলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছিলো তারা। ২০১৫ সালে বাংলাদেশে বৃষ্টির কারণে তাদের দুই টেস্টই ড্র হয়। টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকা এখনো অজেয় থাকল বাংলাদেশের কাছে। ১৫ টেস্ট খেলে তাদের কাছে ১৩টাই হারল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।

পুরো টেস্টে কৌশলগত ভুল করে ফাঁদে পড়ে স্বাগতিক দল। অতি স্পিন সহায়ক উইকেট ভেবে মাত্র এক পেসার আর তিন স্পিনার নিয়ে নামে তারা। আট নম্বরে খেলায় বাড়তি ব্যাটার। আরও একজন পেসারের ঘাটতি ম্যাচের বিভিন্ন ধাপে টের পাওয়া গেছে। দক্ষিণ আফ্রিকান পেসাররা বাংলাদেশের ২০ উইকেটের ১৩টাই নিয়েছেন, বাংলাদেশের একমাত্র পেসার হাসান মাহমুদও ভালো বল করেছেন। অর্থাৎ উইকেটে পেসারদের জন্যও ছিলো রসদ। সেটা অনুধাবন করতে ব্যর্থ বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট।

শেষ ইনিংসে ১০৬ রানের লক্ষ্য ছুঁতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি প্রোটিয়াদের। উইকেট যদিও তিনটি হারাতে হয়েছে, তবে রান তুলেছে তারা ওয়ানডের গতিতে। ম্যাচ শেষ লাঞ্চের মিনিট দশেক আগেই।

প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকারি তাইজুল দ্বিতীয় ইনিংসেও নেন তিন উইকেট। তবে ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার নায়ক রাবাদা।

দিনের শুরুতে অনুমিতভাবেই দ্বিতীয় নতুন বল নিয়ে আক্রমণ শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। সাফল্য মিলতেও সময় লাগেনি। ১৬ রান নিয়ে দিন শুরু করা নাঈম হাসান আউট হয়ে যান দিনের তৃতীয় বলেই। পিচ করে তীক্ষ্ণভাবে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিটি একটু বেশিই ভালো ছিল তার জন্য। রাবাদা পূর্ণ করেন ৫ উইকেট।

পরের ওভারে দারুণ এক কাভার ড্রাইভে চার মেরে নব্বইয়ে পা রাখেন মিরাজ। একটু একটু করে এগিয়ে যেতে থাকেন শতরানের দিকে। তাইজুল ইসলাম তো বরাবরই ব্যাট হাতে নির্ভর করার মতো। মিরাজের সেঞ্চুরি ও দলের লড়াইয়ের আশা তাই তখনও ছিল।

মুল্ডারের বলে দারুণ এক শটে চার মারেন তাইজুলও। কিন্তু একটু বেশি সাহসী হয়ে যাওয়াতেই হয়তো বিপত্তি। চার মারার এক বল পরই ক্যাচ তুলে দেন তিনি স্লিপে।

দলের আশা তখন শেষ। আশা কেবল মিরাজের মাইলফলক ঘিরে। কিন্তু ধরা দিল না সেটিও। শেষ জুটি বলেই হয়তো একটু অস্থির হয়ে উঠছিলেন মিরাজ। রাবাদার লেংথ বলে জায়গা বানিয়ে র‌্যাম্প শট খেলার চেষ্টায় ধরা পড়েন তিনি স্লিপে।

১০ চার ও ১ ছক্কা ১৯১ বলে ৯৭ রানে শেষ হয় তার লড়াই।

এই নিয়ে এ বছর চারবার শতরানের আশা জাগিয়েও তিনি পারলেন না। গত মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপকেষ চট্টগ্রামে অপরাজিত থাকেন তিনি ৮১ রানে। অগাস্টে পাকিস্তান সফরে পরপর দুই টেস্টে খেলেন ৭৭ ও ৭৮ রানের ইনিংস। এবার আরেকটু এগিয়ে গেলেও তিন অঙ্কের দেখা পেলেন না। ২০২১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০৩ রানের ইনিংসটিই এখনও পর্যন্ত তার একমাত্র টেস্ট শতরান।

রান তাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে ভুগতে হয়নি খুব একটা। হাসান মাহমুদ নতুন বলে কয়েকবার অস্বস্তিতে ফেলেন ব্যাটসম্যানদের। তাইজুল ইসলামও চেষ্টা করে যান তার মতো করেই। তবে প্রোটিয়ারা রান তুলতে থাকে অনায়াসেই।

উদ্বোধনী জুটিতে ওভারপ্রতি চারের বেশি রান তোলেন এইডেন মার্করাম ও টনি ডি জোর্জি। চারটি চারে ২০ রান করে মার্করাম ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হন তাইজুলের সোজা হয়ে যাওয়া বলে। তাইজুলকে উড়িয়ে মারতে গিয়েই উইকেট হারান সাত চারে ৪১ রান করা ডি জোর্জি।

পরে মুমিনুল হককে একটি ছক্কা মারার পর ডেভিড বেডিংহ্যাম বিদায় নেন তাইজুলের টার্ন ও বাউন্সে। তবে চারটি চার ও এক ছক্কায় ৩০ রানে অপরাজিত থেকে দ্রুতই দলকে জয় এনে দেন ট্রিস্টান স্টাবস।

দ্বিতীয় টেস্ট চট্টগ্রামে শুরু আগামী মঙ্গলবার।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

১৪৬ যাত্রী নিয়ে ব্যাংককের পথে এক ঘণ্টা উড়ে মিয়ানমার থেকে ফিরে এল বিমানের ফ্লাইট

ওয়ানডে ‘স্টাইলে’ খেলে বাংলাদেশকে হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা

প্রকাশের সময় : ১২:২২:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

স্পোর্টস ডেস্ক : 

মিরপুরে আলো-আঁধারির খেলা থাকলো প্রায় পুরো ম্যাচজুড়ে। বাংলাদেশও থাকলো মোটামুটি নিষ্প্রভ। দ্বিতীয় ইনিংসে মেহেদী হাসান মিরাজের লড়াইটুকুই কেবল ব্যতিক্রম। পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পরের সময়টাও ভালো কাটছে না।

ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচ হারের পর এখন ঘরের মাঠে বাংলাদেশ হারলো দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। মিরপুরে স্পিন ফাঁদের আশা থাকলেও তেমন কিছু হয়নি। প্রথম ইনিংসে অল্পতে অলআউট হওয়ার পর সেভাবে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি কখনোই।

মিরপুরে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে স্টাইলে খেলে অনায়াসেই ম্যাচটা জিতল ৭ উইকেটের ব্যবধানে। প্রথম ইনিংসে ১০৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম ইনিংসে প্রোটিয়ারা করে ৩০৮ রান। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০৭ রানে অলআউট হলে ১০৬ রানের লক্ষ্য পায় তারা। ওই রান তাড়াক রতে পুরো সেশন খেলতে হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকাকে।

এই নিয়ে দশ বছর পর উপমহাদেশের মাঠে টেস্ট জিতল প্রোটিয়ারা। সর্বশেষ ২০১৪ সালে গলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছিলো তারা। ২০১৫ সালে বাংলাদেশে বৃষ্টির কারণে তাদের দুই টেস্টই ড্র হয়। টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকা এখনো অজেয় থাকল বাংলাদেশের কাছে। ১৫ টেস্ট খেলে তাদের কাছে ১৩টাই হারল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।

পুরো টেস্টে কৌশলগত ভুল করে ফাঁদে পড়ে স্বাগতিক দল। অতি স্পিন সহায়ক উইকেট ভেবে মাত্র এক পেসার আর তিন স্পিনার নিয়ে নামে তারা। আট নম্বরে খেলায় বাড়তি ব্যাটার। আরও একজন পেসারের ঘাটতি ম্যাচের বিভিন্ন ধাপে টের পাওয়া গেছে। দক্ষিণ আফ্রিকান পেসাররা বাংলাদেশের ২০ উইকেটের ১৩টাই নিয়েছেন, বাংলাদেশের একমাত্র পেসার হাসান মাহমুদও ভালো বল করেছেন। অর্থাৎ উইকেটে পেসারদের জন্যও ছিলো রসদ। সেটা অনুধাবন করতে ব্যর্থ বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট।

শেষ ইনিংসে ১০৬ রানের লক্ষ্য ছুঁতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি প্রোটিয়াদের। উইকেট যদিও তিনটি হারাতে হয়েছে, তবে রান তুলেছে তারা ওয়ানডের গতিতে। ম্যাচ শেষ লাঞ্চের মিনিট দশেক আগেই।

প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকারি তাইজুল দ্বিতীয় ইনিংসেও নেন তিন উইকেট। তবে ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার নায়ক রাবাদা।

দিনের শুরুতে অনুমিতভাবেই দ্বিতীয় নতুন বল নিয়ে আক্রমণ শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। সাফল্য মিলতেও সময় লাগেনি। ১৬ রান নিয়ে দিন শুরু করা নাঈম হাসান আউট হয়ে যান দিনের তৃতীয় বলেই। পিচ করে তীক্ষ্ণভাবে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিটি একটু বেশিই ভালো ছিল তার জন্য। রাবাদা পূর্ণ করেন ৫ উইকেট।

পরের ওভারে দারুণ এক কাভার ড্রাইভে চার মেরে নব্বইয়ে পা রাখেন মিরাজ। একটু একটু করে এগিয়ে যেতে থাকেন শতরানের দিকে। তাইজুল ইসলাম তো বরাবরই ব্যাট হাতে নির্ভর করার মতো। মিরাজের সেঞ্চুরি ও দলের লড়াইয়ের আশা তাই তখনও ছিল।

মুল্ডারের বলে দারুণ এক শটে চার মারেন তাইজুলও। কিন্তু একটু বেশি সাহসী হয়ে যাওয়াতেই হয়তো বিপত্তি। চার মারার এক বল পরই ক্যাচ তুলে দেন তিনি স্লিপে।

দলের আশা তখন শেষ। আশা কেবল মিরাজের মাইলফলক ঘিরে। কিন্তু ধরা দিল না সেটিও। শেষ জুটি বলেই হয়তো একটু অস্থির হয়ে উঠছিলেন মিরাজ। রাবাদার লেংথ বলে জায়গা বানিয়ে র‌্যাম্প শট খেলার চেষ্টায় ধরা পড়েন তিনি স্লিপে।

১০ চার ও ১ ছক্কা ১৯১ বলে ৯৭ রানে শেষ হয় তার লড়াই।

এই নিয়ে এ বছর চারবার শতরানের আশা জাগিয়েও তিনি পারলেন না। গত মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপকেষ চট্টগ্রামে অপরাজিত থাকেন তিনি ৮১ রানে। অগাস্টে পাকিস্তান সফরে পরপর দুই টেস্টে খেলেন ৭৭ ও ৭৮ রানের ইনিংস। এবার আরেকটু এগিয়ে গেলেও তিন অঙ্কের দেখা পেলেন না। ২০২১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০৩ রানের ইনিংসটিই এখনও পর্যন্ত তার একমাত্র টেস্ট শতরান।

রান তাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে ভুগতে হয়নি খুব একটা। হাসান মাহমুদ নতুন বলে কয়েকবার অস্বস্তিতে ফেলেন ব্যাটসম্যানদের। তাইজুল ইসলামও চেষ্টা করে যান তার মতো করেই। তবে প্রোটিয়ারা রান তুলতে থাকে অনায়াসেই।

উদ্বোধনী জুটিতে ওভারপ্রতি চারের বেশি রান তোলেন এইডেন মার্করাম ও টনি ডি জোর্জি। চারটি চারে ২০ রান করে মার্করাম ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হন তাইজুলের সোজা হয়ে যাওয়া বলে। তাইজুলকে উড়িয়ে মারতে গিয়েই উইকেট হারান সাত চারে ৪১ রান করা ডি জোর্জি।

পরে মুমিনুল হককে একটি ছক্কা মারার পর ডেভিড বেডিংহ্যাম বিদায় নেন তাইজুলের টার্ন ও বাউন্সে। তবে চারটি চার ও এক ছক্কায় ৩০ রানে অপরাজিত থেকে দ্রুতই দলকে জয় এনে দেন ট্রিস্টান স্টাবস।

দ্বিতীয় টেস্ট চট্টগ্রামে শুরু আগামী মঙ্গলবার।