নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। বুধবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাশিয়ায় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ১০ জন নিহত হয়েছিলেন। সেই উড়োজাহাজের যাত্রীদের তালিকায় প্রিগোজিনের নাম ছিল।
নিহতদের ডিএনএ পরীক্ষায় প্রিগোজিনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে রোববার (২৭ আগস্ট) রাশিয়ার কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। তদন্ত কমিটি বলেছে, নিহত ১০ জনেরই পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের তালিকায় যাদের নাম ছিল, তাদের সঙ্গে নিহতদের মিল রয়েছে।
তদন্ত কমিটির বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানে থাকা ১০ জনেরই পরিচয় পাওয়া গেছে। ফ্লাইটের যাত্রীদের তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের সম্পর্কে যোগাযোগ করে তথ্য নেওয়া হচ্ছে।
২৫ আগস্ট প্রিগোশিনের প্রাইভেট জেটটি মস্কোর উত্তর-পশ্চিমে বিধস্ত হলে এতে থাকা সকল আরোহী নিহত হয়।
প্রাথমিকভাকে এই ঘটনার জন্য ক্রেমলিনকে দায়ি করেছেন বিশ্লেষকরা। তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই দাবিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
২৪ জুন রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক নাটকীয় লড়াইয়ে লিপ্ত হয় ভাড়াটে আধাসামরিক বাহিনী ভাগনার গ্রুপ। গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও নেতা ইয়েভজেনি প্রিগোশিন সশস্ত্র বিদ্রোহের নেতৃত্বে ছিলেন। বিদ্রোহের সময় প্রিগোশিন ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি যে কোনও মূল্যে রুশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বের পতন ঘটাবেন। সেদিন তিনি ইউক্রেন থেকে সীমান্তের লাগোয়া রাশিয়ার রোস্তভ অঞ্চলে প্রবেশ করেন। শহরটি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
এরপর পুতিনের নেতৃত্বে বিদ্রোহ থামায় ভাগনার। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আর পুতিনের মধ্যকার চুক্তিতে বিদ্রোহের পর ভাগনার যোদ্ধাদের বেলারুশে নির্বাসিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তখন তারা প্রস্তাবে রাজি হয়ে রাশিয়া ছেড়েছিল।
এরপর থেকে শুরু হয় ধোঁয়াশা। প্রিগোশিন তখন থেকেই অন্তরালে। তিনি কোথায় বা তার সঙ্গে কি ঘটেছে এ নিয়ে সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ কোথাও ছিল না। মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের অনেকে ধারণা করেছিলেন তাকে হয়তো কারাগারে রাখা হয়েছে অথবা মেরে ফেলা হয়েছে। কিন্তু সবই ছিল অনুমান নির্ভর মন্তব্য। তবে একটি বিষয়ে সকলেই একমত ছিলেন যে ভাগনার প্রধানকে পুতিন ক্ষমা করবেন না। তাকে শাস্তি যেভাবেই হোক দেওয়া হতে পারে।
জল্পনার অবসান ঘটিয়ে গত বুধবার এক বিমান দুর্ঘটনায় প্রিগোশিন এবং জেনারেল উতকিনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। অবশেষে তাদের ডিএনএ পরীক্ষা করে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে মস্কো। তার মৃত্যুর সঙ্গে পুতিন জড়িত থাকতে পারেন এ কথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন থেকে শুরু করে দেশটির গোয়েন্দারা পর্যন্ত বেশ কয়েকবার দাবি করেছেন। যদিও ক্রেমলিন সরাসরি এই অভিযোগকে ডাহা মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।