Dhaka বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ডিসেম্বরেই যান চলাচল শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চট্টগ্রাম নগরীতে যোগাযোগের প্রধান সড়ক পতেঙ্গা-লালখান বাজার পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এরই মধ্যে মূল কাজ শেষ করা হয়েছে ৭৫ শতাংশ। ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে ১২ কিলোমিটার। ৩২০টি পিলারের মধ্যে ২৮৪টির কাজ শেষ। মন্ত্রণালয় থেকে অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। সেক্ষেত্রে সিডিএ নভেম্বরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে ডিসেম্বরেই খুলবে স্বপ্নের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বর্তমানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন অংশে একযোগে কাজ চলছে। পতেঙ্গা, নিমতলা, বারিক বিল্ডিং, চৌমুহনী, আগ্রাবাদ, দেওয়ানহাট ও টাইগার পাস এলাকায় চলছে নির্মাণ, ঢালাই এবং সৌন্দর্যবর্ধন কাজ। তবে এখন বেশি শ্রমিক কাজ করছেন দেওয়ানহাট থেকে লালখান বাজার এলাকায়। বর্তমানে একযোগে তিন শিফটে কাজ করছেন প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক।

এটি চালু হলে সুফল মিলবে বঙ্গবন্ধু টানেলের। কমবে যানজট, ভোগান্তি। নিরাপত্তা, নজরদারি, দুর্ঘটনা ও অপরাধ পর্যবেক্ষণে বসানো হবে ২০০ সিসি ক্যামেরা। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) ৪ হাজার ৩৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকায় পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটারের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি বাস্তবায়ন করছে।

পতেঙ্গা থেকে কাঠগড় পর্যন্ত এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। রাত–দিন কার্পেটিং এর কাজ চলছে। এদিকে টাইগারপাস এলাকায় পিলার তৈরি এবং লালখান বাজার এলাকায় পাইলিংয়ের কাজ চলছে। পতেঙ্গার দিক থেকে কার্পেটিং সম্পন্ন করে ইপিজেড, বন্দর, বারিক বিল্ডিং ও আগ্রাবাদ হয়ে আসতে লালখান বাজারে স্প্যান বসানোর কাজ সম্পন্ন হবে।

সবকিছু মিলে দ্রুতগতিতে প্রকল্পটির কাজ সমাপ্ত করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তপক্ষ (সিডিএ) । সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গার টানেল রোড পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হলে শহরের যে কোনো অংশ থেকে ২০২৫ মিনিটে বিমানবন্দরে পৌঁছানো সম্ভব হবে।

বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার থেকে উঠে মুরাদপুর নেমে সেখান থেকে আবার উঠে লালখান থেকে বিদ্যমান এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে পতেঙ্গায় নেমে যাবে। টাইগারপাসে পাহাড় না কাটার জন্য এক্সপ্রেসওয়ের চার লেনের মধ্যে দুই লেইন নিচে নামিয়ে দিয়ে ডিজাইন করা হয়। মূল ফ্লাইওভার থেকে পরে বিভিন্ন পয়েন্টে লুপ ও র‌্যাম্প নামানো হবে। এগুলো করতে আরো কিছুদিন সময় লাগলেও মূল ফ্লাইওভারে ডিসেম্বরে গাড়ি চলাচল শুরু হবে বলে সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী এবং প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন।

২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরুতে ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে প্রকল্পটির কাজ শুরু করা হয়। পরে ডিজাইন পরিবর্তনে নতুন ভূমি অধিগ্রহণসহ জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২শ ৯৮ কোটি টাকায়। শুরুতে প্রকল্পটি নিয়ে সমস্যা না হলেও পরবর্তীতে দফায় দফায় সংকট তৈরি হয়।

বন্দর এলাকায় বন্দরের নিরাপত্তার জন্য ফ্লাইওভারের ডিজাইন পরিবর্তন করতে হয়। বন্দরের কাছ থেকে নতুন করে জমি নিতে হয়। এসব কাজের জন্য প্রকল্পটি দীর্ঘদিন আটকে থাকে। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও টেলিফোনসহ সার্ভিস লাইন সরানোর কাজ আটকে থাকা।

এরপর নতুন সংকট তৈরি করে দেওয়ানহাট ওভারব্রিজ। দেওয়ানহাটে রেললাইনের উপর ব্রিজের উচ্চতা এবং রেলওয়ের অনুমোদন নিয়ে দীর্ঘদিন প্রকল্পটি ঝুলে থাকে। সেই অনুমোদন পাওয়ার পর নতুন সংকট সৃষ্টি করে টাইগারপাসের পাহাড়। পাহাড়ের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য উপর দিয়ে ফ্লাইওভার নির্মাণের বিরোধিতা করেন অনেকে। আবার ডিজাইন পাল্টানো হয়। চার লেনের ফ্লাইওভারের দুই লেন উপরে এবং দুই লেন নিচে নামিয়ে নতুন করে ডিজাইন করা হয়।

অবশেষে সবকিছু সমাধান করার পর কাজে গতি পায়। ইতোমধ্যে দফায় দফায় সময় বাড়ানো হয়েছে। খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে। শেষ পর্যন্ত মূল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ আগামী অক্টোবর–নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।

ওয়েল গ্রুপের পরিচালক সৈয়দ তারিকুল ইসলাম বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ অবশ্যই সুখবর। এর মাধ্যমে ৪০ থেকে ৬০ মিনিটেই বিমানবন্দরে যাওয়া যাবে। কিন্তু এর সঙ্গে আরও কিছু অবকাঠামোর উন্নয়ন দরকার। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে সমৃদ্ধ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বৃদ্ধি করা এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ বাড়াতে উন্নতমানের হোটেল নির্মাণ করতে হবে। তাহলেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মতো বড় উন্নয়ন প্রকল্পের বহুমুখী সুফল মিলবে। প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উৎকর্ষতা সাধন হবে।

প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা দ্রুত গতিতে কাজ শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছি। কোথাও কাজ থেমে নেই, সমন্বিতভাবে সকল অংশে কাজ করছি। পতেঙ্গার দিক থেকে ক্রমান্বয়ে কাজ শেষ করে শহরের দিকে আসছি। প্রত্যাশিত সময় আগামী ডিসেম্বরে যান চলাচল শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরের প্রধান সড়ক পতেঙ্গা-বিমানবন্দর থেকে কালুরঘাট। কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা। যানজটে পড়লে আরও বেশি সময় লাগে। যানজটের কারণে বিমান যাত্রীদের ফ্লাইট মিস করার ঘটনাও আছে। বাণিজ্যিক রাজধানীর এ মূল সড়কটির কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের। ক্ষুণ্ন হয় দেশের ভাবমূর্তি। কিন্তু এখন পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এটি নির্মাণ হলে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছা যাবে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর। কমবে যানজট, ভোগান্তি। আকৃষ্ট হবেন দেশি-বিদেশি নতুন বিনিয়োগকারীরা। বাড়বে অর্থনৈতিক গুরুত্ব। বিকশিত হবে পর্যটন খাত। বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে যোগাযোগব্যবস্থায়। সংযুক্ত হবে দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু টানেলের সঙ্গে। যানজট মুক্ত হবে বিমান যাত্রীদের যাতায়াত পথ। সঙ্গে ভোগান্তি নিরসন হবে কালুরঘাট-পতেঙ্গা পর্যন্ত মূল সড়কে যাতায়াতকারীদের।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ডিসেম্বরেই যান চলাচল শুরু

প্রকাশের সময় : ০৪:২৬:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চট্টগ্রাম নগরীতে যোগাযোগের প্রধান সড়ক পতেঙ্গা-লালখান বাজার পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এরই মধ্যে মূল কাজ শেষ করা হয়েছে ৭৫ শতাংশ। ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে ১২ কিলোমিটার। ৩২০টি পিলারের মধ্যে ২৮৪টির কাজ শেষ। মন্ত্রণালয় থেকে অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। সেক্ষেত্রে সিডিএ নভেম্বরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে ডিসেম্বরেই খুলবে স্বপ্নের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বর্তমানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন অংশে একযোগে কাজ চলছে। পতেঙ্গা, নিমতলা, বারিক বিল্ডিং, চৌমুহনী, আগ্রাবাদ, দেওয়ানহাট ও টাইগার পাস এলাকায় চলছে নির্মাণ, ঢালাই এবং সৌন্দর্যবর্ধন কাজ। তবে এখন বেশি শ্রমিক কাজ করছেন দেওয়ানহাট থেকে লালখান বাজার এলাকায়। বর্তমানে একযোগে তিন শিফটে কাজ করছেন প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক।

এটি চালু হলে সুফল মিলবে বঙ্গবন্ধু টানেলের। কমবে যানজট, ভোগান্তি। নিরাপত্তা, নজরদারি, দুর্ঘটনা ও অপরাধ পর্যবেক্ষণে বসানো হবে ২০০ সিসি ক্যামেরা। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) ৪ হাজার ৩৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকায় পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটারের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি বাস্তবায়ন করছে।

পতেঙ্গা থেকে কাঠগড় পর্যন্ত এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। রাত–দিন কার্পেটিং এর কাজ চলছে। এদিকে টাইগারপাস এলাকায় পিলার তৈরি এবং লালখান বাজার এলাকায় পাইলিংয়ের কাজ চলছে। পতেঙ্গার দিক থেকে কার্পেটিং সম্পন্ন করে ইপিজেড, বন্দর, বারিক বিল্ডিং ও আগ্রাবাদ হয়ে আসতে লালখান বাজারে স্প্যান বসানোর কাজ সম্পন্ন হবে।

সবকিছু মিলে দ্রুতগতিতে প্রকল্পটির কাজ সমাপ্ত করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তপক্ষ (সিডিএ) । সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গার টানেল রোড পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হলে শহরের যে কোনো অংশ থেকে ২০২৫ মিনিটে বিমানবন্দরে পৌঁছানো সম্ভব হবে।

বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার থেকে উঠে মুরাদপুর নেমে সেখান থেকে আবার উঠে লালখান থেকে বিদ্যমান এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে পতেঙ্গায় নেমে যাবে। টাইগারপাসে পাহাড় না কাটার জন্য এক্সপ্রেসওয়ের চার লেনের মধ্যে দুই লেইন নিচে নামিয়ে দিয়ে ডিজাইন করা হয়। মূল ফ্লাইওভার থেকে পরে বিভিন্ন পয়েন্টে লুপ ও র‌্যাম্প নামানো হবে। এগুলো করতে আরো কিছুদিন সময় লাগলেও মূল ফ্লাইওভারে ডিসেম্বরে গাড়ি চলাচল শুরু হবে বলে সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী এবং প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন।

২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরুতে ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে প্রকল্পটির কাজ শুরু করা হয়। পরে ডিজাইন পরিবর্তনে নতুন ভূমি অধিগ্রহণসহ জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২শ ৯৮ কোটি টাকায়। শুরুতে প্রকল্পটি নিয়ে সমস্যা না হলেও পরবর্তীতে দফায় দফায় সংকট তৈরি হয়।

বন্দর এলাকায় বন্দরের নিরাপত্তার জন্য ফ্লাইওভারের ডিজাইন পরিবর্তন করতে হয়। বন্দরের কাছ থেকে নতুন করে জমি নিতে হয়। এসব কাজের জন্য প্রকল্পটি দীর্ঘদিন আটকে থাকে। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও টেলিফোনসহ সার্ভিস লাইন সরানোর কাজ আটকে থাকা।

এরপর নতুন সংকট তৈরি করে দেওয়ানহাট ওভারব্রিজ। দেওয়ানহাটে রেললাইনের উপর ব্রিজের উচ্চতা এবং রেলওয়ের অনুমোদন নিয়ে দীর্ঘদিন প্রকল্পটি ঝুলে থাকে। সেই অনুমোদন পাওয়ার পর নতুন সংকট সৃষ্টি করে টাইগারপাসের পাহাড়। পাহাড়ের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য উপর দিয়ে ফ্লাইওভার নির্মাণের বিরোধিতা করেন অনেকে। আবার ডিজাইন পাল্টানো হয়। চার লেনের ফ্লাইওভারের দুই লেন উপরে এবং দুই লেন নিচে নামিয়ে নতুন করে ডিজাইন করা হয়।

অবশেষে সবকিছু সমাধান করার পর কাজে গতি পায়। ইতোমধ্যে দফায় দফায় সময় বাড়ানো হয়েছে। খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে। শেষ পর্যন্ত মূল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ আগামী অক্টোবর–নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।

ওয়েল গ্রুপের পরিচালক সৈয়দ তারিকুল ইসলাম বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ অবশ্যই সুখবর। এর মাধ্যমে ৪০ থেকে ৬০ মিনিটেই বিমানবন্দরে যাওয়া যাবে। কিন্তু এর সঙ্গে আরও কিছু অবকাঠামোর উন্নয়ন দরকার। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে সমৃদ্ধ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বৃদ্ধি করা এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ বাড়াতে উন্নতমানের হোটেল নির্মাণ করতে হবে। তাহলেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মতো বড় উন্নয়ন প্রকল্পের বহুমুখী সুফল মিলবে। প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উৎকর্ষতা সাধন হবে।

প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা দ্রুত গতিতে কাজ শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছি। কোথাও কাজ থেমে নেই, সমন্বিতভাবে সকল অংশে কাজ করছি। পতেঙ্গার দিক থেকে ক্রমান্বয়ে কাজ শেষ করে শহরের দিকে আসছি। প্রত্যাশিত সময় আগামী ডিসেম্বরে যান চলাচল শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরের প্রধান সড়ক পতেঙ্গা-বিমানবন্দর থেকে কালুরঘাট। কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা। যানজটে পড়লে আরও বেশি সময় লাগে। যানজটের কারণে বিমান যাত্রীদের ফ্লাইট মিস করার ঘটনাও আছে। বাণিজ্যিক রাজধানীর এ মূল সড়কটির কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের। ক্ষুণ্ন হয় দেশের ভাবমূর্তি। কিন্তু এখন পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এটি নির্মাণ হলে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছা যাবে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর। কমবে যানজট, ভোগান্তি। আকৃষ্ট হবেন দেশি-বিদেশি নতুন বিনিয়োগকারীরা। বাড়বে অর্থনৈতিক গুরুত্ব। বিকশিত হবে পর্যটন খাত। বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে যোগাযোগব্যবস্থায়। সংযুক্ত হবে দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু টানেলের সঙ্গে। যানজট মুক্ত হবে বিমান যাত্রীদের যাতায়াত পথ। সঙ্গে ভোগান্তি নিরসন হবে কালুরঘাট-পতেঙ্গা পর্যন্ত মূল সড়কে যাতায়াতকারীদের।