স্পোর্টস ডেস্ক :
আর্লিং হালান্ড-কেভিন ডি ব্রুইনাদের বেঞ্চে রেখে মাঠে নামল ম্যানচেস্টার সিটি। কিন্তু মহাগুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারল না পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। কিলিয়ান এমবাপের অসাধারণ হ্যাটট্রিকে তাদেরকে স্রেফ উড়িয়ে দিল রিয়াল মাদ্রিদ। অনায়াসে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে প্লে-অফের দ্বিতীয় লেগে ৩-১ গোলে জিতেছে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। এতে দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৩ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে পরের পর্বে নাম লেখাল রিয়াল। গত সপ্তাহে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে প্রথম লেগে সিটির মাঠে ৩-২ গোলে জিতেছিল তারা।
ইউরোপ সেরার মঞ্চে এ নিয়ে টানা চার আসরে মুখোমুখি হলো রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটি। গত কয়েক বছরে তারা যেমন রোমাঞ্চকর লড়াই উপহার দিয়েছিল, এবার হলো না তেমন কিছু। একপেশে ম্যাচে অনায়াস জয় পেল শিরোপাধারীরা।
চতুর্থ মিনিটে গোলের জন্য প্রথম শট নিয়েই জালের দেখা পায় রিয়াল মাদ্রিদ। নিজেদের অর্ধ থেকে হাওয়ায় ভাসিয়ে দারুণ এক থ্রু পাস বাড়ান রাউল আসেন্সিও, বলের পিছু ছুটে ডি-বক্সের বাইরে হেডে ক্লিয়ার করার চেষ্টায় ব্যর্থ হন রুবেন দিয়াস। এরপর বুদ্ধিদীপ্ত শটে আগুয়ান গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন এমবাপে।
দুই লেগ মিলিয়ে ৪-২ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল।
তিন মিনিট পর আরেক ধাক্কা খায় সিটি। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার জন স্টোন্স, বদলি নামেন নাথান আকে। পঞ্চদশ মিনিটে ভিনিসিউস জুনিয়রের কর্নারে জুড বেলিংহ্যামের ফ্লিক বেরিয়ে যায় দূরের পোস্ট ঘেঁষে। ২৯তম মিনিটে এদেরসন বরাবর শট নিয়ে দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন এমবাপে। শটে গতি ছিল প্রবল; কিন্তু বেশ কাছে থাকায় ফিস্ট করতে কোনো সমস্যা হয়নি অভিজ্ঞ ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষকের।
তবে তিন মিনিট পর আর পারেননি তিনি। রদ্রিগোর কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ ডজে ইয়োশকো ভার্দিওলকে এড়িয়ে গতিময় নিচু শটে জালে খুঁজে নেন এমবাপে।
২-০ গোলে এগিয়ে গিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ বিরতির আগের সময়টুকুতেও ধরে রাখে চাপ। ঘর সামলাতে ব্যস্ত থাকা সিটি প্রথমার্ধে ৫০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে শট নিতে পারে মোটে একটি, সেটাও লক্ষ্যে ছিল না। অন্যদিকে, রিয়ালের সাত শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে।
নিজেদের একটু গুছিয়ে নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করে সিটি। তবে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের আক্রমণের মুখে রক্ষণে না গুটিয়ে প্রতি-আক্রমণ করে রেয়াল। ৫৩তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত তারা। রদ্রিগোর শট ঠিক মতো ধরতে পারেননি এদেরসন; তবে ফিরতি বলে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি স্বাগতিকদের কেউ।
চার মিনিট পর একটুর জন্য হ্যাটট্রিক করতে পারেননি এমবাপে। ফেদে ভালভের্দের ক্রসে খুব কাছ থেকে তার শট বেরিয়ে এসে ব্যর্থ করে দেন এদেরসন।
তৃতীয় গোলের জন্য অবশ্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি এমবাপেকে। ডান দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে একটু জায়গা করে নিয়ে আড়াআড়ি শটি জাল খুঁজে নেন তিনি। ঝাঁপ দিলেও বলের নাগাল পাননি সিটি গোলরক্ষক।
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে চলতি মৌসুমে এটি ফরাসি ফরোয়ার্ডের ২৮তম গোল। ২০১৬-১৭ মৌসুম থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বে এটি তার ২৪তম গোল, যা এই সময়ে অন্য যে কারোর চেয়ে বেশি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তৃতীয় হ্যাট্রটিক করলেন এমবাপে, চলতি আসরে করলেন সাত গোল।
৭৪তম মিনিটে ভিনিসিউসের দারুণ শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন এদেরসন। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ব্যবধান কমান গনসালেস। ওমার মার্মাউশের ফ্রি কিক ক্রসবারে লেগে ফিরলে ফাঁকা জালে বল পাঠান তরুণ স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। সিটির হয়ে এটাই তার প্রথম গোল, ইউরোপ সেরার মঞ্চেও প্রথম।