নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, এবার আর যেনতেন নির্বাচন করতে পারবে না সরকার। চারদিক থেকে সরকারের ওপর অন্ধকার ধেয়ে আসছে। সরকারের জন্য ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলছে। শেখ হাসিনার হুঙ্কারে আর কাজ হবে না। নির্দলীয় সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে।
শুক্রবার (৩০ জুন) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আজকে অবহেলিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত জনগণ গ্রাম থেকে শহরে সবপর্যায়ের মানুষ জেগে উঠতে শুরু করেছে। স্বৈর রুদ্রশাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়েও জনগণ নিপীড়কদের প্রতিহত করতে শুরু করেছে। দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে বিশ্ববিবেকও জাগ্রত হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় আশ্রয়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ভেঙেচুরে তছনছ করে গোটা জাতিকে বন্দিশালায় আটকে রাখার এক দমবন্ধ করা দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো সোচ্চার হয়েছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে যে অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বন্দি করে রাখা হয়েছে এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যে মামলা প্রতিহিংসামূলক তা আজ বিশ্ববাসীর কাছে পরিষ্কার।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশে গণতন্ত্রের সংকট আড়াল করতে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টায় লিপ্ত তথাকথিত আওয়ামী বুদ্ধিজীবী, কলামিস্টসহ উচ্ছিষ্টজীবীরা। তারা ‘বাঙালি জাতি, বাঙালি সংস্কৃতি’র কথা বলে অবৈধ সরকারকে বৈধতা দিতে মরিয়া প্রয়াসে লিপ্ত। আওয়ামী সরকার পাকিস্তানি শোষকদের কায়দায় দেশের মানুষকে ক্রীতদাসের পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ আওয়ামী বুদ্ধিজীবীরা বাঙালি সংস্কৃতির জিকির তুলে সরকারের গুম, খুন, ক্রসফায়ারে হত্যা, গুপ্ত হত্যা ও রক্তাক্ত সংস্ত্রাসকে জায়েজ করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
এবারের কোরবানির ঈদে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ঈদের জন্য ঘরে ফেরা মানুষদের যানজটে প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ঈদের আগে বাড়ির উদ্দেশে যেদিন রওনা দিয়েছে, তার পরের দিন সন্ধ্যায় বা মাঝরাতে বাড়িতে পোঁছেছে। কেউ কেউ গতকাল ঈদের দিনেও বাড়ি পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, এবার নিরানন্দে কেটে মানুষের ঈদ। গরিবরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে যে মাংস সংগ্রহ করেছেন তা থেকে কিছু অংশ বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে মাংস রান্নার মসলা কিনছেন। এ দৃশ্য মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক। তথাকথিত উন্নয়নের জোয়ারে গরিবদের ঘরে চেয়ে আনা মাংস রান্না করার তেল-মসলাও থাকে না।
বিএনপি নেতা বলেন, ঈদের মধ্যেও আওয়ামী সন্ত্রাসের কোনো কমতি নেই। সশস্ত্র মহড়া থেকে শুরু করে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে। গোপালগঞ্জের মকসুদপুরে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিমের ঈদ শুভেচ্ছার পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে। সংবাদ পেয়ে সেখানে বিএনপি নেতাকর্মীরা সেখানে গেলে তাদের ওপর যুবলীগ, ছাত্রলীগ সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে বেশকয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবি-উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্চাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ঢাকা জেলার সভাপতি খন্দকার আবু আসফাক, ঢাবির অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।