Dhaka মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এবারের নির্বাচনে আইনের শাসন কাকে বলে, তা দেখাতে চাই : সিইসি

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনের শাসন কাকে বলে, তা দেখানো হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।

শনিবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রামে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত কর্মশালায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন আইনের শাসন ও নিরপেক্ষতার প্রকৃত উদাহরণ উপস্থাপন করতে চায়। আমরা চাই, জনগণ এমন একটি নির্বাচন দেখুক যেখানে শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা থাকবে— আর সবাই বিশ্বাস করবে, আইন সবার জন্য সমান।

নাসির উদ্দিন বলেন, এবারের নির্বাচনে আইনের শাসন কাকে বলে দেখাতে চাই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, এতে যা হয় হবে।

সিইসি বলেন, আজকের এই কর্মশালা থেকে আমাদের বিভিন্ন ক্যাপসগুলো উঠে আসবে। আমরা তো সব জানি না, তাই আমরা অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছি, যারা এর আগে নির্বাচনে কাজ করেছেন, তাদের অভিজ্ঞতা থেকে শিখছি। যেখানে যেখানে ঘাটতি আছে, আমরা সেই ঘাটতি পূরণ করে নেবো। আমাদের এখানে খুব দ্রুত কাজ করতে হচ্ছে, অনেক চ্যালেঞ্জও আছে। সমস্যা হচ্ছে, আপনি যে কাজটা করতে যাবেন, সেখানে ‘অকাজ’ বেশি, এটা আমাদের এক ধরনের কালচারে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, সবাই মিলে একটি সুন্দর নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। আমরা চাই একটি এমপাওয়ার্ড প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার তৈরি করতে। আমরা একটি সম্পূর্ণ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রিসাইডিং অফিসার গড়ে তুলতে চাই। আপনাদের হাতে আমরা সব ক্ষমতা দিচ্ছি। আপনি যদি সেই ক্ষমতা ব্যবহার না করেন, তাহলে সেটাকে আমরা অপরাধ হিসেবে গণ্য করবো। আপনি যদি যথাসময়ে যথাযথ ব্যবস্থা না নেন, সেটাও আমরা ভালোভাবে নেবো না। ক্ষমতা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তার সঠিক ব্যবহারও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই, যেই পর্যায়ের ক্ষমতা আপনাদের দেওয়া হয়েছে, সেটি দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবেন।

নির্বাচনি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনারা আইনের মধ্যে থেকে দায়িত্ব পালন করবেন, নির্বাচন কমিশন আপনাদের পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাবে, এই নিশ্চয়তা আমি দিচ্ছি।
নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো একটি স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা। এজন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যাতে বিভিন্ন পেশার মানুষ যাদের মধ্যে কেউ কেউ আগে কখনো ভোটগ্রহণের অভিজ্ঞতা পাননি তারাও দায়িত্ব পালনে দক্ষ হয়ে ওঠেন। ‘ওয়ান সাইজ ফিটস অল’ পদ্ধতিতে নয় বরং অংশগ্রহণকারীদের পটভূমি বিবেচনায় প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করতে হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিরাপত্তা। প্রশাসনিক, আইনগত ও প্রযুক্তিগত নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনাই সবচেয়ে কঠিন বিষয়। এজন্য তিনি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি ‘সেন্ট্রাল কো-অর্ডিনেশন সেল’ এবং ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স ইউনিট’ গঠন করছে, যাতে দেশের যেকোনো স্থান থেকে দ্রুত যোগাযোগ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

সিইসি বলেন, একটি সফল নির্বাচন আয়োজনের মূল চাবিকাঠি হলো সমন্বয়। প্রিসাইডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ই নির্বাচনের সাফল্য নিশ্চিত করবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন এরইমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া তথ্য ও এআই-ভিত্তিক অপপ্রচার মোকাবিলায় একটি সেল গঠন করেছে। তবে এটাও বলেন, সেলের কার্যক্রম সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে যথাযথ প্রচার এখনো হয়নি।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, অতিরিক্ত সচিব (ইসি সচিবালয়) কে এম আলী নেওয়াজ, বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন, ডিআইজি (চট্টগ্রাম রেঞ্জ) মো. আহসান হাবীব পলাশ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বসির আহমেদ।

ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমভাগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই লক্ষ্যে চট্টগ্রামে চলছে প্রস্তুতি জোরেশোরে। ইতোমধ্যে ১৬ সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রকাশিত খসড়া অনুযায়ী এবার চট্টগ্রামে ভোটকেন্দ্র কমেছে ৬৪টি এবং ভোটকক্ষ (বুথ) কমেছে ১ হাজার ৭৬টি। চট্টগ্রামের ১৬ আসনে মোট ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৯৫৯টি এবং ভোটকক্ষ ১২ হাজার ৬৫৬টি। এর মধ্যে পুরুষ বুথ ৫ হাজার ৭৬৪টি এবং মহিলা বুথ ৬ হাজার ৮৯২টি।

চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৬ আসনে ভোটগ্রহণের জন্য ১৪ হাজার ৬১৫টি স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের প্রয়োজন, অথচ বর্তমানে মজুত রয়েছে ১৫ হাজার ৯৪৪টি ব্যালট বাক্স—অর্থাৎ চাহিদার চেয়েও বেশি।

অন্যদিকে, ভোটগ্রহণের জন্য গঠন করা হচ্ছে প্রায় ৪৪ হাজার কর্মকর্তার একটি প্যানেল। এর মধ্যে থাকবেন ১ হাজার ৯৫৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১২ হাজার ৬৫৬ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ২৫ হাজার ৩১২ জন পোলিং অফিসার। অতিরিক্ত ১০ শতাংশ কর্মকর্তার নামও সংরক্ষণে রাখা হবে, যাতে প্রয়োজন হলে বিকল্প কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া যায়।

চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. বশির আহমেদ বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল তৈরির কাজ আমরা শুরু করেছি। সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে নামের তালিকা ইতোমধ্যে জমা পড়েছে।’

উল্লেখ্য, হালনাগাদ ভোটার তালিকা অনুযায়ী চট্টগ্রামে নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৪ হাজার ২৮৩ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৫২ হাজার এবং ১৫ উপজেলায় ২ লাখ ৫২ হাজার ২৮৩ জন। খসড়া তালিকায় মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫১৮ জন, এর মধ্যে পুরুষ ৩৪ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৮ জন ও মহিলা ৩২ লাখ ১৯ হাজার ৯১৭ জন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

এবারের নির্বাচনে আইনের শাসন কাকে বলে, তা দেখাতে চাই : সিইসি

প্রকাশের সময় : ০৩:১৫:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনের শাসন কাকে বলে, তা দেখানো হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।

শনিবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রামে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত কর্মশালায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন আইনের শাসন ও নিরপেক্ষতার প্রকৃত উদাহরণ উপস্থাপন করতে চায়। আমরা চাই, জনগণ এমন একটি নির্বাচন দেখুক যেখানে শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা থাকবে— আর সবাই বিশ্বাস করবে, আইন সবার জন্য সমান।

নাসির উদ্দিন বলেন, এবারের নির্বাচনে আইনের শাসন কাকে বলে দেখাতে চাই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, এতে যা হয় হবে।

সিইসি বলেন, আজকের এই কর্মশালা থেকে আমাদের বিভিন্ন ক্যাপসগুলো উঠে আসবে। আমরা তো সব জানি না, তাই আমরা অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছি, যারা এর আগে নির্বাচনে কাজ করেছেন, তাদের অভিজ্ঞতা থেকে শিখছি। যেখানে যেখানে ঘাটতি আছে, আমরা সেই ঘাটতি পূরণ করে নেবো। আমাদের এখানে খুব দ্রুত কাজ করতে হচ্ছে, অনেক চ্যালেঞ্জও আছে। সমস্যা হচ্ছে, আপনি যে কাজটা করতে যাবেন, সেখানে ‘অকাজ’ বেশি, এটা আমাদের এক ধরনের কালচারে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, সবাই মিলে একটি সুন্দর নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। আমরা চাই একটি এমপাওয়ার্ড প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার তৈরি করতে। আমরা একটি সম্পূর্ণ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রিসাইডিং অফিসার গড়ে তুলতে চাই। আপনাদের হাতে আমরা সব ক্ষমতা দিচ্ছি। আপনি যদি সেই ক্ষমতা ব্যবহার না করেন, তাহলে সেটাকে আমরা অপরাধ হিসেবে গণ্য করবো। আপনি যদি যথাসময়ে যথাযথ ব্যবস্থা না নেন, সেটাও আমরা ভালোভাবে নেবো না। ক্ষমতা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তার সঠিক ব্যবহারও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই, যেই পর্যায়ের ক্ষমতা আপনাদের দেওয়া হয়েছে, সেটি দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবেন।

নির্বাচনি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনারা আইনের মধ্যে থেকে দায়িত্ব পালন করবেন, নির্বাচন কমিশন আপনাদের পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাবে, এই নিশ্চয়তা আমি দিচ্ছি।
নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো একটি স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা। এজন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যাতে বিভিন্ন পেশার মানুষ যাদের মধ্যে কেউ কেউ আগে কখনো ভোটগ্রহণের অভিজ্ঞতা পাননি তারাও দায়িত্ব পালনে দক্ষ হয়ে ওঠেন। ‘ওয়ান সাইজ ফিটস অল’ পদ্ধতিতে নয় বরং অংশগ্রহণকারীদের পটভূমি বিবেচনায় প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করতে হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিরাপত্তা। প্রশাসনিক, আইনগত ও প্রযুক্তিগত নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনাই সবচেয়ে কঠিন বিষয়। এজন্য তিনি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি ‘সেন্ট্রাল কো-অর্ডিনেশন সেল’ এবং ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স ইউনিট’ গঠন করছে, যাতে দেশের যেকোনো স্থান থেকে দ্রুত যোগাযোগ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

সিইসি বলেন, একটি সফল নির্বাচন আয়োজনের মূল চাবিকাঠি হলো সমন্বয়। প্রিসাইডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ই নির্বাচনের সাফল্য নিশ্চিত করবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন এরইমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া তথ্য ও এআই-ভিত্তিক অপপ্রচার মোকাবিলায় একটি সেল গঠন করেছে। তবে এটাও বলেন, সেলের কার্যক্রম সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে যথাযথ প্রচার এখনো হয়নি।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, অতিরিক্ত সচিব (ইসি সচিবালয়) কে এম আলী নেওয়াজ, বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন, ডিআইজি (চট্টগ্রাম রেঞ্জ) মো. আহসান হাবীব পলাশ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বসির আহমেদ।

ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমভাগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই লক্ষ্যে চট্টগ্রামে চলছে প্রস্তুতি জোরেশোরে। ইতোমধ্যে ১৬ সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রকাশিত খসড়া অনুযায়ী এবার চট্টগ্রামে ভোটকেন্দ্র কমেছে ৬৪টি এবং ভোটকক্ষ (বুথ) কমেছে ১ হাজার ৭৬টি। চট্টগ্রামের ১৬ আসনে মোট ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৯৫৯টি এবং ভোটকক্ষ ১২ হাজার ৬৫৬টি। এর মধ্যে পুরুষ বুথ ৫ হাজার ৭৬৪টি এবং মহিলা বুথ ৬ হাজার ৮৯২টি।

চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৬ আসনে ভোটগ্রহণের জন্য ১৪ হাজার ৬১৫টি স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের প্রয়োজন, অথচ বর্তমানে মজুত রয়েছে ১৫ হাজার ৯৪৪টি ব্যালট বাক্স—অর্থাৎ চাহিদার চেয়েও বেশি।

অন্যদিকে, ভোটগ্রহণের জন্য গঠন করা হচ্ছে প্রায় ৪৪ হাজার কর্মকর্তার একটি প্যানেল। এর মধ্যে থাকবেন ১ হাজার ৯৫৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১২ হাজার ৬৫৬ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ২৫ হাজার ৩১২ জন পোলিং অফিসার। অতিরিক্ত ১০ শতাংশ কর্মকর্তার নামও সংরক্ষণে রাখা হবে, যাতে প্রয়োজন হলে বিকল্প কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া যায়।

চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. বশির আহমেদ বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল তৈরির কাজ আমরা শুরু করেছি। সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে নামের তালিকা ইতোমধ্যে জমা পড়েছে।’

উল্লেখ্য, হালনাগাদ ভোটার তালিকা অনুযায়ী চট্টগ্রামে নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৪ হাজার ২৮৩ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৫২ হাজার এবং ১৫ উপজেলায় ২ লাখ ৫২ হাজার ২৮৩ জন। খসড়া তালিকায় মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫১৮ জন, এর মধ্যে পুরুষ ৩৪ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৮ জন ও মহিলা ৩২ লাখ ১৯ হাজার ৯১৭ জন।