Dhaka মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এনবিআরের শীর্ষ ১৭ কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব চেয়েছে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শীর্ষ ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।

দুদক মহাপরিচালক বলেন, তথ্যানুসন্ধান শেষে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় অভিযোগসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের নিজ নামে বা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তির বৈধ উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পত্তির দখলে রেখেছেন বা মালিকানা অর্জন করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এ জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(১) ধারা ও দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭-এর ১৭ নং বিধির আলোকে নির্ধারিত ছক অনুযায়ী ওই কর্মকর্তাদের সম্পদ ও দায়-দেনার হিসাব বিবরণী দাখিলের আদেশ জারির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

যাদের সম্পদের হিসাব চাওয়া হয়েছে তারা হলেন কর অঞ্চল-৩-এর কর কমিশনার এম এম ফজলুল হক, কর আপিল ট্রাইব্যুনালের কমিশনার লোকমান আহমেদ, আয়কর গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত কর কমিশনার সাহেলা সিদ্দিক, অতিরিক্ত কর কমিশনার মো. মামুন মিয়া, ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান তারিক রিকাবদার, যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা সাহরিন সুস্মিতা, কর একাডেমির যুগ্ম-কর কমিশনার মো. মোরশেদ উদ্দিন খান, কর অঞ্চল ৮-এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, কর অঞ্চল ১৬-এর উপ-কর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম, ভ্যাটের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশিদ মিয়া, রেলওয়ে কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট পূর্বাঞ্চলের কমিশনার কাজী মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন, কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু, এনবিআরের যুগ্ম কমিশনার মো. তারিক হাছান, এনবিআরের সিআইসির সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আলমগীর হোসেন, এনবিআরের সদস্য মো. লুৎফুল আজিম ও সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম।

এর আগে গত ২৯ জুন, ১ ও ৩ জুলাই এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। অভিযোগে বলা হয়, এনবিআরের কিছু অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। এরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও এনবিআরের কর্মকর্তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে তাদের করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন।

এতে প্রতিবছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ছাড়া কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তা ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকির মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে হয়রানি করছে।

অভিযোগে আরো বলা হয়, অনেক করদাতা আগাম কর দেন। আবার কেউ কেউ বেশি কর দেন। নিয়ম অনুযায়ী কর হিসাব-নিকাশ করার পর বেশি দেওয়া হলে তা ওই করদাতাকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু করের বাড়তি টাকা ফেরত পেতে আরো অন্তত অর্ধেক টাকা ঘুষ বা উপহারে খরচ করতে হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নারায়ণগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ১০

এনবিআরের শীর্ষ ১৭ কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব চেয়েছে দুদক

প্রকাশের সময় : ০৭:৫২:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শীর্ষ ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।

দুদক মহাপরিচালক বলেন, তথ্যানুসন্ধান শেষে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় অভিযোগসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের নিজ নামে বা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তির বৈধ উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পত্তির দখলে রেখেছেন বা মালিকানা অর্জন করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এ জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(১) ধারা ও দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭-এর ১৭ নং বিধির আলোকে নির্ধারিত ছক অনুযায়ী ওই কর্মকর্তাদের সম্পদ ও দায়-দেনার হিসাব বিবরণী দাখিলের আদেশ জারির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

যাদের সম্পদের হিসাব চাওয়া হয়েছে তারা হলেন কর অঞ্চল-৩-এর কর কমিশনার এম এম ফজলুল হক, কর আপিল ট্রাইব্যুনালের কমিশনার লোকমান আহমেদ, আয়কর গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত কর কমিশনার সাহেলা সিদ্দিক, অতিরিক্ত কর কমিশনার মো. মামুন মিয়া, ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান তারিক রিকাবদার, যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা সাহরিন সুস্মিতা, কর একাডেমির যুগ্ম-কর কমিশনার মো. মোরশেদ উদ্দিন খান, কর অঞ্চল ৮-এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, কর অঞ্চল ১৬-এর উপ-কর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম, ভ্যাটের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশিদ মিয়া, রেলওয়ে কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট পূর্বাঞ্চলের কমিশনার কাজী মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন, কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু, এনবিআরের যুগ্ম কমিশনার মো. তারিক হাছান, এনবিআরের সিআইসির সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আলমগীর হোসেন, এনবিআরের সদস্য মো. লুৎফুল আজিম ও সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম।

এর আগে গত ২৯ জুন, ১ ও ৩ জুলাই এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। অভিযোগে বলা হয়, এনবিআরের কিছু অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। এরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও এনবিআরের কর্মকর্তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে তাদের করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন।

এতে প্রতিবছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ছাড়া কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তা ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকির মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে হয়রানি করছে।

অভিযোগে আরো বলা হয়, অনেক করদাতা আগাম কর দেন। আবার কেউ কেউ বেশি কর দেন। নিয়ম অনুযায়ী কর হিসাব-নিকাশ করার পর বেশি দেওয়া হলে তা ওই করদাতাকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু করের বাড়তি টাকা ফেরত পেতে আরো অন্তত অর্ধেক টাকা ঘুষ বা উপহারে খরচ করতে হয়।