নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যেকোনো সময় নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে। তাই এখন সংলাপের সুযোগ নেই। বিএনপিকে আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছিলাম, শর্ত ছাড়া সংলাপে আসলে তখন আমরা বিবেচনা করব। কিন্তু এখন আর সেই সুযোগ নেই।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) সচিবালয়ে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে ওবায়দুল কাদেরের কাছে একটি চিঠি দেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। পরে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘টাইম ইজ ঠু শর্ট। এখন অ্যানি টাইম, অ্যানি ডে নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের তারিখ শিডিউল ঘোষণা করবেন। শিডিউল ঘোষণার সময়টা দূরেও নয়। এমনটাই আমরা শুনতে পাচ্ছি। এমতাবস্থায় আমাদের মতো দেশে ডায়ালগ যদি করতে হয়, কাউকে বাদ দিয়ে তো আর করা যাবে না। ডায়ালগ তো এমন না যে দুটি দলের সঙ্গে শুধু করতে হবে বা কয়েকটি দলের সঙ্গে। ডায়ালগ করলে সেটা শতাধিক দলের সুযোগ হয়। তো এখন এই টাইমে কখন ডায়ালগ হবে, কখন ইলেকশনের প্রক্রিয় চলবে সেটা একটা বিষয়। আরেকটা বিষয় হচ্ছে ডায়ালগের ব্যাপারে আমাদের চিন্তা ভাবনা আমাদের যে সিদ্ধান্ত সেটা অত্যন্ত পরিষ্কার। আমরা আগেও বলেছিলাম, শর্তযুক্ত কোনো ডায়ালগের বিষয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি না। তারা তাদের যে এক দফা রেজিগনেশন অব প্রাইম মিনিস্টার, রেজিগনেশন অব দি ইলেকশান কমিশন ও পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার বিষয়গুলো প্রত্যাহার করুক। তারপর আমরা চিন্তাভাবনা করে দেখব।
সেতুমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে শর্তহীন সংলাপে বসার যে আহ্বান যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে দলীয় আওয়ামী লীগের প্রধান এবং অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। তবে আওয়ামী লীগ কোনো শর্তযুক্ত আলোচনা করতে রাজি নয়।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশের কোনো রাজনৈতিক দল যারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে, তারা সংলাপকে এবাউট করতে পারে না। যেকোনো সময় নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে। ফলে এই সময়ের মধ্যে এখন আর বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোনো সুযোগ নেই। সেই সময় নেই। আমরা যখন তাদেরকে বলেছিলাম শর্ত ছাড়া সংলাপের জন্য। তারা তখন সেটিতে রাজি হয়নি।
তাহলে কী সংলাপ হচ্ছে না এ প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, সে কথা আমি কীভাবে বলব? কোনো পলিটিকাল পার্টি কোনোদিনও এভাবে, কোনো ডেমোক্রেটিক পলিটিকাল পার্টি যারা ডেমোক্রেসির প্র্যাকটিস করে, তারা সংলাপ চায় না এমন কথা বলতে পারে না। কিন্তু একটা সময় আছে। আজ ইলেকশনের ডেট ডিক্লেয়ার হচ্ছে, আপনি সংলাপ করবেন কবে, আমি সে কথা বলছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় পার্টির যদি এজ হুল বা তারা কেউ কেউ আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকতে না চায়, এটা তাদের নিজেদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। আমরা তো জোর করে কাউকে আমাদের সঙ্গে টেনে আনছি না। এটা তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার, ব্যক্তিগতভাবেও তাদের ব্যাপার।
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লু একটি চিঠি আমার কাছে পাঠিয়েছেন। সেই চিঠি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আমার কাছে পৌঁছে দিতে এসেছিলেন। চিঠি পেয়েছি। এখন দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা শেষে এ ব্যাপারে কথা বলতে পারব।
তিনি আরও বলেন, এক পৃষ্ঠার একটি চিঠি আমি পড়েছি। তাতে লেখা আছে, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার বিষয়টি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কারও পক্ষে নয়।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে তার বিষয়বস্তু নিয়ে আমার পার্টির প্রেসিডেন্ট এবং সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন। পার্টির প্রেসিডেন্ট ও নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেই চিঠির বিষয়বস্তুর জবাব দেব।
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন এবারো কী তাহলে বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন হতে যাচ্ছে। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অ্যাস বিএনপি।