Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এখন থেকেই আগামী হজের প্রস্তুতির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চলতি বছরের হজ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করায় ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে আগামী বছরের হজ ব্যবস্থাপনা যেন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা যায়, সে লক্ষ্যে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করতে মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ বছর ছোটখাটো যেসব ত্রুটি ধরা পড়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে আগাম ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এমন না ঘটে।

তিনি আগামী বছরের হজ রোডম্যাপ আগেভাগেই প্রকাশ করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন জানান, আগামী বছরের হজ ব্যবস্থাপনার জন্য ইতোমধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১০ জুলাই বাংলাদেশিদের জন্য হজ কোটা ঘোষণা করা হবে বলেও তিনি সভায় উল্লেখ করেন।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ বছর হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কোনও অভিযোগ আসেনি। সবাই প্রশংসা করেছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পরিশ্রম করেছে এজন্য সবাইকে অভিনন্দন, শুভেচ্ছা।

তিনি বলেন, হজযাত্রী ও হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সবার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সবাই যেন নির্বিঘ্নে হজ পালন করতে পারেন সেজন্য প্রশিক্ষণ খুবই জরুরি।

চলতি বছরের হজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক জানান, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এবং সৌদি সরকারের নির্দেশনার আলোকে হজ ২০২৬ এর জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সফল ও সুশৃঙ্খল হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপগ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি জানান, সৌদি টাইমলাইন ও রোডম্যাপ অনুযায়ী হজ কার্যক্রমের ক্যালেন্ডার ও চেকলিস্ট তৈরি করা হয়েছে এবং হজযাত্রী কোটার পূরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, হজ ২০২৬ এর কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয় নির্ধারিত সময়সূচি প্রকাশ করেছে। ১০ জুলাই ২০২৫ তারিখে হজ ২০২৬ এর বাংলাদেশের কোটা ঘোষণা করা হবে এবং ২১ অক্টোবর ২০২৫ এর মধ্যে হজযাত্রীদের চূড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন হবে। ০১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন এবং ০৪ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখে ভেন্ডর ও কোয়াটেশন অনুমোদনের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। এরপর ২০ মার্চ ২০২৬ থেকে হজযাত্রীদের ভিসা প্রদান শুরু হবে এবং ১৮ এপ্রিল ২০২৬ থেকে ফ্লাইট কার্যক্রম শুরু হবে। সবশেষে, ২৯ মে ২০২৬ তারিখে পবিত্র হজের টেস্ট (সেবা যাচাইকরণ) সম্পন্ন হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলতি বছর ৮৭,১০০ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পেয়েছেন।

লাব্বাইক মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে হজযাত্রীরা সহজেই প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়েছেন এবং অ্যাপটিতে ৩০,২৩৪ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন।

হজ পালনকালে এ বছর ৩৮ জন ব্যক্তির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও এই মুহূর্তে সৌদি আরবের বিভিন্ন হাসতাপালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৪ জন। গত ২৫ জুন পর্যন্ত দেশে ফেরত এসেছেন ৫১, ৬১৫ জন হাজী।

ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক জানান, এখন পর্যন্ত ৮০৬টি লাগেজ হারানোর তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৭৯০টি লাগেজ পাওয়া গেছে। বাকি ১৬টি লাগেজ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

পর পর তিন বছর হাজী নিতে না পারায় ৪১৫টি হজ এজেন্সির লাইসেন্স বাতিলের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

আগামী বছর যারা হজে যেতে ইচ্ছুক তারা যেন এখন থেকে লাব্বাইক অ্যাপ ব্যব্যবহার করে তাদের নানা প্রশ্নের জবাব পান সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

একইসঙ্গে পবিত্র ওমরাহ পালনে ইচ্ছুকরাও যেন এই অ্যাপ থেকে প্রয়োজনীয় সেবা পান সেদিকে নজর দিতেও বলেন তিনি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

এখন থেকেই আগামী হজের প্রস্তুতির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশের সময় : ০৩:০৭:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

চলতি বছরের হজ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করায় ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে আগামী বছরের হজ ব্যবস্থাপনা যেন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা যায়, সে লক্ষ্যে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করতে মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ বছর ছোটখাটো যেসব ত্রুটি ধরা পড়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে আগাম ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এমন না ঘটে।

তিনি আগামী বছরের হজ রোডম্যাপ আগেভাগেই প্রকাশ করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন জানান, আগামী বছরের হজ ব্যবস্থাপনার জন্য ইতোমধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১০ জুলাই বাংলাদেশিদের জন্য হজ কোটা ঘোষণা করা হবে বলেও তিনি সভায় উল্লেখ করেন।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ বছর হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কোনও অভিযোগ আসেনি। সবাই প্রশংসা করেছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পরিশ্রম করেছে এজন্য সবাইকে অভিনন্দন, শুভেচ্ছা।

তিনি বলেন, হজযাত্রী ও হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সবার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সবাই যেন নির্বিঘ্নে হজ পালন করতে পারেন সেজন্য প্রশিক্ষণ খুবই জরুরি।

চলতি বছরের হজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক জানান, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এবং সৌদি সরকারের নির্দেশনার আলোকে হজ ২০২৬ এর জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সফল ও সুশৃঙ্খল হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপগ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি জানান, সৌদি টাইমলাইন ও রোডম্যাপ অনুযায়ী হজ কার্যক্রমের ক্যালেন্ডার ও চেকলিস্ট তৈরি করা হয়েছে এবং হজযাত্রী কোটার পূরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, হজ ২০২৬ এর কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয় নির্ধারিত সময়সূচি প্রকাশ করেছে। ১০ জুলাই ২০২৫ তারিখে হজ ২০২৬ এর বাংলাদেশের কোটা ঘোষণা করা হবে এবং ২১ অক্টোবর ২০২৫ এর মধ্যে হজযাত্রীদের চূড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন হবে। ০১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন এবং ০৪ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখে ভেন্ডর ও কোয়াটেশন অনুমোদনের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। এরপর ২০ মার্চ ২০২৬ থেকে হজযাত্রীদের ভিসা প্রদান শুরু হবে এবং ১৮ এপ্রিল ২০২৬ থেকে ফ্লাইট কার্যক্রম শুরু হবে। সবশেষে, ২৯ মে ২০২৬ তারিখে পবিত্র হজের টেস্ট (সেবা যাচাইকরণ) সম্পন্ন হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলতি বছর ৮৭,১০০ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পেয়েছেন।

লাব্বাইক মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে হজযাত্রীরা সহজেই প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়েছেন এবং অ্যাপটিতে ৩০,২৩৪ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন।

হজ পালনকালে এ বছর ৩৮ জন ব্যক্তির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও এই মুহূর্তে সৌদি আরবের বিভিন্ন হাসতাপালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৪ জন। গত ২৫ জুন পর্যন্ত দেশে ফেরত এসেছেন ৫১, ৬১৫ জন হাজী।

ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক জানান, এখন পর্যন্ত ৮০৬টি লাগেজ হারানোর তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৭৯০টি লাগেজ পাওয়া গেছে। বাকি ১৬টি লাগেজ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

পর পর তিন বছর হাজী নিতে না পারায় ৪১৫টি হজ এজেন্সির লাইসেন্স বাতিলের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

আগামী বছর যারা হজে যেতে ইচ্ছুক তারা যেন এখন থেকে লাব্বাইক অ্যাপ ব্যব্যবহার করে তাদের নানা প্রশ্নের জবাব পান সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

একইসঙ্গে পবিত্র ওমরাহ পালনে ইচ্ছুকরাও যেন এই অ্যাপ থেকে প্রয়োজনীয় সেবা পান সেদিকে নজর দিতেও বলেন তিনি।