নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে করে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, এখনো সময় আছে। সম্মান নিয়ে আপনি বাঁচতে চাইলে ক্ষমতা ছাড়ুন।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে লেবার পার্টি ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় এসেছিল দেশের সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে। ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের দোয়ায় তারা সেদিন ক্ষমতায় এসেছিল।
নিত্যপণ্যের বাজারে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রনণ নেই মন্তব্য করে ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, জনগণের ক্রয়ক্ষমতা না বাড়লেও দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে জনদুর্ভোগ এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, যা জনগণের কাছে বিষফোঁড়ার মতো।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা জানেন, দেশের মানুষ বোকা, তাদের বিভ্রান্ত করা যায়। তাই তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতায় গেলে ১০ টাকায় চাল খাওয়াবেন। তিনি যখন ক্ষমতায় যাওয়ার পথে ছিলেন, তখনও দেশে চালের কেজি ছিল ৪০ টাকা। তিনি জানতেন ক্ষমতায় গেলে ১০ টাকায় চাল খাওয়াতে পারবেন না। তারপরও তিনি মিথ্যাচার করেছেন এদেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে।
ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে নিম্নবিত্ত সাধারণ জনগণ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দেশের মূল্য পরিস্থিতি এখন সাধারণ মানুষের ক্রয়-ক্ষমতার বাইরে। তাই আজ জনজীবনে ভয়াবহ অস্বস্তি বিরাজ করছে। বর্তমানে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। জনগণকে সুফল দিতে হলে দ্রুত রেশনিং, টিসিবি, ন্যায্যমূল্যের দোকান, সুষ্ঠু বণ্টন ব্যবস্থা চালু, পাইকারি ও খুচরা বাজারে রাষ্ট্রের প্রভাব-সক্ষমতা সৃষ্টি করে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় সরকারকে গণরোষের মুখোমুখি হতে হবে।’
ইরান বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১১ বার সারের দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা শেরপুরের জনসভায় বলেছিলেন, ক্ষমতায় গেলে বিনামূল্যে সার দেবেন, ঘরে ঘরে চাকরি দেবেন। এই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ আর টাকা ছাড়া কোনো মানুষ চাকরি পায়নি।
তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ চাল কিনলে নুন কিনতে পারে না। আলুর কেজি এক বছর আগেও ছিল ২০ টাকা। সেই আলু শেখ হাসিনার ডিজিটাল উন্নয়নে এখন ৫০ টাকা হয়েছে। আপনারা অনেকে বলেছেন সিন্ডিকেটের কথা। আমি বুঝি, একমাত্র সিন্ডিকেট হচ্ছে হাসিনার সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে পারলে সব কিছুর দাম কমে যাবে।
ইরান বলেন, আমেরিকা কয়দিন পর পর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এমন দুইজন, পাঁচজন করে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কী হবে? এ দিয়ে কিছু হবে না। শুধুমাত্র একজনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলে দেশের প্রধান সমস্যা, একমাত্র সমস্যা, হাজারো সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির ঢাকা মহানগরের সভাপতি এস এম ইউসূফ আলীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, রামকৃষ্ণ সাহা, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব নুরুল ইসলাম সিয়াম, আবদুর রহমান খোকন, মুফতি তরিকুল ইসলাম সাদী প্রমুখ।