Dhaka রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এক-এগারোর কুশীলবরা সুযোগ পেলেই ছোবল মারবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এক-এগারোর কুশীলবরা এখনও ঘাপটি মেরে আছে, সুযোগ পেলেই ছোবল মারবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

বুধবার (২০ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জিল্লুর রহমান পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যারা ১/১১-র কুশীলব ছিলেন, তারা এখনো জাতিকে মাঝে-মধ্যে জ্ঞান দেয়। টেলিভিশনের পর্দায়, পত্রিকার পাতায় তারা এই জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছেন। গত নির্বাচনের আগেও তারা সক্রিয় হয়েছিল, যদি কিছু করা যায় সেই আশায়। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও রাজনৈতিক কৌশলের কাছে বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি যেমন পরাজিত হয়েছে, তেমনি এই কুশীলবদের স্বপ্নও ধূলিসাৎ হয়েছে। তারা এখন ঘাপটি মেরে বসে আছে। যদি কোনো সুযোগ পাওয়া যায় ছোবল মারার জন্য। সুতরাং আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ১/১১-র পরিবর্তনের পর দেশের গণতন্ত্রকে বাক্সবন্দি করা হয়েছিল। গণতন্ত্রের পায়ে শেকল পরানো হয়েছিল। তখন জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্ত করার আন্দোলনে সামিল হয়েছিলাম। জনগণও আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল। নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা মুক্ত হয়েছিলেন তা নয়, আমাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াও মুক্ত হয়েছিলেন। খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর তার পারসোনাল উইং থেকে ফোন করা হয়েছিল। আমাকে বলেছিলেন, চলেন, একসাথে কিছু করি। অর্থাৎ তারাও অসহায় হয়ে গিয়েছিল। এই অসহায়ত্ব থেকেই তারা ফোন করেছিল, যাতে যুগপৎ আন্দোলনে করে ওই পরিস্থিতি থেকে উত্তোলন ঘটানো যায়।

মন্ত্রী বলেন, তার কাছে অনেক লোভনীয় প্রস্তাব ছিল। সেগুলো তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমাদের দেশের ওপর শকুনের দৃষ্টি সব সময় পড়ে। ওয়ান ইলেভেনের যারা কুশীলব ছিলেন তারা শকুনকে আহ্বান জানায়। সুতরাং শকুন থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

জিল্লুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে মন্ত্রী বলেন, আমার মনে আছে নেত্রী যেদিন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আমি তার কয়েকদিন আগ থেকে আত্মগোপনে ছিলাম। গ্রেপ্তার হওয়ার খবরে আমি সুধা সদনে ছুটে যাই। সেখানে নেত্রী দুইজন পার্সোনাল ফটোগ্রাফার ছিল। একজন জীবন, আরেকজনের নাম হাবিব। তাদের আমি বাড়ির সব ছবি তুলে রাখতে বলেছিলাম কারণ এগুলো মামলার আলামত হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কারণ পুরো বাড়ি তছনছ করা হয়েছিল। সেখান থেকে যখন জিল্লুর চাচার বাসায় ছুটে যাই তখন দলের পক্ষ থেকে একটা প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়েছিল। জিল্লুর চাচা তখন প্রেস কনফারেন্স বক্তব্য রেখেছিলেন। বক্তব্য শেষে উনি বেডরুমে চলে গিয়েছিলেন। আমি এসেছি শুনে আমাকে বেডরুমে ডেকে নিলেন। তার সঙ্গে আমার প্রথম কথা ছিল, চাচা আমাদের প্রথম কাজ হবে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা। এখন চেষ্টা হবে দলকে ভাঙার। যদি দল ভেঙে ফেলতে পারে, তাহলে নেত্রীকে মুক্ত করা আমাদের পক্ষে কঠিন হবে। তিনি আমার কথায় সায় দিয়ে বললেন, “হ্যাঁ এটি আমাদের ফার্স্ট চ্যালেঞ্জ।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কীভাবে সংকটে, সংগ্রামে, প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে ধৈর্যশীল থাকতে হয়, নেতৃত্বের প্রতি কীভাবে আস্থাশীল থাকতে হয় সেটির উদাহরণ জিল্লুর রহমান। আমাদের নেত্রী গ্রেপ্তার হওয়ার পর জিল্লুর রহমান দলের হাল ধরেছিলেন। ওয়ান ইলেভেন এর সময় তিনি ধৈর্য ধারণ করে সমস্ত কিছু সামাল দিয়েছেন, সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যে, চাপের মধ্যে অবিচল থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেই কারণেই শেখ হাসিনাকে আমাদের পক্ষে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছিল।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, আমরা যারা পেশাজীবী রাজনীতি করেছি যখনই উনার কাছে গিয়েছি উনি সাড়া দিতেন। জিল্লুর রহমান একটা দীর্ঘ সময় ধরে জাতির জনক এবং জাতির জনকের কন্যার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। উনি আত্মবিশ্বাস নিয়ে দুর্বার গতিতে কাজ করে যেতেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও জিল্লুর রহমান পরিষদের সভাপতি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামান খোকার সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সহ-সভাপতি শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কারের ভবিষ্যৎ পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেব না : নাহিদ ইসলাম

এক-এগারোর কুশীলবরা সুযোগ পেলেই ছোবল মারবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৯:১৮:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এক-এগারোর কুশীলবরা এখনও ঘাপটি মেরে আছে, সুযোগ পেলেই ছোবল মারবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

বুধবার (২০ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জিল্লুর রহমান পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যারা ১/১১-র কুশীলব ছিলেন, তারা এখনো জাতিকে মাঝে-মধ্যে জ্ঞান দেয়। টেলিভিশনের পর্দায়, পত্রিকার পাতায় তারা এই জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছেন। গত নির্বাচনের আগেও তারা সক্রিয় হয়েছিল, যদি কিছু করা যায় সেই আশায়। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও রাজনৈতিক কৌশলের কাছে বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি যেমন পরাজিত হয়েছে, তেমনি এই কুশীলবদের স্বপ্নও ধূলিসাৎ হয়েছে। তারা এখন ঘাপটি মেরে বসে আছে। যদি কোনো সুযোগ পাওয়া যায় ছোবল মারার জন্য। সুতরাং আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ১/১১-র পরিবর্তনের পর দেশের গণতন্ত্রকে বাক্সবন্দি করা হয়েছিল। গণতন্ত্রের পায়ে শেকল পরানো হয়েছিল। তখন জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্ত করার আন্দোলনে সামিল হয়েছিলাম। জনগণও আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল। নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা মুক্ত হয়েছিলেন তা নয়, আমাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াও মুক্ত হয়েছিলেন। খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর তার পারসোনাল উইং থেকে ফোন করা হয়েছিল। আমাকে বলেছিলেন, চলেন, একসাথে কিছু করি। অর্থাৎ তারাও অসহায় হয়ে গিয়েছিল। এই অসহায়ত্ব থেকেই তারা ফোন করেছিল, যাতে যুগপৎ আন্দোলনে করে ওই পরিস্থিতি থেকে উত্তোলন ঘটানো যায়।

মন্ত্রী বলেন, তার কাছে অনেক লোভনীয় প্রস্তাব ছিল। সেগুলো তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমাদের দেশের ওপর শকুনের দৃষ্টি সব সময় পড়ে। ওয়ান ইলেভেনের যারা কুশীলব ছিলেন তারা শকুনকে আহ্বান জানায়। সুতরাং শকুন থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

জিল্লুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে মন্ত্রী বলেন, আমার মনে আছে নেত্রী যেদিন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আমি তার কয়েকদিন আগ থেকে আত্মগোপনে ছিলাম। গ্রেপ্তার হওয়ার খবরে আমি সুধা সদনে ছুটে যাই। সেখানে নেত্রী দুইজন পার্সোনাল ফটোগ্রাফার ছিল। একজন জীবন, আরেকজনের নাম হাবিব। তাদের আমি বাড়ির সব ছবি তুলে রাখতে বলেছিলাম কারণ এগুলো মামলার আলামত হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কারণ পুরো বাড়ি তছনছ করা হয়েছিল। সেখান থেকে যখন জিল্লুর চাচার বাসায় ছুটে যাই তখন দলের পক্ষ থেকে একটা প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়েছিল। জিল্লুর চাচা তখন প্রেস কনফারেন্স বক্তব্য রেখেছিলেন। বক্তব্য শেষে উনি বেডরুমে চলে গিয়েছিলেন। আমি এসেছি শুনে আমাকে বেডরুমে ডেকে নিলেন। তার সঙ্গে আমার প্রথম কথা ছিল, চাচা আমাদের প্রথম কাজ হবে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা। এখন চেষ্টা হবে দলকে ভাঙার। যদি দল ভেঙে ফেলতে পারে, তাহলে নেত্রীকে মুক্ত করা আমাদের পক্ষে কঠিন হবে। তিনি আমার কথায় সায় দিয়ে বললেন, “হ্যাঁ এটি আমাদের ফার্স্ট চ্যালেঞ্জ।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কীভাবে সংকটে, সংগ্রামে, প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে ধৈর্যশীল থাকতে হয়, নেতৃত্বের প্রতি কীভাবে আস্থাশীল থাকতে হয় সেটির উদাহরণ জিল্লুর রহমান। আমাদের নেত্রী গ্রেপ্তার হওয়ার পর জিল্লুর রহমান দলের হাল ধরেছিলেন। ওয়ান ইলেভেন এর সময় তিনি ধৈর্য ধারণ করে সমস্ত কিছু সামাল দিয়েছেন, সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যে, চাপের মধ্যে অবিচল থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেই কারণেই শেখ হাসিনাকে আমাদের পক্ষে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছিল।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, আমরা যারা পেশাজীবী রাজনীতি করেছি যখনই উনার কাছে গিয়েছি উনি সাড়া দিতেন। জিল্লুর রহমান একটা দীর্ঘ সময় ধরে জাতির জনক এবং জাতির জনকের কন্যার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। উনি আত্মবিশ্বাস নিয়ে দুর্বার গতিতে কাজ করে যেতেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও জিল্লুর রহমান পরিষদের সভাপতি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামান খোকার সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সহ-সভাপতি শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ।