নিজস্ব প্রতিবেদক :
একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মহান শহীদ দিবসে জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাদ আলী।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা পর্যন্ত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। সাথে থাকবে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অংশগ্রহণ। এ সমাবেশে জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা নেই।
নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এখন পর্যন্ত শহীদ দিবস ঘিরে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আশঙ্কা নেই। এ সময় তিনি জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কার বিষয়ক নাকচ করে দেন। এ ছাড়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিনে রয়েছে তাদের নিয়েও কোনো থ্রেট দেখছে না ডিএমপি।’
সাজ্জাত আলী বলেন, এখানে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কোনো ইন্টারেস্ট থাকার কথা না এবং তাদের অপারেশন এলাকাও না। তারপরও যারা জামিনে আছে তাদেরকে মনিটরিং করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, শহীদ মিনারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপির পাশাপাশি র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।
এ সময় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিরাপত্তার বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, শহীদ মিনারে তিন থেকে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে র্যাবসহ অন্যরা সমন্বয় করে কাজ করবেন। পাশাপাশি শহীদ মিনারের চারপাশে এক কিলোমিটার ব্যাসার্ধের ভেতরে গোয়েন্দা পুলিশসহ ইউনিফর্ম পুলিশের মোবাইল টিম তৎপর থাকবে।
তিনি বলেন, শুরুতে ভিভিআইপিরা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাবেন। তারপর ভিআইপিরা শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর রাত ১২টা ৪০ মিনিট থেকে শহীদ মিনার সাধারণ নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। তারা পলাশী গেট হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও জগন্নাথ হলের রাস্তা ধরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, দেশের ল অ্যান্ড অর্ডার খুব ভালো। আপনারা দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বড় কোনো ঘটনার কথা বলতে পারবেন না। দুদিন আগে একটি ঘটনা ঘটেছে উত্তরায়। যেটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
উত্তরার ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, সেখানে কিশোর গ্যাঙের পাঁচ জন বা এ ধরনের কেউ টঙ্গি থেকে এসে কাজটি করেছে। ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে। তাদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। আমরা সফলভাবে এটি হ্যান্ডেল করছি।
শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, বিচ্ছিন্ন দুই-একটি, প্রধানত মোবাইল ছিনতাই ছাড়া নগরে বড় কোনো অপরাধ নেই। ল অ্যান্ড অর্ডারে কোনো সমস্যা নেই। সবকিছু স্বাভাবিক। আমার অফিসাররা চমৎকারভাবে তাদের মনোবল ফিরে পেয়েছেন।
এছাড়া ট্রাফিক নিয়ে কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার। তিনি বলেন, এক কিলোমিটারের ভেতরে যেন কোনও গাড়ি প্রবেশ না করতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে আমরা ৭টি স্থানে ব্যারিকেড বসিয়ে রাস্তা বন্ধ করবো। স্থানগুলো হলো— শাহবাগ ক্রসিং, নীলক্ষেত ক্রসিং, শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং, চানখারপুল ক্রসিং ও বখশীবাজার ক্রসিং। শহীদ মিনারে আসতে হলে পলাশী হয়ে স্বাধীনতা চত্বর ভাস্কর্য হয়ে জগন্নাথ হল অতিক্রম করে আসতে হবে এবং এক্সিট পয়েন্ট হিসেবে দোয়েল চত্বর হয়ে অন্য দিকে চলে যেতে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ব্যারিকেড পয়েন্টে আমাদের ট্রাফিক পুলিশসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা থাকবেন। মূলত গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় সন্ধ্যা ছয়টায় কিন্তু আমরা ঢাকা শহরের ট্রাফিকের কথা চিন্তা করে গাড়ি চলাচল বন্ধ করবো রাত ৯টায়। সেটি ৮টায়ও বন্ধ হতে পারে, নির্ভর করবে শাহবাগে কোনও আন্দোলন হয় কিনা তার ওপর।
এসময় তিনি ১২টা থেকে ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত জনসাধারণকে সেখানে ভিড় না করার অনুরোধ জানান।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রোগ্রামটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। আমরা তাদেরকে সাহায্য করছি। এখানে র্যাবেরও যথেষ্ট উপস্থিতি থাকবে। র্যাব এবং আমরা সমন্বয় করেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজিয়েছি।